বিরোধী দল হচ্ছে কারা?
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট এবার নির্বাচনে স্বতন্ত্র বিপ্লব ঘটেছে। স্বতন্ত্ররা ৬২ টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১ টি আসন। আর কল্যাণ পার্টি পেয়েছে একটি আসন। সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী অন্তত পক্ষে ন্যূনতম ৩০ টি আসন পেলে একটি দল বিরোধী দলের স্বীকৃতি পায়। সে ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি ১১ টি আসন নিয়ে এবার সংসদে প্রধান বিরোধী দল হতে পারবে কি না—এ নিয়ে আইনগত বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন যে, ৩০ টি আসন না পেলেও ১১ টি আসন পেলেও তারা একটি সংসদীয় গ্রæপ হতে পারে এবং বিরোধী দল হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারে। তবে অনেক আইন বিশেষজ্ঞও এই মতের সাথে একমত নন। তারা মনে করেন যে ১১ টি আসন পেয়ে জাতীয় পার্টি কেবল একটি সংসদীয় গ্রæপ হতে পারে। বিরোধী দলের মর্যাদা পাবে না। সে ক্ষেত্রে সংসদের বিরোধী দল কে হবে, কীভাবে হবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন। কোনো কোনো আইন প্রণেতা মনে করছেন সংসদে যে ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, তারা যদি একসাথে ঐক্যবদ্ধ হন এবং নিজেদেরকে একটি জোট হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন, তাহলে তারা স্পিকারের অনুমোদন সাপেক্ষে বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ৬২ জন সংসদ সদস্যেরও দরকার হবে না, ৩০ জন সংসদ সদস্য একমত হয়ে আলাদা ভাবে বৈঠক করে যদি সংসদে বিরোধী দল হিসেবে তাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের কথা জানান, তাহলে তারা বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে পারে। সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি নয়, স্বতন্ত্রদের যে মোর্চা সেই মোর্চাই বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। তবে স্বতন্ত্র যারা আছেন, তাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগে যোগ দিতে চান। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্র গুলো বলছেন যে, আওয়ামী লীগ স্বতন্ত্রদেরকে দলে ভেড়াতে রাজি নয়, বরং তারা বিরোধী দল হিসেবে সক্রিয় থাকুক এবং সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করুক এটি সরকার প্রত্যাশা করে। সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমন্বিত করে একটি বিরোধী মোর্চা গঠনের বিষয়টি এখন বিভিন্নভাবে আলোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলছেন, সবে নির্বাচন হল। এখনও এসব ভাবনা চিন্তার সময় নেই। তবে স্বতন্ত্ররা বিরোধী একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতেই পারে। জনগণ এবার স্বতন্ত্রদের পক্ষে একটা জোরালো রায় দিয়েছে। কাজেই জনগণের যে প্রত্যাশা সেই প্রত্যাশা পূরণে স্বতন্ত্ররা ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, যারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের কেউ কেউ এরকম স্বতন্ত্র মোর্চা করার একটি প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু করেছেন। বিশেষ করে ব্যারিস্টার সুমন এবং মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এই দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর জাতীয়ভাবে জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং জাতীয় ভাবে তাদের পরিচিতি রয়েছে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করবেন খুব শিগগিরি এমনটাই মনে করছেন কেউ কেউ। সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে সমমনা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংসদে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করতে পারেন এবং তারা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেরাই একজন বিরোধী দলের নেতা, উপনেতা নির্বাচিত করে স্পিকারের কাছে বিরোধী মোর্চা হিসাবে বা বিরোধী গ্রæপ হিসেবে স্বীকৃতি চাইতে পারেন। স্পিকার কার্যপ্রণালী বিধি এবং সংসদের কার্যক্রম অনুযায়ী সমস্ত কিছু বিচার বিবেচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র মনে করছে।