মন্ত্রীসভায় না’গঞ্জের কেউ নেই!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আজ বৃহস্পতিবার টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিচ্ছেন। বিগত ২০০৯ সাল থেকে মন্ত্রিসভা গঠনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চমক দেখিয়ে আসছেন। তাই আশা করা হচ্ছে, এবারও চমক থাকবে। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে হবে নতুন মন্ত্রিসভা। সংবিধান নিশ্চিত করেছে মন্ত্রিসভা গঠন পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। গতকাল বুধবার রাতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আজ ২৫জন পুর্ন মন্ত্রী ও ১১জন প্রাতমন্ত্রী শপথ নিবেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন গতকাল রাতেই গণমাধ্যমকে শপথ নিতে যাওয়া মন্ত্রীদের নাম নিশ্চিত করে তাদেরকে টেলিফোন করেছেন। তবে নতুন মন্ত্রী সভায় যে ৩৬জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নিতে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের কোন সংসদ সদস্যের নাম নেই। এমনকি বর্তমান পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর (বীর প্রতীক) এমপির নামও সেই তালিকায় পাওয়া যায়নি। আপাতদৃষ্টিতে আজকের নতুন মন্ত্রী সভায় এখনো নারায়ণগঞ্জের কেউ স্থান পায়নি বলেই নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্র জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এবারের মন্ত্রিসভা হবে আরও স্মার্ট। এমন নেতারাই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনামতো রাতদিন সারা দেশ চষে বেড়াতে পারবেন। দক্ষতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞদের নিয়েই মন্ত্রী সভা গঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মীদের কাছে যাঁদের গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন নেতারাই মন্ত্রিসভায় আসছেন। জানা গেছে, বর্তমান তিনজন প্রতিমন্ত্রী দলের মনোনয়ন পাননি। আর সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে তিন প্রতিমন্ত্রী হেরে গেছেন। এ ছয়জন ছাড়া আরও কয়েকজন বয়স ও বিতর্কিত কাজসহ নানা কারণে বাদ পড়ছেন। এ ছাড়া কয়েকজনের মন্ত্রণালয় রদবদলও করা হবে। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে মন্ত্রিসভায় আছেন এমন ব্যক্তিরাও এবার বাদ যাচ্ছেন। এ ছাড়া কপাল পুড়বে যাঁরা নিজেদের কীর্তির কারণে বিতর্কিত। এবারের মন্ত্রী সভায় যারা স্থান পেয়েছেন বলে জানা গেছে, পূর্ণমন্ত্রীর তালিকায় থাকা ২৫ জন হলেন- ওবায়দুল কাদের, আ ক ম মোজাম্মেল হক, আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, তাজুল ইসলাম, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আব্দুর র হমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আসাদুজ্জামান খান, হাছান মাহমুদ, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ফরহাদ হোসেন, সাধন চন্দ্র মজুমদার, নুরুল মজিদ হুমায়ূন, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আব্দুস শহীদ, ফরিদুল হক খান, জিল্লুল হাকিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, নাজমুল হাসান পাপন, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও আব্দুস সালাম। টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও ডা. সামন্ত লাল সেন। ১১ প্রতিমন্ত্রী হলেন- সিমিন হোসেন রিমি, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহমেদ পলক, মো. আলী আরাফাত, মহিবুর রহমান, জাহিদ ফারুক, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বেগম রুমানা আলী, শফিকুর রহমান চৌধুরী, আহসানুল ইসলাম টিটু ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শপথ নিচ্ছেন। এছাড়া বর্তমান মন্ত্রীদের মধ্যে যারা বাদ পড়ছেন বলে জানা গেছে তারা হলেন, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ২০১৪ সালে অধিকাংশ পুরনো মন্ত্রী বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুন ও আগের সরকারের সময় দলের বাদ পড়া জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে সরকার গঠন করা হয়। ২০১৯ সালের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ ছিলেন ৩১ জন। গত রবিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২২২টিতে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায়। গতকাল বুধবার এমপিরা সংসদ ভবনে শপথবাক্য পাঠ করেন। এরপর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংসদ নেতা, উপনেতা নির্বাচন করা হয়েছে। একাধিক সূত্র জানায় আপাতত আজ ৩৬জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী শপথ নিলেও আগামীতে মন্ত্রী পরিষদের পরিধি বাড়তে পারে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের উপর।