আদালতপাড়ায় আ’লীগ-বিএনপিপন্থী আইনজীবিদের মধ্যে উত্তেজনা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জে জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনকে ঘিরে আদালতপাড়ায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল হয়েছে। এসময় উভয় পক্ষের শ্লোগান পাল্টা শ্লোগানে সেখানা উত্তপ্ত পরিস্থিতির তৈরী হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতের আইনজীবী সমিতির ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে দুপুরে বার নির্বাচনকে ঘিরে এজিএম অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা আইনজবী সমিতির আসন্ন নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সোনারগাঁ থানা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি শামসুল ইসলাম ভুঁইয়ার নাম প্রস্তাব করা হয়। পরে সভা শেষ হলে বিএনপির আইনজীবীরা বার ভবনের সামনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের দাবীতে সমাবেশের আয়োজন করে। এসময় সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা ¯েøাগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে উপস্থিত হয়। এসময় বিএনপিপন্থী আইনজীবিদের সরিয়ে দিয়ে তারা সেখানে অবস্থান নেন এবং শ্লোগান দেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন চাই যেখানে দলীয় পদধারী কোন ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনার হবেন না। এখানে জাতীয় নির্বাচনের ন্যায় শুরু হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এখন দলীয় ব্যক্তি। আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল করতে গিয়েছিলাম কিন্তু এ প্রতিবাদ মিছিল আমাদের করতে বাধা দেয়া হয়েছে। আমাদের সরিয়ে দিয়ে তারা সেখানে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দিয়েছে। নিরপেক্ষ লোক দিয়ে কমিশন গঠন না করলে আমরা এই বার নির্বাচনে যাবো কিনা সে ব্যাপারে বসে সিদ্ধান্ত নেব। জানা গেছে, আগামী ৩০ জনুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট আশরাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম, অ্যাডভোকেট মেরিনা বেগম এবং অ্যাডভোকেট সুখ চাঁদ সরকার। আপীল বোর্ডে দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক তারাজুদ্দিন, অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা এবং অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির। যদিও গতবার একই নির্বাচন কমিশনের অধিনে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের প্যানেল। তবে, এবার তাদের অধিনে নির্বাচন না করার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে নেতৃবৃন্দরা। এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘ইলেকশনের আগেই যদি ইলেকশন হয়ে যায়, তাহলে তো আর সেই ইলেকশন করে লাভ নেই। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে বানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনার। এই নির্বাচন আর কেমন হবে। আমরা চেয়েছি যে, নিরপেক্ষ লোকদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করানো হোক। নারায়ণগঞ্জ বারে (আইনজীবী সমিতি) তো আওয়ামী লীগের মধ্যেই নিরপেক্ষ লোক আছে, তাদের দিয়ে নির্বাচন করুক। কিন্তু তারা সেটি করতেছে না। ওনারা আমাদের সাথে কোন কথা না বলে একতরফা ভাবে নির্বাচন ঘোষণা করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি, যাতে নিরপেক্ষ লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক। কিন্তু সেটা তারা করেনি। দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কুলশিত ও সকল নির্বাচনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এই সরকার।’ এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান বলেন, ‘তারা একটি একতরফা নির্বাচন কমিশন গঠন করছে। আমরা তাদের এই নির্বাচন করবো কিনা, সেটা পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’