জাপার সামনে অন্ধকার!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপার ভরাডুবিতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দলটি। অনেকের মতে সুবিধাবাদী দল জাতীয়পার্টি বরাবরের মতো এবারও চেয়েছিল আওয়ামী লীগের উপর ভর করে অধিক সংখ্যক আসন বাগিয়ে নিতে। বিএনপি সহ সমমানা দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতা দেখানোর জন্য বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে। নিজ দলের মনোনয়ন বঞ্চিত এবং অন্যান্য আগ্রহীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার অনুমতি দেয়। এই কৌশলের কারণে জাতীয় পার্টির তথাকথিত শক্তিমত্তার স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে পড়ে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। জাতীয় পার্টির অনুক‚লে ছেড়ে দেয়া আসনগুলোর সবকটিও তারা ধরে রাখতে পারেনি যেখানে নৌকার কোন প্রার্থী ছিল না। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়। ছাড় দেয়া আসনগুলো ছাড়াও সারাদেশেই জাতীয় পার্টি চরমভাবে হেরে গেছে। বিএনপি বিহীন নির্বাচনে যেখানে সুযোগ ছিল অধিক সংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়ে আসার সেখানে তাদের ঝুলিতে পড়েছে মাত্র ১১টি আসন। যা বিগত নির্বাচনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। জাতীয় পার্টির ভাষায় তাদের দুর্গ নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির ধ্বস নেমেছে। নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনটি জাতীয় পার্টির অনুক‚লে ছেড়ে দেয়া হলেও মূলত এটি আওয়ামী লীগেরই একটি আসন। কোনরকম সমঝোতার আগেই আসনটি আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেলিম ওসমানের অনুক‚লে ছেড়ে দেয়। সেই অর্থে এই আসনটিকে কোন অবস্থাতেই জাতীয় পার্টির আসন বলা যাবে না। সোনারগাঁয়ের আসনে বিগত দুটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসা লিয়াকত হোসেন খোকা কোন ছাড় পায়নি। এখানে নৌকা প্রতীক নিয়ে কায়সার হাসনাত বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়। এই ফলাফল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় শুধুমাত্র করুণার জোরেই বিগত দুটি নির্বাচনে খোকা সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল। দীর্ঘ ১০ বছর সাংসদ হিসেবে থাকার পরও খোকার যে কোন জনভিত্তি গড়ে ওঠেনি তার প্রমাণও সুস্পষ্ট হলো। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের আনুক‚ল্যই ছিল তার প্রধান শক্তি। প্রমাণ হয়ে গেল নির্বাচনী এলাকায় তার নিজের বা দলের কোন গ্রহণযোগ্যতাই ছিল না এখনও নেই। আওয়ামী লীগের ছায়াতলে পরগাছা হয়েই ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিল। দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত এবং প্রার্থীব গ্রহণযোগ্যতা থাকলে এমনটি হবার কথা ছিল না। বড় দলের আনুক‚ল্য সব সময় পাওয়া যাবে এমনটি ভাবা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে হলে নিজস্ব ভিত থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। জাতীয়পার্টিকে ভাবতে হবে কিভাবে জনভিত্তি তৈরি করা যায়। সেভাবে এখন থেকে তৈরি হলে হয়তোবা জাতীয় পার্টি অস্তিত্ব সংকট থেকে রেহাই পেতে পারে। তবে তেমন সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে। এরশাদের ইমেজের উপর ভিত্তি করে যাইবা কিছুটা জনপ্রিয়তা জাতীয় পার্টির ছিল তাও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এরশাদ পতœী রওশন এরশাদ এবং তার ছোট ভাই জিএম কাদেরের নেতৃত্বের কোন্দল জনিত কারনে। পরগাছা হিসেবে টিকে থাকা দলটি নেতৃত্বের কোন্দলে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে আরো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এলাকাভিত্তিক কিছু জনপ্রিয়তা ছিল যা এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কাঠামো এবং জনপ্রিয়তার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। তাই এখন জাতীয় পার্টির সামনে শুধুই অন্ধকার। অস্তিত্ব সংকটে ভোগা জাতীয় পার্টি এ অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা তা ভবিষ্যতই বলে দিবে।