জেঁকে বসেছে কন কনে শীত শহরে শীত বস্ত্র কেনার হিড়িক
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো নারায়ণগঞ্জেও হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল শুক্রবার সারা দিনে সূর্যের তাপমাত্রা তেমন ছিল না, তার উপর দুপুরের পর থেকেই ঠান্ডা বাতাস বইছে। এমন পরিস্থিতিতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ফলে মানুষের মধ্যে এবারের শীত নিবারনের জন্য শীতবস্ত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রমান পাওয়া গেলো শহরের ফুটপাতে শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে। সরজমিনে শহরের চাষাড়া হকার্স মার্কেট, সমবায় মার্কেট, সায়েম প্লাজা ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাতের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায় উপচে পড়া ভীড়। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়াতে মধ্যবিত্ত ও নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো তাদের সাধ্য অনুযায়ী নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রয়োজনীয় শীতের কাপড় কিনছেন। ভালোমানে এবং কম দামে পছন্দের শীতবস্ত্র কিনতে পেয়ে খুশি ক্রেতারাও। আবার বিক্রেতারাও খুশি শীত জেঁকে বসায়। কারণ শীত না পড়লে তাদের মজুদ করা শীতের কাপড় বিক্রি হবে না। এতে লোকসান গুনতে হবে। বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে কথা হয় শীতের কাপড় বিক্রেতা কাউসারের সাথে। সে জানায়, গত কয়েকদিন ধরেই শীত পড়ছে। বেচা-কেনাও চলছিল টুকটাক। কিন্তু হঠাৎ করে গত বৃহস্পতিবার থেকে শীত বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে শীতের কাপড় কেনার চাহিদা বেড়ে গেছে। তারউপর শুক্রবার ছুটি দিন হওয়াতে ক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে। বেচা বিক্রিও ভালো। মানুষ কম দামে ভালো জিনিস পেয়ে খুশি, আমরা বিক্রি করতে পেরে খুশি। হকার আবু হানিফ বলেন, বাচ্চাদের আইটেম সোয়েটার, মোজা, জুতা এগুলোই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বড়দের কানটুপি, হাত মোজা, মাফলার, জ্যাকেট, সুয়োটার, হুডি বিক্রি হচ্ছে ভালোই। নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের উল্টো দিকের সড়কে ভ্যান গাড়িতে করে শীত বস্ত্র বিক্রি করছেন ইয়াকুব মিয়া। তিনি জানান, বড় বড় মার্কেটে যে সোয়েটার হাজার থেকে পনেরশত টাকায় বিক্রি হয় আমরা ওই একই জিনিস পাঁচশ ছয়শত টাকার মধ্যে বিক্রি করি, তাই মার্কেটের তুলনায় আমাদের থেকে মানুষ কম দামে কিনতে পারে। তিনি আরও জানান, প্রতিদিন বিকেলের পর থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মানুষ কেনাকাটার জন্য আসে। ফতুল্লার মাসদাইর থেকে শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন গৃহবধূ হালিমা বেগম। ছেলে ও মেয়ের জন্য সুয়েটার কিনেছেন। নিজের কিনেছেন উলের মোজা। তিনি বলেন, কম দামেই কিনতে পেরেছি। আমাদের তো আর বড় বড় মার্কেট থেকে নেকার সামর্থ্য নাই। ফুটপাতই আমাদের ভরসা। বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার যুবক কবির হোসেন ৮০০ টাকায় একটি জ্যাকেট ও দেড়শত টাক দিয়ে একটি কানটুপিও কিনেছেন। তিনি বলেন, প্রচন্ড শীত। শহরের চেয়ে নদীর পূর্বপাড়ে অনেক ঠান্ডা। তাই শীতের কাপড় কিনতে আসছি। আমির হোসেন নামে এক ক্রেতা ২০০ টাকা দিয়ে একটি জ্যাকেট কিনে অনেক খুশি। তিনি বলেন আমরা গরীব মানুষ। ২০০ টাকা দিয়ে ভালো একটা জ্যাকেট পাইরাম। শীতের মাসটা কেটে যাবে। শুধু বঙ্গবন্ধু সড়কই নয়, পুরো শহরজুড়ে ফুটপাতে শীত বস্ত্রের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য ফুটপাতে হাটার উপায় নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ মাসের মাঝামাঝি সময় পযন্ত শৈত্য প্রবাহের প্রভাব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।