আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ১১:৪৮

প্রচন্ড শীতে জবুথবু মানুষ

ডান্ডিবার্তা | ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ‘যেইটা লন ভাই ১০০ টাকা। বাইচ্ছা লন ১০০ টাকা। আর পাইবেন না ১০০ টাকা। শীতে সবাই জইম্মা গেছে। বাইচ্ছা লন তাড়াতাড়ি। আরো শীত বাড়তে পারে। তাড়াতাড়ি লন ১০০ টাকা। মুক্তি জেনারেল হাসপাতালের সামনে চাষাড়ায় ফুটপাত বেশ জমজমাট। যেখানে শীতের গরম কাপড় সেখানেই মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বাচ্চাদের সোয়েটার, টুপি, মোজা। বড়দের সোয়েটার, জাম্পার, টুপি ও মোজার চাহিদা তুঙ্গে। শরীফ সুপার মার্কেটের পাশেও একই চিত্র। হকারদের বিচিত্র ভঙ্গিমায় শ্লোগানের মত হাঁকডাক কানে আসে। গত কয়েকদিনে প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জ শহরে শীত বেড়েছে। শুক্রবার বিকেল থেকেই যেনো উত্তরের কনকনে ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করে। শহরজুড়ে শীতের আয়োজন চোখে পড়ে। শহরের ২নং রেলগেট এলাকায় হকারদের শীতের কাপড়ের ব্যবসা জমজমাট। বিভিন্ন মার্কেটেও ক্রেতাদের ভিড়। এরই মধ্যে নিতাইগঞ্জ ট্রাকস্ট্রান্ড, মন্ডলপাড়া ব্রীজ, নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে আগুণ জ¦ালাতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষদের। চাষাড়া রেলস্টেশনে বিভিন্ন পয়েন্টে আগুণের আড্ডা জমজমাট। সন্ধ্যা নেমে আসতেই বঙ্গবন্ধু সড়কে ফুটপাতের হকারদের শীতের কাপড় বিক্রির হাঁকডাক বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে ফাঁকা যায়গাতে কিশোর বয়েসী হকাররা আগুণ ধরিয়ে তাপ পোগাচ্ছিল। সারা গাঁয়ে না হোক অনেকেই দু’খানা হাত গরম করে নিচ্ছিল। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, পৌষের শেষে মৃদু শৈত্য প্রবাহের এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে আরও কয়েকদিন। একইসঙ্গে আরও ঘনীভূত হতে পারে কুয়াশা। এছাড়া আগামী সপ্তাহে হালকা বৃষ্টি হতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িক বিঘœ ঘটতে পারে। গত শুক্রবার থেকে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জ জেলাতেও জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। প্রতিদিন হ্রাস পাচ্ছে তাপমাত্রা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে একদিনেই তাপমাত্রা কমেছে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় বেড়েছে মানুষের ভোগান্তি। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে ছিন্নমূল মানুষ। আবহাওয়াবিদরা জানান, পৌষের শেষে যেমন শীত অনুভূত হচ্ছে, মাঘের শুরুতেও তা থাকতে পারে। ঘন কুয়াশাও থাকবে সপ্তাহ জুড়ে। শক্তিশালী পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে ১৮ থেকে ২০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ‘দেশব্যাপী চলমান কুয়াশার বিস্তার থাকবে সপ্তাহ জুড়ে। শনিবার পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব দিকের বিভাগগুলোর ওপরে কুয়াশা বৃদ্ধি পেতে থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের বিভাগগুলোর ওপরে কুয়াশা কমতে থাকবে। জেলার সর্বত্র ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল বাতাসে কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষজন। দুই দিন ধরে সূর্য্যরে দেখা মিলছে না জেলার কোথাও। এতে ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষজন কাজে বের হলেও প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে রয়েছে তারা। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়েছে পড়েছেন নদী তীরবর্তী গ্রাম ও চরের মানুষগুলো। কনকনে ঠান্ডায় কাজে বের হতে না পারায় কষ্টে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। অন্যদিকে স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ফতুল্লার জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় কয়েকদিন থেকে খুব ঠান্ডা। ঘর থেকে বাহির হওয়া যাচ্ছে না। কারণ বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে সবসময় বাতাস থাকে। বাতাসের কারণে ঠান্ডা বেশি।’ শীতের তীব্রতা জেঁকে বসায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। পাশাপাশি গবাদিপশুগুলোও শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। এগুলোর শীতের গরম কাপড় পরিয়ে দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহন আলো জ্বালিয়ে চলাচল করছে। হিমশীতলের ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্নআয়ের পেশাজীবী মানুষ। রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক, দিনমজুর, থেকে নানান শ্রমজীবী মানুষ। কমে গেছে তাদের দৈনন্দিন রোজগার। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনযাপন করছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়াও অনেকে ঘর থেকে বের না হলেও জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই কাজে বেরিয়েছেন নিম্ন আয়ের পেশাজীবীরা। বিপাকে পড়েছেন চাষিরাও। দিনের তাপমাত্রা নিম্নমুখী হওয়া ও সন্ধ্যার পর ফের ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় কোলাহলহীন হয়ে পড়ে শহরের বাজারগুলো। বাজারগুলোতে কাগজ ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন মানুষ। শহরের বাইরে সোনারগাঁ রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার উপজেরায় শৈতপ্রবাহ আর ঠাÐা হিমেল হাওয়ায়  জনজীবন বিপর্যস্ত  হয়ে পড়েছে। তীব্র কুয়াশা আর জেঁকে বসা শীতের কারণে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা ১১-১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। ফলে দিনের বেশিরভাগ সময় কুয়াশায় ঢেকে থাকে রাস্তাঘাট, ফসলি জমিসহ চারপাশ। শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটেখাওয়া মানুষেরা। কুয়াশার চাঁদরে চারপাশ ঢাকা থাকায় স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘœ ঘটছে। গ্রামগঞ্জে হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঠাÐা বেশি থাকায় কষ্ট বেড়েছে জনজীবনে। রোগবালাই থেকে বাঁচতে গরম পোশাক পড়ে কাজে নেমে পড়েছেন অনেকেই। প্রচন্ড বাতাসে গ্রামাঞ্চলের বাহিরে রান্না করাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। এদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শেখ ফরহাদ হোসেন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচুর ঠান্ডা পড়েছে। শিশু-বৃদ্ধদের রোগবালাই’র হাত থেকে বাঁচতে পরিবারের লোকজনের বেশি সতর্ক থাকতে থাকতে হবে। গরম পোষাক পড়ার পাশাপাশি গরম পানি ও গরম খাবার খেতে হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা