জালিয়াতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছে
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ভুল তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে সদস্যপদ গ্রহণ করায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের ৭ সদস্যকে আজীবনের জন্য ক্লাব থেকে বহিস্কার করা হয়। এদের মধ্যে একজন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের পরিচালক হিসাবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্লাবের সদস্যপদ দেয়ার ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য প্রমান ও ক্লাবের সদস্যপদ প্রদানের নীতিমালা অনুসরণ করে সদস্য প্রদান করা, যার উপর ন্যাস্ত ছিল সেই এস এম শাহীন নিজেই বিভিন্ন ভুল তথ্য এমনকি জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে সদস্যপদ প্রদান করায় কেবলমাত্র তাদের স্থায়ী সদস্যপদই হারিয়েছেন। ২০২৩ সালের পরিচালনা পরিষদ এইসব জালিয়াত চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির কারণে ফৌজদারী আইনে কোন মামলা দায়ের কিংবা অন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে এনিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কারণ বহিস্কৃত এসব সদস্যরা আবার যে পুনরায় ক্লাবে সদস্য হবেন না এমন নিশ্চয়তা কী? কারণ সদস্যপদ বিক্রি করে এলিট ক্লাব হিসাবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সর্বোচ্চ সন্মানিত সদস্য করা হয়েছে এমন নজির গত বছরের পরিচালনা পরিষদ রেখে গেছেন। অনেকে আবার নিজের সদস্যপদ বিক্রি করে স্ত্রীর সদস্যপদ ব্যবহার করে চলেছেন। একটি ক্লাবের বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের মত এলিটক্লাবের অনারাড়ি মেম্বার একটি সন্মানজনক ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের প্রদান করার নিয়ম থাকলেও বিগত কমিটি এমনসব লোকদের অনারাড়ি মেম্বার প্রদান করে গেছেন, যে কারণে বার্ষিক সাধারণ সভায় একজন সদস্য এর প্রতিবাদ হিসাবে প্রকাশ্য মঞ্চে তার নিজের সদস্যপদ সারেন্ডার করার ঘোষণা দিয়েছেন। অনারাড়ি মেম্বারের মত অনেক কর্মকান্ডেরই তদন্ত দাবি করেছে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের শত শত সদস্য। বিগত কমিটিতে অনিয়মের তদন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে বলে সাধারণ সদস্যরা মনে করেন। এ ব্যপারে সদ্য নির্বাচিত নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি তানভার আহাম্মেদ টিটু জানান, কোন অনিয়ম হলে বর্তমান কমিটি তা ক্ষতিয়ে দেখবে। ক্লাব সদস্যদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। বর্তমান পরিচালনা পরিষদ ক্লাব সদস্যদের মতামত নিয়ে সকল প্রকার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে মন্তব্য করেন। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের একাধিক সূত্র জানায়, ক্লাবের পরিচালনা পরিষদের সদস্য হওয়া সত্বেও এস এম শাহীন ভুল তথ্য, জন্ম নিবদ্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের ছেলেকে নিজের ছেলে বানিয়ে সদস্যপদ প্রদান করে। বিষয়টি বিগত বছরের পরিচালনা পরিষদ তদন্ত করে সাধারণ সদস্যদের নিয়ে বিশেষ সাধারণ সভা করে এইসব জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত দিলেও বিগত পরিচালনা পরিষদ এস এম শাহীনের স্থায়ী সদস্যপদ থেকে বহিস্কার ছাড়া অন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। একই ভাবে ভুল তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে সদস্যপদ গ্রহণ করায় মো: নুরুল ইসলাম, ইমতিয়াজ নূর মৃদুল ও রাসেল মাহমুদের সদস্যপদ থেকে বহিস্কার করা হয়। ভুল ও ভ’য়া তথ্যের মাধ্যমে সদস্যপদ গ্রহণ এবং ক্লাবের নিয়ম ভঙ্গ করে সদস্যপদ হস্তান্তরের অভিযোগে জাহিদ হাসান হিমেল, তাসনুবা রহমান শ্রাবণী ও হাজী আসলামকে ক্লাবের সদস্যপদ থেকে বহিস্কার করা হয়। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে প্রায় ৩ হাজার সদস্যের মধ্যে এমন আরো অনেকেই রয়েছেন যারা জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে একটি চক্র এই জাল জালিয়াতির সাথে পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতির মত একটি রাষ্ট্রিয় গুরুত্বপূর্ন অপরাধ করার পরও অপরাধিরা নিবিঘেœ কিভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে? আর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থাগুলিই বা এ ব্যাপারে কোন নিরব ভ’মিকা পালন করছে। এ প্রশ্ন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সকল সদষ্যদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জবাসীরও।