শক্তিশালী সিন্ডিকেটের দখলে মাদক ব্যবসা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানেও নারায়ণগঞ্জে জমজমাট মাদক ব্যবসা চলছে। মাদক ব্যবসায়ীদের শক্ত সিন্ডিকেটের কাছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে গোলাম মোস্তফা রাসেল যোগদানের পরই নারায়ণগঞ্জকে মাদক মুক্ত করার ঘোষনা দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা জুড়ে চলছে মাদক বিরোধী অভিযান। অভিযান কালে বার বার মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার শিকার হচ্ছে পুলিশ সদস্যরা। গত বছরের ২০ ফেব্রæয়ারি ফতুল্লা পাগলা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। এরআগে বিভিন্ন সময়ে ফতুল্লার মুসলিমনগর, শাসনগাঁ, কুতুবাইল, সিদ্ধিরগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জে মাদক ব্যবসায়ীদের শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এই সিন্ডিকেটে রয়েছে অসাধু পুলিশ সদস্য, কথিত সাংবাদিক, রাজনীতিক, জনপ্রতিনিধিসহ এলিট শ্রেনীর মানুষ। যার ফলে জেলা পুলিশের ব্যাপক অভিযানেও নারায়ণগঞ্জে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। বরং অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে অনেক সময় পুলিশ সদস্যরাই বেকায়দায় পড়ছেন। স¤প্রতিকালে যেসকল মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছে তাদের ৮০ শতাংশই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর মাদক ব্যবসায়ী। বরাবরই মাদকের গডফাদাররা অধরা থেকে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। ফতুল্লার পাগলায় মেরি এন্ডারসনে মদের বার রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্সধারীরা শুধুমাত্র মদ সেবন করতে পারবেন। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই সকলের কাছেই মদ বিক্রি করছে এই দুই প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মেরি এন্ডারসনের মদ মহল্লায় মহল্লায় চলে যাচ্ছে। বিয়ে, গায়ে হলুদসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই মদ সরবারহ করা হচ্ছে। মেরি এন্ডারসনের মদ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রভাবশালীরা। যার ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এবিষয়ে অকেটা নিশ্চুপ রয়েছেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে ইয়াবা, ফেন্সিডিল ও গাঁজার বড় বড় চালান ট্রেন, লঞ্চ, বাসেসহ বিভিন্ন উপায়ে মাদক ডিলারদের আস্তানায় টুকছে। ডিলারদের আস্তানা থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে মাদক। আর নেশার টাকা জোগাতে এলাকায় বাড়ছে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, খুনসহ বাড়ছে নানা অপরাধ। শহরের চাষাড়া রেললাইন বস্তি, চাঁনমারী বস্তি, গলাচিপা-উকিলপাড়া রেললাইন, জামতলা, হংস হলের পুল, মন্ডলপাড়া পুল, জিমখানা বস্তি, তামাকপট্টি, সৈয়দপুর, আলামিন নগর, মাসদাইর, ইসদাইর, বাবুরাইল, দেওভোগ, জল¬ারপাড়, পাইকপাড়া, বেপারীপাড়া, ভূঁইয়ার বাগ, জিউসপুকুর পাড়, নন্দিপাড়া, নাগবাড়ী, হাজীগঞ্জ, পাঠানতলী, কোতালেরা বাগ, সস্তাপুর, র্যালী বাগান, ডনচেম্বার, ব্যাংক কলোনী, খানপুর, তল¬া, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, আলীরটেকের কুড়েরপাড়, নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন, নিতাইগঞ্জ, কাশীপুর, গোগনগর, জিমখানা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকের কারবার চলছে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জে মাদক নিয়ন্ত্রনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সতেচন হতে হবে। পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মাদকের শেল্টারদাতাদেও বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া জরুরী।