আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | সকাল ৬:৩২

আন্দোলনে নামতে অনিহা বিএনপির

ডান্ডিবার্তা | ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ | ৪:২৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট

গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বিএনপিতে হতাশা এবং এক ধরনের বিরক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা দায়সারা গোছের কিছু বক্তৃতা বিবৃতি দিচ্ছেন। নতুন করে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতেও তাদের মধ্যে এক ধরনের অনীহা দেখা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেমনটি বিএনপি নেতারা নির্বাচনের আগে বলেছিলেন নির্বাচনের পরও আন্দোলনের ধারা অব্যাহত থাকবে। আন্দোলন বেগবান হবে কিন্তু তেমন কিছু নেই। আর বিএনপির কর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নানারকম বিরক্তি এবং অস্বস্তি। হতাশা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন মাঠ পর্যায়ের নেতারা। আর এই সব কিছুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে তারেক জিয়ার ভুল কৌশল এবং ভুল নেতৃত্ব। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর থেকেই তারেক জিয়া বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। বিএনপির অধিকাংশ সাবেক নেতারা মনে করেন, বিএনপির এই বিপর্যয়ের জন্য তারেক জিয়াই দায়ী। আবার সাধারণ জনগণের কাছে তারেক জিয়া একজন দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত। হাওয়া ভবনে লুণ্ঠন, লুটপাট এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তারেক জিয়া এবং তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বেপরোয়া দুর্নীতির কথা জানেন না এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু এসব কিছুর পরেও বিএনপিতে তারেক জিয়ার একটা অবস্থান ছিল। বিশেষ করে যারা বিএনপিতে তরুণ নেতৃত্ব তারা তারেক জিয়া অন্ধ সমর্থক ছিলেন এবং এ কারণেই দলের ভিতর তারেক জিয়ার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত ছিল। যদিও সাধারণ মানুষ তাকে কখনোই একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ভাবেনি। বরং একজন দুর্বৃত্ত, মতলববাজ,  দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি হিসেবে জেনেছে। কিন্তু দলের ভিতরে তরুণ নেতৃত্ব তারেক জিয়ার একান্ত অনুসারী হিসেবেই পরিচিত ছিলো। কিন্তু এবারের নির্বাচনের পর সেই তরুণ নেতৃত্ব এবং তরুণ কর্মীরাই তারেকের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করছেন। প্রকাশ্যে। ২০১৮ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির সিনিয়র নেতারা তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে। তারা মনে করেন তারেক জিয়া হঠকারী, রাজনীতির জটিল এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তার নেই। তিনি সবসময় মতলবী সিদ্ধান্ত নেন এবং কোন সিদ্ধান্ত নিলে তার নিজের ব্যক্তিগত লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেটার কথা চিন্তা করেন। আর এখন ২০২৪ এর নির্বাচনের পর বিএনপির তৃণমূল পর্যন্ত এই বার্তা চলে গেছে যে তারেক জিয়া আসলে রাজনীতির অযোগ্য। আগে তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য বা তারেক জিয়ার তার ভিডিও কনফারেন্সগুলোতে যোগ দেওয়ার জন্য তৃণমূল যে উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল, এখন তাতে ভাঁটা পড়ে গেছে। অনেকেই তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলতে আড়ষ্ট বোধ করছেন। অনেকে তাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির নেতারাই বলছেন, পরপর তিনটি নির্বাচনে বিএনপির কৌশলগত ব্যর্থতার জন্য তারেক জিয়াই দায়ী। এরকম অবস্থা যদি বিশ্বের অন্য কোন দেশে হতো, তাহলে ওই নেতার রাজনীতি করত না। তারপরও তারেক জিয়া কেন রাজনীতি করছেন, এটি নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করেন, আন্তর্জাতিক মহলে তারেক জিয়া গ্রহণযোগ্যতা নাই। বরং ২৮ অক্টোবরের পর ঘটনাবলির পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে এখন রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে যেন তারেক জিয়াকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বিএনপিতে যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন তাদের কাউকে নেতৃত্বে আনা হয়। আবার ব্যবসায়ী মহল যারা গত এক বছরে বিএনপির প্রতি আবার আকৃষ্ট হয়েছিল, বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে এমন ধারণা থেকে কেউ কেউ বিএনপিকে আর্থিক পৃষ্টপোষকতাও করেছিল, বিএনপির সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগও শুরু করেছিল। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তারা এখন আস্তে আস্তে সরে দাঁড়াচ্ছে।  তারা মনে করছে, তারেক জিয়া যতদিন বিএনপির নেতৃত্বে থাকবে ততদিন বিএনপির কিছুই হবে না। এ রকম বাস্তবতায় তারেক জিয়া এখন দলের জন্য একটি বোঝায় পরিণত হয়েছেন। আর এ কারণেই একদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে যেমন তার গ্রহণযোগ্যতা নাই, আন্তর্জাতিক মহল তাকে পছন্দ করে না, এমনকি দলে তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে। এর ফলে কেউ কেউ মনে করছেন তারেক জিয়ার রাজনৈতিক ও কৃতৃত্ব এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব হয়তো শেষ অধ্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে তারেক জিয়া দীর্ঘদিন রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবেন না বলে মনে করেন অনেকে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা