জাপা নিয়ে হতাশ কর্মীরা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
অস্বস্তি যেন পিছু ছাড়ছে না জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের। জাতীয় পার্টি ১১টি আসন নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা পাবে কি না এই নিয়ে এক অস্বস্তি এবং অস্পষ্টতা রয়েছে, এর মধ্যেই আবার দলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে জিএম কাদেরের জন্য। এর আগে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির পরাজিত প্রার্থীরা গত ১০ জানুয়ারি দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছিল। ভোটে ভরাডুবির জন্য দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে দায়ী করে এই তিন শীর্ষ নেতার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। জাতীয় পার্টির (জাপা) ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন পদে থাকা ৬৭১ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে পদত্যাগ করেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগরের ১০টি থানার এসব নেতাকর্মীর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহল মনে করছেন জাতীয়পার্টি এখন আরেকবার চুড়ান্ত ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। সদর-বন্দর আসনে টানা ৩ বারের মত জাতীয়পার্টির মনোনয়নে সেলিম ওসমান এমপি নির্বাচিত হলেও প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের সেই কর্মী বাহিনী সেলিম ওসমান ধরে রাখতে পারেনি। নারায়ণগঞ্জে জাতীয়পার্টি সোনারগাঁয়ে কিছুটা শক্তিশালী হলেও অন্যান্য থানা গুলিতে নামমাত্র কমিটি ছাড়া মাঠ পর্যায়ের তেমন নেতাকর্মী নেই বললেই চলে। খোদ নারায়ণগঞ্জ শহরে জেলা কিংবা মহানগর জাতীয়পার্টির কোন কার্যালয় আজো গড়ে উঠেনি। নাসিম ওসমানের প্রয়ানের পর নারায়ণগঞ্জ জাতীয়পার্টি অনেকটাই আজ্ঞাবহ কমিটি হয়ে উঠেছে। সেলিম ওসমান আওয়ামীলীগ জাতীয়পার্টি ও বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে জনপ্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে চলেছেন। নারায়ণগঞ্জে জাতীয়পার্টি এখন অনেকট্ ানিভু নিভু প্রায়। আর এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এ ধরনের গণপদত্যাগ কর্মসূচিতে অংশ নেয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এরকম বাস্তবতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে জিএম কাদের এক ধরনের চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দলের এরকম পরিস্থিতি জিএম কাদের কি উদ্যোগ নেন সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। সরেজমিন দেখা যায়, দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে জাতীয় পার্টি থেকে ঢাকা মহানগর ও বিভিন্ন থানার নেতারা গণপদত্যাগ করছেন। আগত নেতাকর্মীরা বলেন, তিলে তিলে জাতীয় পার্টি গড়েছি আমরা। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতার নাম মুছে দিতে চান। তিনি প্রতিষ্ঠাতার সহধর্মিণীর নাম মুছে দিতে চান। তারা বলেন, জিএম কাদের তার কয়েকজন অনুগতসহ এবার প্রহসনের নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আমরা এই জাতীয় পার্টি কখনোই মানি না মানব না। তাই আমরা আজ বিভিন্ন থানা ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা গোলামির জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করতে চাই। আমরা আবারও জাতীয় পার্টির দুর্গ গড়ে তুলব। যারা পদত্যাগ করছেন তারা প্রত্যেকেই জাপা নেতা শফিকুল ইসলাম সেন্টুর সমর্থক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে জাতীয়পার্টি ভাঙ্গন এখন সময়ের ব্যপারমাত্র।