ঘোষণার অপেক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচন অতিবাহিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই ফের আলোচনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি। দীর্ঘ ১৬ বছর পর নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং ৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত বছরের ৩১ জুলাই। শহরের খানপুর হাসপাতালের সামনে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া এই সম্মেলন নিয়ে বেশ জল্পনা-কল্পনা ছিলো তৃণমূলে। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসার প্রত্যাশায় ছিলেন সকলেই। কিন্তু সম্মেলন হলেও নেতৃত্ব নির্ধারণ হয়নি। কোন নেতৃত্ব বাছাই না হওয়ার কারণে নানা আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয় দলের মধ্যে অনেকে বলছে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর নানা কোন্দল থাকার কারণে আলাদা আলাদাভাবে দুই মেরুর থেকেই সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক হতে মরিহা হয়েছেন কয়েকজন। সেই পরিপেক্ষিতেই নানা ইস্যূ দেখিয়ে বলা হয়েছিলো দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের পর পরই দুইটি কমিটি একত্রে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীরা নানাভাবে প্রশ্ন করছে বর্তমানে যেহেতু নির্বাচন অতিবাহিত হয়েছে তাহলে এবার কমিটি হয়ে গেলে নেতাকর্মীদের মাঝে একটি উজ্জ্বীবীত মনোভাব দেখা যাবে। অনেকে বলছে, অচিরেই এই বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ পদে আসতে দেখা যাচ্ছে নেতৃবৃন্দদের ছড়াছাড়ি। কিন্তু নেতাকর্মীদের দাবি, সকলেই একত্র ও ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। যেহেতু নির্বাচনের পর পরই কমিটি দেওয়ার সেই অনুযায়ী আবারো কেন্দ্রের লবিং আরো জোরদার করেছে পদপ্রত্যাশীরা। বর্তমানে সম্মেলনের আগ মুহুর্ত্ব থেকে যারা যারা আলোচনায় ছিলেন বর্তমানে তারাই ফের আলোচনায় রয়েছেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম। ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোনারগাঁয়ের ছগির আহাম্মেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী রয়েছেন ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও থানা আওয়ামী লীগের ১নং কার্যকরি সদস্য আবু মোহাম্মদ শরীফুল হক। এদের মধ্যে ফতুল্লার ছাত্রলীগ নেতা শরিফুল হকের নাম সম্মেলনের দিন থেকে যোগ করা হয় এর আগে তার নাম যুবলীগের পদে শোনা গেলে ও সম্মেলনের পর থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের তার নাম আলোচনায় শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন দুজন। তারা হলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জামির হোসেন রনি এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া খোনের নাম। এদিকে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন, সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন। এই পদে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সম্মেলনের দিন পর্যন্ত আর কেউ নাম ঘোষণা করেননি। তবে, মহানগরে সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নিজেদের আলোচনায় এনেছেন। তারা হলেন জেলা যুবলীগের তথ্য ও গবেষনা বিয়ষক সম্পাদক তাহের উদ্দিন আহম্মেদ সানি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল প্রধান এবং কায়কোবাদ রুবেল। এদের মধ্যে তাহের উদ্দিন সানি ও কায়কোবাদ রুবেল মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলয়ের সেই হিসেবেই তারা সুপরিচিত। যেহেতু সম্মেলন পর্যন্ত তাদের নাম ছাড়া আর নাম শোনা যায়নি তাহলে এদের মধ্য থেকেইে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবে নেতা। আর যদি প্রভাবশালী নেতাদের দিয়ে কেউ উপরে লবিং করিয়ে থাকে আলোচনা ছাইড়াই সেটা ভিন্ন ক্ষেত্রে বললেই চলে। সূত্র মতে, গত ২০০৬ সালে নিজাম উদ্দীনকে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক করা হয় ফিরোজ হোসেন, আব্দুল মতিন মন্টু, গোলাম কিবরিয়া খোকন ও শাহাজাদা প্রধান বাবুল এই ৫ জন যুগ্ম আহ্বায়কসহ মোট ১০১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তাদের ওই আহ্বায়ক কমিটি দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৮ বছর পার করলেও পূর্নাঙ্গ হয়নি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি। অন্যদিকে ২০১৭ সালের ২০ জুলাই শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগেরা কমিটি বিলুপ্ত করে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন করা হয়। তখন সভাপতি করা হয় মো. জুয়েল হোসেনকে যিনি বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক করা হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান। তাদের অধীনে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনে তেমন একটা উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন অনেকবারই ঘোষণা দিয়েছেন যে কিছুদিনের মধ্যেই থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু কার্যত সেই ঘোষণার বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয় নাই। সর্বশেষ প্রসঙ্গ ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন চলাকালে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সকল থানা ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপর থেকে জেলা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়। নেতাকর্মীরা সাংগঠনিকভাবে ঝিমিয়ে পড়তে দেখা যায়। কিন্তু বিগত দিনে বর্তমান সরকার বিরোধী থাকাকালীন আন্দোলন সংগ্রামে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ ব্যাপক ভূমিকা পালন করে এসেছেন। কিন্তু বর্তমান কমিটিতে দায়িত্ব প্রাপ্তদের নানা ভুলে দীর্ঘদিন কমিটি বিহীন হয়ে পরেছে জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ কিন্তু তাদেরকে আবারো রাজপথের জাগিয়ে তোলার লক্ষ্যে রাজপথের লড়াকু সৈনিক ও তৃণমূল ধারা কমিটি গঠন করার লক্ষ্যে সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছিলো কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ কিন্তু সেই সম্মেলনে ও কমিটির ঘোষণা না থাকায় হতাশা আরো বৃদ্ধি পায়। কিন্তু নির্বাচন শেষ হলে আবারো নেতাকর্মীরা আলোচনায় এসেছেন এই অপরিপূর্ণ কমিটি এবার যেহেতু আলোচনা শীর্ষে চলে এসেছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবার কমিটি হওয়ার আশঙ্খা রয়েছে বলে ও মনে করছেন নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম বলেন, আমরা শুধু যানি কমিটি নিয়ে নির্বাচনের পর বসার কথা ছিলো। হয়তো শীগ্রই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বর্তমানে যেহেতু আবারো কমিটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এবার কমিটির একটা কিছু হবেই। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী তাহের উদ্দিন আহম্মেদ সানি বলেন, আমরা ও জানি নির্বাচনের পর পরই কমিটি দেওয়া হবে এখন দেখি কতটুকু এটা বাস্তায়িত হয়। আমরা কেন্দ্রে যোগাযোগ অবহৃত রেখেছি এখনো কমিটির ব্যাপারে কিছু শোনা যায়নি শুধু শোনা গেলো শীগ্রই কমিটি নিয়ে বাস হবে। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী কায়কোবাদ রুবেল বলেন, বর্তমানে নির্বাচনের পর পরই কমিটি বিষয়ে কিছু শুনি নি দেখি কি হয়। এখনো কোন কিছু বোঝা যাচ্ছে না। নির্বাচন গেলো ১৫দিন হয়েছে এখন হয়তো কমিটি নিয়ে কোন নির্দেশনা আসতে পারে।