মাঠ থেকে নিরুদ্দেশ বিদ্রোহীরা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং মহানগর বিএনপির কমিটি গঠিত হওয়ার সাথে সাথেই কমিটিতে কাঙ্ক্ষিত পদে অদিষ্ঠিত হতে না পেরে পদবঞ্চিত নেতারা জেলা এবং মহানগর বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কমিটির বিরোধীতা করে নিজেদেরকে জেলা এবং মহানগরের বিদ্রোহী গ্রুপ হিসেবে জানান দেন। তবে বিদ্রোহী হিসেবে নিজেদের কাঙ্ক্ষিত পদকে ফিরে পেতে সর্বক্ষেত্রে যে পরিমাণ তাদের কার্যক্ষমতার জানান দেয়ার কথা ছিল বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণ আন্দোলন সংগ্রাম বিভিন্ন কর্মসূচিতে ছিল তাদের দুর্বলতা এছাড়া দলের দুঃসময়ে ছিল তারা নীরব। অথচ দলের মূল দ্বারা অনুমোদিত কমিটি থেকে তাদের কার্যক্ষমতা সর্বোচ্চ থাকার কথা ছিল।
দলীয় সূত্র বলছে, ২০২২ সালের ১০নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে এবং সদস্য সচিব করা হয় গোলাম ফারুক খোকনকে। জেলার বিএনপির কমিটি অনুমোদনের পরই জেলা বিএনপির পূর্বের কমিটির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল ও নজরুল ইসলাম পান্নার নেতৃত্বে জেলা বিএনপির অনুমোদিত কমিটির বিদ্রোহী বলয় গড়ে তুলেন। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে জেলা বিএনপির অনুমোদিত কমিটির সাথে টেক্কা দেয়ার চেষ্টা করেন বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা। কিন্তু টেক্কা দিয়ে সফল না হওয়ার কারণে জেলা বিএনপির সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয় আর এই সম্মেলনে বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা প্রার্থীও হতে পারেননি। পরবর্তীতে সম্মেলনে আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সভাপতি হন এবং সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন সাধারণ সম্পাদক হন। তারপরও বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামেও বিদ্রোহী ভূমিকায় থাকলেও বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা ধীরে ধীরে রাজপথে গতি হারিয়ে ফেলেন। যার কারণে এখন পুরোপুরি নীরব ভূমিকায় রয়েছেন জেলার বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সাখাওয়াত হোসেন খানকে আহ্বায়ক ও আবু আল ইউসুফ খানকে সদস্য সচিব করে মহানগর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নবাগত কমিটি গঠনের পর সেই কমিটি থেকে ১৫ জন নেতা পদত্যাগ করে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহী কমিটি জানান দেন। তারা হলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, হাজী নুরুদ্দিন, আতাউর রহমান মুকুল, আবুল কাউসার আশা, সদস্য অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, শহিদুল ইসলাম রিপন, আমিনুল ইসলাম মিঠু, মনোয়ার হোসেন শোখন, ফারুক হোসেন, হাজী ফারুক হোসেন, হান্নান সরকার, আওলাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মোল্লা ও অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম শিপলু। তবে এদের মধ্যে মুকুল, হান্নান সরকার, সুলতান ও মুরাদকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা প্রথম দিকে মহানগর বিএনপির মূল দ্বারার নেতৃত্বে থাকা নেতাদের সাথে টেক্কা দিয়ে বিদ্রোহীরা নিজেদেরকে মূলধারা নেতাদের থেকে অধিক সক্ষমতা সম্পন্ন হিসেবে জানান দেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তারা মূলধারার নেতাদের রাজনীতির কাছে ধরাশয়ী হয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন। যার কারণে বিদ্রোহী গ্রুপের বেশকয়েকজন নেতা মূলধারায় ফিরে আসেন। এরপর থেকেই বিদ্রোহী বলয় ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। যার কারণে দলীয় আন্দোলন সংগ্রামে কর্মসূচি পালনে ছিল তাদের গড়িমসি। হরতাল অবরোধের মত কর্মসূচিতে বিদ্রোহী বলয়ের নেতারা ছিল নিষ্ক্রিয়। দলীয় সকল কর্মকান্ডে বিদ্রোহীদের কোন কর্মকান্ড নেই বললেই চলে। তাই মূলত বলা চলে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহীরা রাজনৈতিক ভাবে ফ্লপ খেয়ে দলীয় কর্মকান্ডে মুখ লুকিয়ে আছেন।