জুয়ার আসর বন্ধ করতে সাংসদ সেলিম ওসমানের কড়া হুশিয়ারি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ফতুল্লার নর্ম পার্কে জুয়ার বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন বিকেএমইএ এর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। তিনি বলেন, আমার ভাই প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের নামে নর্ম পার্কে জুয়া চলবে তা আমি সহ্য করব না। তিনি আরো বলেন, নাসিম ওসমান পার্ক, আমি চুরি করবো ডাকাতি করবো মাইক বাজিয়ে লটারি করবো; এটা কি। নাসিম ওসমান চার চার বারের সংসদ সদস্য হয়েছেন। তার নামে জুয়ার আসর বসবে, কে এই পারমিশন দিল। আমি চাই এখন থেকে এই জুয়ার আসর যাতে বন্ধ হয়। আমি আজ সেখানে গিয়েছিলাম কিন্তু কাউকে পাইনি। আমি শুনেছিও নাসিম ওসমানের সন্তান এ অপকর্ম প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে। ওই পার্কটি চিলড্রেন পার্ক হিসেবে তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু ওখানে যে জুয়া চলবে এটা তো হতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা বাহীনির প্রতি অনুরোধ রাখবো রাত থেকেই এই জুয়া যাতে না চলে সে ব্যবস্থা করুন। তিনি যত বড়ই নেতাই হন না কেন, এই কাজ সে করতে পারবে না। জুয়ার আসর বন্ধ না হলে আমি মঙ্গলবার সংসদ থেকে ফেরার পথে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব ভেঙ্গ গুড়িয়ে দিব। সেলিম ওসমানের এ হুশিয়ারী শুনার পর আওয়ামীলীগ নেতা নর্ম পাকের ব্যবস্থাপক শাহ নিজাম তার ফেসবুক স্টাটাসে লিখেন, পার্কে জুয়া হত আমার জানা ছিল না। আমি জেনে তা তাৎক্ষনিক বন্ধ করে দিয়েছি। সেলিম ওসমান তিনি গ্যাসের সমস্য নিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখে গ্যাসের সমস্যার সমাধান পেয়েছি। সরকার প্রধানকে অনুরোধ করার ১২ ঘণ্টার মধ্যে তিনি এ সমস্যার সমাধান করেছেন বলেও উল্লেখ করেন জাতীয় পার্টির এই নেতা। গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। সেলিম ওসমান বলেন, অনেকে বলেছিল আগামী ২ বছর গ্যাস আসবে না। এখন এত গ্যাস যে কমিয়ে রাখতে হয়। আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি; তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। ১২ ঘণ্টার পার না হতেই আমার গ্যাসের সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। সমস্যার সমাধান যে করবে তাকেই আমাদের প্রয়োজন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদকেও চিঠি লিখেছিলেন বলে জানান শামীম ওসমানের বড় ভাই। তিনি আরও বলেন, কল্পনা করা যাবে না এখানকার ফ্যাক্টরিগুলো কত লস দিয়েছে। তিন লাখ লোকের কাজ থাকতো না গ্যাস না পেলে। আমাদের বেতন দেওয়ার ক্ষমতা থাকত না। এ সময় নারায়ণগঞ্জের যানজট নিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, যানজটের দায়িত্ব সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের। আমাদের একসাথে বসতে হবে। আমি তো পেরেছি। বাসের ভাড়াও কমিয়েছি। মানুষ বেড়ে গেছে যাতায়াতও বেড়ে গেছে। নতুন রাস্তা চালু হলে এটা (যানজট) কমে যাবে। যারা ক্যামেরা নিয়ে বসে আছেন, নারায়ণগঞ্জে কোথায় কেন যানজট হয় তা আমাদের দিন। যারা দিতে পারবেন তাদের পুরস্কৃতও করা হবে। এগুলো দিতে পারলে নারায়ণগঞ্জে জলাবদ্ধতা থাকবে না মশাও থাকবে না। ময়লা আমরা সরাতে পারবো না। এটা কাউন্সিলরদের কাজ। আমরা সবাই মিলে এটা করতে পারবো। রাস্তার দুই পাশে দোকান কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কেন? কারা বসিয়েছে? দোকানের ভাড়া কারা নেয়- আমরা একসঙ্গে বসলে এসব সমাধান সম্ভব। প্রশাসনকে ভালো উল্লেখ করেন সেলিম বলেন, আমরা যদি ভালো না হই প্রশাসন শান্তি দিতে পারবে না। আমি একটা চেয়ারে বসে কাজ করতে পারবো না, অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেব এটা হবে না। না পারলে অন্যের সাহায্য নেব। নারায়ণগঞ্জের মানুষের সমস্যা সমাধান হবে। রাতারাতি আমরা পারবো না। তবে আমাদের অতীত ভুলে গিয়ে সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন সেলিম ওসমান। পরিবেশ নিয়ে বলেন, নারায়ণগঞ্জে এমন কোন কোন ফ্যাক্টরি আছে যেখানে ইটপি ছাড়া চলছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কোথায় আছে সেটা দেখতে চাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে। সাংবাদিকরা দেখান যে এখানে ইটিপি ছাড়া এ ফ্যাক্টরিটা চলছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই ফ্যাক্টরিটা বন্ধ হয়ে যাবে। কোন অবস্থাতে পানিকে নষ্ট করা যাবে না। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদল মন্তব্য করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ এখন বসবাস অযোগ্য একটি শহর। এটা অস্বীকার করার কোন পথ নেই। শহরে সবগুলো সড়ক হকারদের দখলে আছে। প্রেসক্লাব একটা সড়ক নিয়ে অনেকবার লেখালেখি করেছে। একটা পর্যায় আমরা সেটাকে অবমুক্ত করেছি। কিন্তু সেই সড়কটি রক্ষা করতে পারিনি। নারায়ণগঞ্জের এই বঙ্গবন্ধু সড়ক, শায়েস্তা খান সড়ক আর নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক যদি হকার মুক্ত করতে পারি। তাহলে চাষাঢ়ার দিকে যানজট ৫০ শতাদিক কমে আসবে। মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দ্বীপু, সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, যুগ্ম সম্পাদক আহসান সাদিক, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, কার্যকরী সদস্য আবু সাউদ মাসুদ, মাহফুজুর রহমান, আব্দুস সালাম, আফজাল হোসেন পন্টি, রুমন রেজা, প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য এম আর কামাল, প্রনব কৃষ্ণ রায়, রফিকুল ইসলাম রফিক, দিলীপ কুমার মন্ডল, আনোয়ার হাসান। এছাড়া নাগরিক টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ও লাইভ নারায়ণগঞ্জ অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, দৈনিক ইত্তেফাক’র ফটো সাংবাদিক তাপস সাহা, দৈনিক সমকাল’র ফটো সাংবাদিক মেহেদী হাসান সজীব, বাংলা নিউজ টোয়েন্টি ফোরের পারেভজ, জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি মোবাশ্বেরসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। ব্যবসায়ী নেতৃবন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মোরশেদ সরোয়ার সোহেল, পরিচালক শাজাহান হোসেন সাজানু, নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি সেলিম সারোয়ার, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোহসীন মিয়া প্রমুখ।