জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা কোথায়?
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের বিপদে ফেলে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছে। চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনে একদিনের জন্যও রাজপথে প্রকাশ্যে দেখা মেলেনি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে। কর্মীরা রাজপথে থাকলেও জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা রাজপথে না থাকায় দলের তৃনমূলে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কর্মীদের মতে, দলের শীর্ষ নেতারা নিরাপদে থেকে আমাদের বিপদের মুখে ফেলেছে। হামলা-মামলার শঙ্কা নিয়ে আমরা এখন বাড়ী-ঘর ছেড়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। বিশ্লেষকদের মতে, দলের শীর্ষ নেতারা রাজপথে না থাকায় আন্দোলনের ভাটা পরেছে। বিএনপির রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে রাজপথে দেখা মেলেনি জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকনকে। বিএনপির টানা হরতাল-অবরোধ পালন করছে দলের মধ্যম পর্যায়ে কিংবা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। পুলিশের গুলি, হামলা, মামলাকে উপেক্ষা করে সরকার বিরোধী আন্দোলন সফল করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সাধারণ কর্মীরা। কিন্তু রাজপথে পাচ্ছেনা জেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতাকে। এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আন্দোলন করতে গিয়ে জেলার ৭থানায় ২২টির অধিক মামলা হয়েছে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। আন্দোলন করতে গিয়ে নেতাকর্মীরা নানাভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। হয়রানী থেকে বাদ যাচ্ছে না পরিবারের সদস্য এবং নিকটাত্মীয়রাও। একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে ফেরারি জীবন যাপন করছে নেতাকর্মীরা। কৃষি জমি,চর, ঝোপের মধ্যে রাত যাপন করছে। আন্দোলন করতে গিয়ে অনেকে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবারের সদস্যরা অর্ধহারে, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তবে, সরকার বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে সক্রিয় রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে তিনি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় পদ বাগিয়ে লম্ফঝম্প করা মাহামদুর রহমান সুমনকে রাজপথে পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে আড়াইহাজার আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে আতাঁতের বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন ওপেন সিক্রেট। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি এড.শাখাওয়াত, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সোনারগাঁও বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোঃ চৌধুরী, যুবদলের আহŸায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সজিব, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহবায়ক সজল, সদস্য সচিব শাহেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রানা, জেলা যুবদল নেতা সাগর সিদ্দিকী, ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আঃ খালেক টিপু, ফতুল্লা থানা সেচ্ছাসেবক দলের আহŸায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা শ্রমিক দলের আহবায়ক শাহ আলম পাটোয়ারী ছাড়া জেলার অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের রাজপথে থাকার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে দেখা যায়নি। তবে কিছু নেতা আন্দোলনের শুরুর দিকে ফটোসেশান করেই দায়িত্ব শেষ করে আত্মগোপনে চলে গেছেন। ফলে চরম বিপাকে পরেছে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। শীর্ষ নেতারা আন্দোলনে পাশে না থাকায় সরকার বিরোধী আন্দোলনে ভাটা পরেছে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। এব্যাপারে জানতে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।