আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | রাত ২:৫৯

বিএনপিকে ছাড় দিতে নারাজ আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বিএনপি রাজপথের আন্দোলনে চালিয়ে যাচ্ছেন। এ জন্য মামলা-হামলার শিকার ও হচ্ছেন বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ দিয়ে বিএনপিসহ বিরোধীদের আন্দোলনের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল সরকার। কঠোরতা বজায় রেখে বিরোধীদের লাগাতার কর্মসূচির মধ্যে নির্বাচন করে ফেলেছে সরকার। এরপর সরকার গঠন ও নতুন সংসদের অধিবেশনও বসেছে গত ৩০ জানুয়ারী। তাছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা চিন্তা করেছিলেন, নির্বাচনের পর বিরোধীদের প্রতি নমনীয় হবে ক্ষমতাসীন সরকার। কিন্তু বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি ঘিরে সরকারি দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় স্পষ্ট হয়েছে, বিরোধীরা এখন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের থেকে ছাড় পাচ্ছে না। তাদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব বোঝা গেছে সর্বশেষ বিএনপির লাস্ট কর্মসূচি কালো পতাকা মিছিলে। তবে নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের আচরণ পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরাও।সে অনুযায়ী সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করার কথা বলছেন তাঁরা। তাঁরা বলছেন, শুধু সরকারের আচরণ নয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে চিন্তাভাবনা চলছে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। সময় মতো এসব চিন্তা ও আলোচনার ফসল মাঠে গড়াবে বলে জানান তাঁরা। এমনকি তারা দাবি করেন বিএনপির একটি জনসমর্থন দল এই দলের হাজারো সমর্থন রয়েছে যদি এই দলকে রাজপথ থেকে নিষ্ক্রিয় করার চিন্তা করে এই সরকার সেখানে তারা কখনো বেড়ে উঠতে পারবে না। শান্তিপূর্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায় করতে চান বিএনপি। সূত্র মতে, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর সারা দেশে দুই দফায় কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দেয় বিএনপি। প্রথম দফায় গত ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামের প্রতিবাদে, কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং সংসদ বাতিলের দাবিতে জেলা ও মহানগরে এই কর্মসূচি পালন করে দলটি। কোনো রকম বাধা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে দুই দিনই দেশব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়। এরপর ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার সংসদ বাতিল ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আবারও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দেয় বিএনপিসহ বিরোধীরা। সংসদ বসার দিনে এই কর্মসূচি সফল করা দূরে থাক, রাস্তায়ই দাঁড়াতে পারেননি বিএনপির নেতা-কর্মীরা। জানা গেছে, গত ৩০ জানুয়ারী বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ‘দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজ বন্দীদের মুক্তির ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের’ দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১ দফা দাবির কালো পতাকা মিছিলের আয়োজন করেন মহানগর বিএনপি। কিন্তু তারা কর্মসূচি পালন করতে আসলেই পুলিশের খপ্পরে পরেন। এদিকে সেদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের থেকে পুলিশের অবস্থান ছিলো বেশি কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি আরো বড় আকার ধারণ করেন বিএনপি। কিন্তু কোনভাবেই প্রেসক্লাবের আশেপাশে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে তারা ভিতরে প্রোগ্রাম করতে চাইলে সেখানে গিয়ে তাদের ব্যানার টেনে নিয়ে যায় পুলিশ। তাছাড়া বন্দর থানা বিএনপির কালো পতাকা কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয় আর সাথে সাথে কর্মসূচি পন্ড হয়ে যায়। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় বাধার সম্মূখীন হয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এদিকে বিএনপির বড় বড় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এখনো কারামুক্ত হয়ে আসেনি যাকে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীরা চাইলে ও রাজপথে নির্দেশনা ছাড়া কিছু করতে পারছে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছে, ২৮ অক্টোবর থেকে নানা প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা, যা এখনো অব্যাহত আছে। তবে দলের হাইকমান্ড এ ব্যাপারে সজাগ রয়েছে। কোনোভাবেই যাতে নেতা-কর্মীদের মনোবল না ভাঙে, সে ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তারা আরো বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে রাজপথে থেকে দাবি আদায় করতে চায় বিএনপি। কিন্তু সরকার চায়, বিএনপি সহিংসতায় জড়াক; যাতে করে বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানোর পাশাপাশি চূড়ান্তভাবে বেকায়দায় ফেলা সম্ভব হয়। এর অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করতেও নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই আওয়ামী লীগের সরকার আর কিছু করতে পারবে না কারণ রাজনীতির সবচেয়ে বড় শক্তি জনগণ তা আমাদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান যুগের চিন্তাকে বলেন, গত ৭ জানুয়ারী এই আওয়ামী লীগ সরকার যে এক তরফা নির্বাচন পরিচালনা করেছেন তার মাধ্যমে দেশকে একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। এই নির্বাচনে ছিল না দেশের জনগণের কোন সমর্থন যাকে ঘিরে তারা নিজেরই অটোভাবে নির্বাচিত হয়ে এসে এখন দেশকে একটি স্বৈরতান্ত্রিক দেশে পরিণত করতে চাচ্ছেনা কারণ তারা লক্ষ্য করেছে দেশের ৯০ ভাগ মানুষ এখন এই সরকারকে চায় না তারা কেউ ভোট কেন্দ্রে ভোট ও দিতে যায়নি। যাকে ঘিরে এই সরকারের জনগণের নির্বাচিত সরকার নয় সে জালিয়াতি সরকার হিসেব গণ্য হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান দেশের যে অবস্থা সেই অবস্থায় আমরা বিএনপির নেতারা জনগণের পাশে এসে দাড়াঁলে ও তারা আমদের দাঁড়াতে দিচ্ছে না আমাদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন প্রচলিত রেখেছেন। কিন্তু আমি বলতে চাই বিএনপি একটি জনসমর্থন দল। বিএনপির সকল সময় দেশের জনগণের পাশে ছিল সামনে ও দেশের জনগণের পাশে থেকে সকল প্রকারের প্রতিবাদ করে যাবে এই প্রতিবাদের মাধ্যমে যদি পুলিশি হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের শিকার হতে হয় তারপর ও দেশের স্বার্থে ও দেশের জনগণের স্বার্থে সকল বাধা উপেক্ষা করেই রাজপথের আন্দোলন শান্তিপ্রিয়ভাবে অবহৃত রাখবো। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, এই সরকারের রাজনৈতিক অবস্থান এখন কুড়ে ঘরে পরিণত হয়েছে যা জোরে বাতাস আসলেই ভেঙ্গে যাবে। কারণ বর্তমানে তারা একটি ও সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে সাংগঠনিক শক্তি জোগায়নি। তা হলো তারা, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে নির্বাচিত হয়েছেন। পরবর্তীতে এবার ২০২৪ সালে ও একটি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে তারা আবারো ক্ষমতায় এসেছেন যেখানে জনগণের ছিলো না সমর্থন। যাকে ঘিরে তারা বর্তমানে কোন শক্ত অবস্থানে নেই তাদের খুঁটি লড়বরে হয়ে আছে। যে কোন সময় দেশে গণবিপ্লব ঘটবে আর এই সরকার ক্ষমতা হারাতে বাধ্য হবে। সেই কারণেই এই আওয়ামী লীগ সরকার এখন বিএনপিকে ভয় পায়, জিয়া পরিবারকে ভয় পায়। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এই সরকারের লালিত-পালিত কিছু প্রশাসন বিএনপির উপরে ফুসে উঠেছে কারণ তার ও জানে যদি দেশে গণবিপ্লব ঘটে তাহলে তাদের সকল কুকর্ম ফাঁস হয়ে যাবে। আর এ সরকারের পাশ পাশি তাদের ও পলায়ন হতে হবে। সেই দিক বিবেচনা করেই বর্তমানে বিএনপির সকল শান্তিপূর্ন কর্মসূচিতে বাধা প্রয়োগ করছে আওয়ামী লীগ ও তাদের পালিত পুলিশরা। আমি পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলবো, আপনারা বর্তমানে যে কর্মকান্ড করছেন তা দেশের জনবিরোধী কার্যক্রম এই কার্যক্রম থেকে বেড়িয়ে এসে আপনাদের জনগণের পাশে থাকার আহŸান জানাবো। আমরা দেশের কোন সহিংসতা করতে চাই না আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে রাজপথে থেকে আমাদের দাবি আদায় করবো ইনশাআল্লাহ। ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু যুগের চিন্তাকে বলেন, বর্তমান সরকার কারচুপির ভোটে নির্বাচিত সরকার। যাকে ঘিরে তারা এখন ভয়ে থাকে কখন জনগনের প্রতিহতের ডাক আসে আর তাদের পাতানো এই নীল নকশা ভেঙ্গে যাবে। সেই কারণে বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীরা জনগণের পক্ষে রাজপথে নামলে তারা ক্ষেপে উঠে। তারা চাচ্ছে বিএনপি যাতে আবারো সুসংগঠিত হয়ে রাজপথে নামতে না পারে। তা ছাড়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ট্রা তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন বিএনপিকে আগামী ১০ বছরের মধ্যে নিস্কিয় করে দেওয়া হবে। বিএনপি বলে কোন দল থাকবে না তারা এই দিক নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপির উপর ফুসে উঠছে এবং দেশের পুলিশ-প্রশাসনকে ও ফুঁসিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবিয়ে রাখা সম্ভব না। তারা রাজপথে থেকে সকল বাধা মোকাবেলা করে শান্তিপূর্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করবো। সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. এইচ আনোয়ার প্রধান বলেন, যাদের মধ্যে ফ্যাসিস্ট একটি মনোভাব চলে আসে তখন তারা দেশকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায় শুধু নিজেদের স্বার্থই বুঝে সেই হিসেবেই এই আওয়ামী লীগের সরকার একজন জালিয়াতি ভোটের সরকার তিনি এখন শুধু ভয় পায় তারা মনে করে যদি বিএনপির সাথে দেশের সকল জনগণ ফুঁসে যায়। তাহলে তারা আর তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এই সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নির্বাচনের পর ও জনগণের দাবি নিয়ে রাজপথে আসতে দিচ্ছে না। কিন্তু আমরা এই সরকারের সকল প্রকারের বাধাকে উপক্ষো করেই আমাদের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম পালন করে যাবো। মহানগর যুবদলের আহŸায়ক মনিরুল ইসলাম সজল বলেন, এই ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপিকে ভয় পায়, কারণ বর্তমানে তারা বুঝে গেছে বিএনপির সাথে এই দেশের সকল জনগণ আছে যে কারণে তারা বিএনপিকে দেশের জনগণের সাথে মিশতে দিচ্ছে না জনগনের দারি জন্য রাজপথে আমাদের নামলেই তারা তাদের পুলিশবাহিনী দ্বারা বাধা দিচ্ছে কিন্তু আমরা এখন আর কাউকে ভয় পাই না আমরা দেশের জনগণের শক্তি নিয়ে রাজপথে থাকবো। জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, এই সরকার যে একটি জালিয়াতি ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে এটা শুধু দেশের জনগণ নয় সারা বিশ্ব জানে। সেই লক্ষেই কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহিবিশ্বের অনেকেই তাদের সপ্তাহিক আলোচনায় এই সরকারের পাতানো ভোট যে গ্রহণযোগ্য না এটা তুলে ধরে। আর গনতন্ত্রের পক্ষে হয়ে সরকারকে থাকতে বলে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এই সরকার ভয়ে থাকে কখন দেশের জনগণ তাকে টেনে ছিঁচড়ে তার সিট থেকে নামায়। সেই লক্ষে তারা বিএনপিকে জনগণের সাথে থেকে জনগণের শক্তি যে না বারে সেই কারণেই বিএনপিকে রাজপথে দাঁড় হতে দিচ্ছে না। কিন্তু আমরা সকল বাধাকে উপক্ষো করেই রাজপথের আন্দোলন সক্রিয় থাকবো।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা