আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:১৯

মাদকের ডেঞ্জার জোন আলীগঞ্জ ও ফতুল্লা রেলষ্টেশন

ডান্ডিবার্তা | ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ফতুল্লা রেলস্টেশন ও আলীগঞ্জ এলাকার অন্যতম সমস্যা হলো মাদক। যার ভয়াল থাবা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেনা যুব সমাজও। এ অবস্থায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। মাদকের নিষ্ঠুর যাত্রায় কেউ লাখ লাখ টাকার ব্যবসা ধ্বংস করে সর্বশান্ত হয়ে জড়িয়েছেন ভয়ংকর অপরাধ চক্রে। অনেক পরিবার তছনছও হয়ে গেছে। এসব কারবারে সবচেয়ে বেশী আসক্তি দেখা গিয়েছে উঠতি বয়সের তরুন-তরুনীদের মাঝে। বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও গাজায় আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা। এদিকে মাদক পাচারকারীরা মাদক মওজুদের নিরাপদ স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছে ফতুল্লা রেলস্টেশন ও আলীগঞ্জ, পিলকুনী এলাকাগুলোকে। ফতুল্লা থেকে আলীগঞ্জ রেললাইনের পাশে বলেই মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদে এ অঞ্চলগুলোতে মাদক মওজুদ ও ক্রয় বিক্রয় করে আসছে। বিশেষ করে ফতুল্লা রেলস্টেশন প্লাটফর্মে, ফতুল্লা কাচাঁবাজার নাছির সেট এর বাড়ি, পিলকুনী ব্যাংক কলোনী, আলীগঞ্জ কামাড় পট্টি, আলীগঞ্জ রেল সিগনাল, আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড় এলাকায়সহ চলছে জমজমাট মাদক ব্যবসা। নির্বিকার রয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত মহল্লায় অভিনব কৌশলে সেবনকারীদের কাছে মরন নেশা হেরোইন, ইয়াবা ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পৌঁছে দিচ্ছে। তবে শহরের চানমারীর অন্যতম মাদক স্পটটি প্রশাসন কর্তৃক বন্ধ হওয়ার পর ফতুল্লা রেলষ্টেশন এলাকাটি বর্তমানে মাদকের অন্যতম ডেঞ্জার জোন হিসেবেও খ্যাতি পেয়েছে। একদিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদাসিনতা অন্যদিকে বিশেষ পেশার কর্তাদের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের সখ্যতা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এলাকার সন্ত্রাসীদের ছত্রছায়ায় মাদকের বড় বড় চালান এনে নিরাপদে সরবারহ হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ফতুল্লা ও আলীগঞ্জের আশপাশসহ এমন কোনো পাড়া-মহল্লা নেই যেখানে হেরোইন, গাাঁজা ও ইয়াবার কারবার না হচ্ছে। ফতুল্লা ও আলীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকার হেরোইন ব্যবসায়ী নাছির সেট, আল-আমীন, ব্যাংক কলোনী এলাকার শাকিল, রাজীব, সোর্স দ্বীন ইসলাম দ্বীলা, সোর্স মহসিন, আলীগঞ্জ এলাকার সোর্স শান্ত, সল্টু রাসেল, রাজীব, আরমান, ইব্রাহিম, খোকা, হাফিজ, কেপ জুয়েলসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যাবসায়ী ও সেলসম্যানরা অবাধে মাদক বিক্রি করছে যা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা হাত বাড়ালেই পাচ্ছে মরন নেশা ইয়াবা ও হেরোইন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রায় ২/৩ বছর পুর্বে ফতুল্লা থানা পুলিশ ঢাকডোল বাজিয়ে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠান করতো। সেখানে তারা বলে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষনা করেছে তাই আমরাও মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আসলে তাদের এ কথা গুলো কাগজে কলমে বাস্তবে তা নয়। তবে বর্তমানে একেবারেই হচ্ছেনা ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানটি। যার ফলে বিভিন্ন এলাকায় মাদকের প্রবনতা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে চুরি,ছিনতাই,ডাকাতিসহ নানাবিধ অপকর্ম। তবে মাঝে-মধ্যে কয়েকটি চালান র‌্যাবের হাতে ধরা পরলেও একেবারেই নির্বিকার ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। পুলিশের অভিযান শিথিল থাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা নির্ভয়ে মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে। তবে এলাকাগুলোতে মাদক ব্যবসায়ের নেপথ্যের লোকেরা ধরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যায়। মাদকের চালানগুলো গ্রহন করে ভাগবন্টন করে নেয় মাদক ব্যবসায়ীরা রাত সাড়ে সাতটা থেকে ৯টার মধ্যে প্রতিটা মহল্লায় মাদক পৌঁছে দেয়, কারণ এ সময় পুলিশ ডিউটি পরিবর্তন করে। এ সময় রাস্তায় পুলিশের কোনো গাড়ি থাকে না। তার কারণে নির্ভয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক পৌঁছে দিতে কোনো বাধা অতিক্রম করে না বলে জানায় এলাকাবাসী। এদিকে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হওয়ায় যুব সমাজের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। এতে করে সামাজিক অবক্ষয় ঘটছে ব্যাপকভাবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোক দেখানো অভিযানে কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে পুরোদমে আবার শুরু হচ্ছে মাদক পাচার ও বিক্রি। ইদানীং হেরোইন ও ইয়াবা ব্যবসায় কিশোর বয়সের ছেলে ও নারীরা জড়িয়ে পড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফলে সমাজে ধীরে ধীরে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। অনেকেই বলছেন, যে কিশোর গ্যাংয়ের উদ্ভব হয়েছে প্রতিটি এলাকায়- তার নেপথ্যের প্রধান কারণই হল মাদকের সহজলভ্যতা। চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা রাজনৈতিক শেল্টারে কিশোরদের দিয়ে মাদক ব্যবসা করাচ্ছে বলেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে কিশোর গ্যাংয়ের লড়াই হচ্ছে, খুনের মতো ঘটনা ঘটছে। এদিকে মাদক ও কিশোগ্যাং এর বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে নিয়মিত অভিযান চালালেও রহস্যজনক কারনে অধরা থেকে যাচ্ছে মূল হোতারা। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ বলছে, মাদক ও কিশোরগ্যাং দমনে আমারা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবেনা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা