আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:১২

ডিআইটি মাঠে দোকান বসিয়ে কোটি টাকার চাঁদাবাজি!

ডান্ডিবার্তা | ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ৯:১৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ফতুল্লায় ডিআইটি মাঠ দখলের উৎসবে মেতেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। বিশাল এই মাঠ পুরো ফতুল্লায় আলোচিত বিভিন্ন কারণে। এই মাঠে প্রতি বছর কোরবানির পশুর হাট, বৈশাখী মেলার আসর বসে। এছাড়াও সপ্তাহের মঙ্গলবারে হাট বসে আসছে বহু বছর জুড়ে। নির্বাচনী জনসভাতেও ডিআইটি মাঠ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অন্যতম পছন্দের স্থান। কিন্তু খেলার মাঠ হিসেবে যার পরিচিতি সেই খেলাটাই মাঠ থেকে এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। তার বদলে জায়গা হয়েছে সপ্তাহজুড়ে বসা অবৈধ দোকান ও বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী রাখার স্থান। আর এসকল দোকান থেকে টাকা উত্তোলন করেন জাফর ইসলাম নাম,মো.লিয়াকত ও মাসুদ ওরফে কেনু মাসুদ নামে ৩ ব্যক্তি। সরকার দলীয় স্থানীয় কয়েকজন নেতার ছত্রছায়ায় অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে টাকা তুলেন জাফরসহ অন্যান্যরা। অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে উঠানো টাকার ভাগও যায় ঐসকল নেতার পকেটে। ভাবতেই অবাক লাগে তাইনা, এসকল নেতারা-ই স্টেজে উঠে মাউথ অর্গান মুখে নিয়ে সমাজ ও পরিবেশ সংস্করণে ভাষণ দেন। আবার তাদের নেতৃত্বেই অবৈধভাবে দোকান বসানো হয়। জাফর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পূর্ব নাম ছিল ঢাকা ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট যা সংক্ষেপে ডিআইটি হিসেবে পরিচিত ছিল। ফতুল্লার প্রবীণ বাসিন্দাদের মতে সেই সংস্থার তরফ থেকেই এই মাঠটি কোন একটি প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে স্বাধীনতার পর মাঠের নিয়ন্ত্রণ জেলা প্রশাসন নিয়ে নেয়। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের অধীনে এই মাঠের পাশে অথ্যাৎ ফতুল্লা লঞ্চঘাট সংলগ্ন মাঠটি পশু হাটের জন্য ইজারা দেয়া হয় ১ বছরের জন্য। গত বছরে প্রায় সাড়ে ৬২ লাখ টাকায় উক্ত পশুর হাটটি ইজারা নেয় থানা আওয়ামীলীগের সভাপতির ছেলে নামজুল হাসান সাজন। কিন্তু পশুহাটের জন্য নেয়া স্থানটুকু ছাড়াও পুরো বছরের জন্য দখল করে নিচ্ছে ক্ষমতাসীনদের লোকজন আর এ মাঠটিতে বছর ব্যাপী চালাচ্ছে প্রতিদিন চাঁদা ভিত্তিকভাবে দোকান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, খেলার মাঠটি দখলে নিয়ে কিছু নামধারী নেতারা অর্থ উপার্জনে উঠেপড়ে লেগেছেন এ মাঠটিকে পুজি করে। সপ্তাহে মঙ্গলবার হাটবার থাকলে শুক্রবারেও প্রচুর দোকানে ভরপুর থাকে ফতুল্লা ডিআইটি মাঠটি। মঙ্গলবার এবং শুক্রবার এ দুইদিনে সেখান থেকে চাঁদা উঠে প্রায় সোয়া দুইলাখ টাকা। আর বাকী পাঁচদিন প্রায় দুই শতাধিক দোকান থেকে ১০০ টাকা (প্রতি দোকান) হারে চাঁদা তুলছেন ঐ তিন গুনধর চাঁদাবাজ। বার্ষিক হিসেবে প্রায় দুই কোটি টাকার উপরে চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে এ মাঠে দোকান বসিয়ে। সরেজমিনে ডিআইটি মাঠে প্রবেশ করতেই দেখা মেলে মাঠের পূর্ব দিকে ৫/৬ জন কিশোর ক্রিকেট ব্যাট বল নিয়ে খেলছে। মাঠের পশ্চিম পাশের অর্ধেকের বেশী স্থান হকারদের দখলে রয়েছে। সপ্তাহে মঙ্গলবার হাট বসানোর অনুমতি থাকলেও শুক্রবার তাদের রমরমা ব্যবসা চলছে। হাট চলছে কিনা জানতে চাইলে খেলার মাঠে থাকা এক কিশোর বলে উঠে, ‘এরা প্রতিদিনই বসে। আর পশুপাখি পাইবেন মঙ্গলবারে। আপনে ৩/৪ দিন পরে আইসেন। ঐদিন হাট বসব’। মাঠে অনেকগুলো দোকানের অস্তিত্ব মিললো। এর কোনটিরই শুক্রবার ব্যবসা করার কথা নয়। নিজেদের হকার বলে পরিচয় দিলেও মাঠে বাঁশের খুঁটি গেড়ে মোটামুটি স্থায়ী করেছেন নিজেদের দোকান। দোকানিদের কাছে জানতে চাওয়া হলো কে দিয়েছে এভাবে ব্যবসা করার অনুমতি? জবাবে একজন কাপড় বিক্রেতা বলেন, অনুমতি নিয়া আমরা বসছি। ডেইলি টাকা দেয়া লাগে। হাটবারেও আসি, অন্যান্য দিনেও আসি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ ক্রীড়াপ্রেমী জানায়, মাঠে এদের (দোকান) জন্য খেলা যায়না। বল উড়ে এসে গায়ে লাগলে চিল্লাচিল্লি করে। খেলতে গেলে তো বল লাগবেই। এরা খেলতে দেয়না ঠিকমত। আর বাঁশের গর্তে পা মচকে যায়। আমরা বাধ্য হইয়া নদীর ঐপাড়ে বসুন্ধরায় গিয়া খেলি। তবে ফতুল্লা ডিআইটি মাঠে অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে যারা নিয়মিত চাঁদা তুলছে তাদের দাবী যে তারা এ মাঠকে বছরব্যাপী ইজারা এনেছেন তা বাস্তবে সম্পুর্ন অবৈধ। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ দেদারুল ইসলাম মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তো এখানে নতুন এসেছি। তাছাড়া কোন খেলার মাঠকে হাট-বাজারের জন্য ইজারা দেয়া হয়না। আমি বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেবো। স্থানীয়দের দাবী,ফতুল্লা ডিআইটি মাঠটি অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করে এখানে নিয়মিতভাবে খেলাধুলার ব্যবস্থা করে ফতুল্লাসহ আশপাশ এলাকার সকল বয়সী মানুষকে মাদকের কড়ালগ্রাস থেকে রক্ষায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা