আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ১১:৪৭

পোষাক কারখানায় উত্তেজনা নয়া ষড়যন্ত্র!

ডান্ডিবার্তা | ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট ফতুল্লার বিসিকে শ্রমিকদের দমাতে কতিপয় মালিক পক্ষ সন্ত্রাসীদের ভাড়া করার খবর পাওয়া গেছে। শ্রমিকরা তাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করলে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের উপর হামলা করে যাতে দমানো যায়। এমন ঘটনা ঘটেছে ফতুল্লার কাশীপুরে ক্রোনি এ্যাপারেলস গ্রæপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড কারখানায়। গত বৃহস্পতিবার ফতুল্লা বিসিক শিল্পাঞ্চলে বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি ঘোষণা করে বিক্ষোভ করছেন ক্রোনী গ্রæপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড কারখানার হাজারো শ্রমিক। সকাল আটটা থেকে কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। এ সময় যুবলীগের ক্যাডার সোহেল তার বাহিনী নিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিকদের ধাওয়া থেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও উদ্ধার হয় বিপুল পরিমান লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র। যা নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, সকালে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় স্থানীয় যুবলীগ নেতা বিসিক সোহেল ও তার বাহিনী তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া দিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেন। এ সময় কারখানার ভেতরের একটি স্থান থেকে কয়েকটি দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা উদ্ধারের করে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের দমন করতে এসব রাতেই কারখানার ভেতর ঢোকানো হয়েছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। বিক্ষুব্দ কারখানার শ্রমিকরা বলেন, সকাল থেকে কারখানায় শিল্প পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত থাকা অবস্থায় বহিরাগতরা কারখানায় প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করে। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। উদ্ধার করা অস্ত্রগুলো পুলিশের কাছে জমা দিতে অসম্মতি জানিয়ে তারা বলেন, এগুলো তারা র‌্যাাবের কাছে জমা দিবেন। কারখানাটির নিটিং সেকশনের শ্রমিক জামাল হোসেন বলেন, গত ছয় মাস যাবৎ বেতন নিয়ে সমস্যা করছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। নানা অজুহাতে কিস্তিতে বেতন পরিশোধ করছে। বিক্ষোভ ছাড়া বেতন পরিশোধ করছে না। ‘নিয়ম অনুযায়ী ২৫ তারিখে মাস শেষ হয়। পরবর্তী মাসের ১ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ করার কথা। কিন্তু আজ ফেব্রæয়ারি মাসের ৮ তারিখেও জানুয়ারির বেতন পাইনি। অনেকে ডিসেম্বরেরও আংশিক বেতন পান। অবন্তী গার্মেন্টসের জেনারেল ম্যানেজার ইনতিসার আহমেদ জানান, এক মাসের বেতন বকেয়া আছে সেটা সোমবার পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এটি একদল শ্রমিক মানতে নারাজ। এ নিয়ে বুধবার কথা হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঐ একদল শ্রমিক বকেয়া বেতন পরিশোধ না করলে কাজ বন্ধ করে দিতে চায়। এদিকে কেহ কেহ মনে করছেন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কিছু পোষাক কারখানা মালিক শ্রমিকদের দমনের নাশে নতুন ষড়যন্ত্র করছে। আর সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে হঠাৎ এই ক্রোনি এ্যাপারেলসে গ্যাস বিস্ফোরণে ১৪ জন দগ্ধ হয়। আর ঘটনায় শ্রম মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, তিতাস কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও কলকারখানা অধিদফতরের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই তদন্ত কমিটি। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেট মৌসুমী বাইন হীরা শুক্রবার দুপুরে তদন্ত কমিটির সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিতাসের নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক বিপনন বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ, ফায়ার সার্ভিসের জেলা উপসহকারি পরিচালক ফখর উদ্দিন আহমেদ, তিতাসের ফতুল্লা জোনের ব্যবস্থাপক মো. মুশিউর রহমান ও জেলা কলকারখানা অধিদফতরের পরিদর্শকসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমী বাইন হীরা জানান, দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটা শ্রমিকদের দমন করতে নয়া ষড়ন্ত্র কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। তিতাসের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা গ্যাস বিল বকেয়ার কারণে গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও একদিন পরেই সেখানে অবৈধভাবে সংযোগ নেয়া হয়েছে। বিচ্ছিন্নকৃত মূল বিতরণ সংযোগটির ভাল্বের দুই পাশে ওয়েল্ডিং ঝালাই দিয়ে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর তিতাসের ওই টীম গ্যাস সরববাহের চাবি বন্ধ করে দিয়ে যায়। তিতাস কর্তৃপক্ষের ধারণা, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওয়েল্ডিং করে সেই সংযোগ স্থাপনের সময় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এদিকে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই নারায়ণগঞ্জে ক্রোনী গ্রæপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি দিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে বিকেলে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ‘বেআইনিভাবে শ্রমিক ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির’ কারণ দেখিয়ে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এএইচ আসলাম সানির মালিকানাধীন কারখানাটির ডাইং ও নিটিংসহ বিভিন্ন সেকশনে অন্তত ৭ হাজার শ্রমিক কর্মরত বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিদর্শক (ইনটেলিজেন্স) সেলিম বাদশা। কারখানা বন্ধের নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৭ ও ৮ ফেব্রæয়ারি কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে ‘বে-আইনীভাবে ধর্মঘট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে’ কর্মবিরতি পালন করছে। কর্তৃপক্ষ বারবার তাদেরকে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিকদের এ ধরনের কর্মকান্ড বে-আইনী ধর্মঘটের শামিল বিধায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ১৩(১) ধারা’ অনুযায়ী কারখানার সকল শাখা/বিভাগ বন্ধ ঘোষণা হলো। কারখানার উৎপাদনের কর্মপরিবেশ স্বাভাবিক ও নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত কারখানাটি বন্ধ থাকিবে এবং একই সঙ্গে জানানো যাইতেছে কর্মপরিবেশ স্বাভাবিক ও নিরাপদ হওয়া মাত্র পরবর্তী নোটিশের মাধ্যমে অতি দ্রæত কারখানা চালু করার তারিখ জানানো হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা