আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:৪৭

ফের দুই বাহিনীর তান্ডবে অস্থির রূপগঞ্জ

ডান্ডিবার্তা | ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নাওড়া গ্রামবাসীর ওপর চার দফা হামলা চালিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রæপ রফিক বাহিনী। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ছররা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ২২ জন। গত শনিবার সন্ধ্যায় রফিক বাহিনীর হামলায় শিশুসহ আরও ছয়জন ছররা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২২ জন। স্থানীয়রা জানান, রফিক বাহিনীর প্রধান রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই মিজানুর রহমানের নেতৃত্ব শনিবার জসু, আলেক, শাহ আলম, এমদাদুল, রহমান, নাজমুলসহ দেড় শতাধিক সন্ত্রাসী নাওড়া গ্রামে হামলা করেন। এ সময় তারা কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোতালেব ভূঁইয়ার বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে হামলা চালান। তাদের হাতে দেশি-বিদেশি পিস্তল, রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ ধারালো অস্ত্র ছিল। স্থানীয়রা আরও জানান, এদিনের হামলার ঘটনায় ছয়জন ছররা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে আছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সদস্য আবুল পাশার ছেলে জাকির হোসেন জাগু, মৃত শাহাবুদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন, মনির হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আল-আমিন, নজরুল ইসলামের মেয়ে মারুফা আক্তার, মোজাম্মেলের ১১ বছর বয়সী শিশু মোহাম্মদ জুম্মন হোসেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) পাঠানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আহত জাকির হোসেন জাগুর বাবা আবুল পাশা বলেন, ‘রফিক বাহিনীর প্রধান রফিকের ছোট ভাই মিজানের নেতৃত্বে গত শনিবার সন্ধ্যায় দেড়শতাধিক সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িঘরে হামলা করেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ছেলেকে তারা গুলি করেন। সে আহত হয়ে পড়লে তার মাথায় আঘাত করা হয়। কেন বারবার আপনাদের ওপর হামলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের জমি দখল করতে সন্ত্রাসীরা একজোট হয়েছেন। তারা আমাদের এলাকা ছাড়া করে জমির দখল নিতে চায়। অতর্কিত হামলায় ছররা গুলিবিদ্ধ শিশু মোহাম্মদ জুম্মন হোসেনের বাবা মোজাম্মেল আর্তনাদ করতে করতে বলেন, ‘আমার ১১ বছর বয়সী ছেলেটার কী দোষ? হঠাৎ করে রফিকের সন্ত্রাসীরা বাড়িতে ঢুকে গুলি চালায়। আমার ছেলের পুরো শরীর রক্তে ভিজে গেছে। তিনি বলেন, ‘রফিক জমি দখল করতে গত ১০-১২ দিনে আমাদের গ্রামবাসীর ওপর চার দফায় হামলা করেছেন। আমাদের অনেকে এখনও আহত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন আবারও হামলা করেছে। এই গ্রামের কাউকে বাঁচতে দেবেন না তিনি। ছররা গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে রফিক বাহিনীর সদস্যরা আমাদের ওপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার করছে। স¤প্রতি তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নাওড়া মধ্যপাড়ার মোতালেব ভূঁইয়া ও প্রধানের বাড়ির কাউকে একা পেলেই কারণে অকারণে মারধর করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে সন্ত্রাসীরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার পা অবশ হয়ে যায়। দৌড়ও দিতে পারছিলাম না। পরে দেখি পা দিয়ে রক্ত পড়ছে। কায়েতপাড়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘পূর্বাচলের কাছে হওয়ায় কায়েতপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমি দখল করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ইউনিয়নটির সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। গত শুক্রবার কায়েতপাড়ায় উপস্থিত হয়ে প্রকাশ্যে ভুক্তভোগীদের মেরে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় জনসম্মুখে তাদের বাড়িঘর ভেঙে সব জায়গাজমি দখলে নেওয়ার ঘোষণা দেন রফিক। তিনি বলেন, ‘রফিক বাহিনীর ভয়ে অনেক পরিবার এখন গ্রামছাড়া। গত তিনবারের হামলার ঘটনায় আহত অনেকেই এখনও গ্রামে ফিরে আসেননি। তাই তারা কয়েকদিন পরপর হামলা করছেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়ে জরুরি বিভাগে এসেছেন। বর্তমানে জরুরি বিভাগের অবজারভেশনে তাদের চিকিৎসা চলছে। দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা–পুলিশকে জানিয়েছি। উল্লেখ্য, এর আগে ২৯ জানুয়ারি দুই দফায় রফিক বাহিনীর হামলায় নাওড়া গ্রামের আটজন ছররা গুলিবিদ্ধ হন। ওই সময় নারী-শিশুসহ ১৩ জন আহত হয়েছিলেন। এদিকে গত ৫ ফেব্রæয়ারি আবারও নাওড়া গ্রামে হামলা করে রফিক বাহিনী। ওই দিন আটজন ছররা গুলিবিদ্ধসহ ১৬ জন আহত হন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা