আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:০৩

না’গঞ্জকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে নামধারী হকার নেতারা

ডান্ডিবার্তা | ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ৩:১৩ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট গত ৪ ফেব্রæয়ারি থেকে নারায়ণগঞ্জের ফুটপাত দখলমুক্ত কার্যক্রম শুরু করে প্রশাসন। যার কারণে জনসাধারনের চলাচলের ফুটপাতসহ বিভিন্ন সড়ক অবৈধ ভাবে দখল করে রাখা হকাররা এখন রাস্তা বা ফুটপাত দখলের সুযোগ পাচ্ছে না। নগরের ২০ লাখ মানুষ এখন চলাচলে স্বস্তি পাচ্ছে। কিন্তু আবারো সেই ফুটপাত বা সড়ক দখলের পায়তারা করছে নামধারী হকার নেতারা। যারা নিয়মিত চাঁদার ভাগ পেত। তাই এখন মায়া কান্না শুরু করেছে। তারা পুনরায় চাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের ২০ লাখ মানুষকে পুনরায় জিম্মি করতে। এই বেপরোয়া হকারদের সাথে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারিতে ফুটপাতে হকার বসানো এবং না বসানো নিয়ে নারায়ণগঞ্জে সর্বোচ্চ উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর উপর সরাসরি হামলা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ছিল। তারপর থেকে হকার, পুলিশ এবং জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আর কোন সমঝোতা বা কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। একদিকে নিজেদের ইচ্ছে মতো ফুটপাত দখলে ব্যস্ত ছিল হকাররা। অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসনও তাদের মনমতো করে মাঝে মাঝে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতেন। অর্থাৎ এই দুই পক্ষের এই দুই কর্ম ছিল অনেকটা রুটিন কর্মের মতো। এ সময় এখানকার জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন অনেকটা নীরব ভূমিকায়। আর এই তিনপক্ষের বাইরের লোক অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জবাসী ছিলেন একদিকে দর্শকের ভূমিকায় অন্যদিকে ঘটনার শিকার। তাদের এই ভোগান্তির নিস্তারে কোন এক অলৌকিক ঘটনার অপেক্ষায় ছিলেন তারা। নারায়ণগঞ্জবাসীর মতে, সেই অলৌকিক ঘটনা হলো নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী দুই এমপির সাথে সিটি মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর এই বিষয়টি নিয়ে এক টেবিলে বসা। শেষ পর্যন্ত সেটাও হলো। প্রশাসনকে সাথে নিয়ে এক টেবিলে বসলেন নারায়ণগঞ্জের এই প্রভাবশালী তিন ব্যক্তি। এর আগে নারায়ণগঞ্জবাসী ও সচেতন মহলের একটি বড় অংশই মনে করতেন এই তিন প্রভাবশালী সমঝোতার মাধ্যমে একমত হয়ে একটি ঘোষণা দিতে পারলে সেটা বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যাবে। শেষে সেই ঘোষণাও এলো। আশান্বিত হলো নারায়ণগঞ্জবাসী, ফল পেতে শুরু করলেন পরের দিন থেকেই। তবে হকাররাও ঘোষণা দিলেন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যা লাগে তা-ই করবে তারা। আবারও শুরু হতে যাচ্ছে আন্দোলনের পরিবেশ। এমপি, মেয়র ও প্রশাসন বিচক্ষণতা ও দৃঢ়তার সাথে কোন সিদ্ধান্তে আসতে না পারলে আবারও একটি ১৬ জানুয়ারি পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। বন্দরের ইউসুফ বলেন, হকাররা যেভাবে ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে তা খুবই ভয়াবহ। কারও কোন ইমার্জেন্সী কারণে দ্রæত হেটে একশত ফুট জায়গা পার হওয়ারও উপক্রম নেই। তারা পুরো ফুটপাত নিজেদের দখলে নিয়ে ব্যবসা করে। কেউ তাদের একটু সরে দাঁড়াতে বললে তাদের সাথে অশোভন আচরণ করে। এমন একটা ব্যবহার করে যে, এই ফুটপাতে যেন তাদের ক্রেতা ছাড়া অন্যকোন সাধারণ মানুষের চলাচলের কোন অধিকারই নেই। তাছাড়া দশ বছর আগে এখানে হকারের সংখ্যা যা ছিল এখন তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। এখন তাদের পূণর্বাসন করার পর ভবিষ্যতে এখানে আবার নতুন কোন হকার এসে বসবে না এর গ্যারান্টি কে দিবে? আসলে এই পদ্ধতিতে ব্যবসা করাটাকে তারা একটি সহজ উপায় বলে মনে করে। তাই যতই তাদের জায়গা করে দেন না কেন কোন লাভ হবে না। যতদিন প্রশাসনের চাপ থাকবে ততদিন হয়তো ঠিক থাকবে, চাপ শেষ তো তাদের নিয়ম নীতিও শেষ। চাষাঢ়ার শহীদ মিনারে হকারদের অবস্থান কর্মসূচীর সময় শহীদ মিনারের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আবুল হোসেন বলেন, গত ৩ ফেব্রæয়ারি মেয়র এমপি এবং প্রশাসনের গোলটেবিল বৈঠকের পর আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী অনেকটাই আশান্বিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম অনেক দিন পর নারায়ণগঞ্জবাসীর একটি স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী চাই শহরের অন্যতম ব্যস্ত এই সড়কটি দিয়ে নির্বিঘেœ চলাচল করতে। এটা আমাদের অধিকার। হকাররা মায়া কান্না করে আমাদের নারায়ণগঞ্জবাসীকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে, সেটা হতে পারে না। এরই মধ্যে চাষাঢ়া শহীদ মিনারে উচ্ছেদের প্রতিবাদে ও পুনর্বাসনের দাবিতে গত ১২ ফেব্রæয়ারি সমাবেশ করেন হকাররা। এই সময় তারা জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্মারকলিপিও পেশ করেন। এর আগে গত ১০ ফেব্রæয়ারি চাষাঢ়া শহীদ মিনারে হকারদের এক অবস্থান কর্মসূচীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদের আহŸায়ক আসাদুল ইসলাম আসাদ বলেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ৩ ফেব্রæয়ারি প্রেস ক্লাবের গোল টেবিল বৈঠকে মেয়র আইভী ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের কথায় আমরা হতাশ হলাম। সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বক্তব্য দেওয়ার আগে আমরা ভেবেছিলাম, ওনি হয়তো আমাদের জন্য কিছু করবেন। কিন্তু উনার কথা শুনে আরও হতাশ হয়ে গেলাম। আমি জনপ্রতিনিধিদের বলতে চাই, আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। পুনর্বাসনের আগ পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট সময় বসতে দিন। যদি পুনবার্সন করতে না ডাকেন, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যা লাগে তাই করবো। যে পর্যন্ত আমাদের দাবি পুরণ না হয় আমরা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব। এর আগে গত ৩ ফেব্রæয়ারি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে একসাথে বসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, সদর-বন্দর আসনের এমপি সেলিম ওসমান ও ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের এমপি শামীম ওসমান। সেই বৈঠকে তারা তিনজনই শহরের প্রধান দুই সমস্যা হিসেবে যানজট ও ফুটপাতে হকার বসার বিষয়ে সমাধান করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দেন। এরপরের দিন শহরের চেহারাই বদলে যায়। যেন আচমকাই গায়েব হয়ে যায় নারায়ণগঞ্জবাসীর এই চরম ভোগান্তির সমস্যা। তবে এরপর থেকে হকারদের আবারও ফুটপাত দখলের চেষ্টা চলে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা