আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ১১:৩৪

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে জটিল সমীকরণ

ডান্ডিবার্তা | ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট উপজেলা পরিষদে উন্মুক্ত নির্বাচন ঘিরে জটিল সমীকরণে তৃণমূল আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয়ভাবে এ নির্বাচনে কাউকে সমর্থন দিচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। তবে স্থানীয়ভাবে অনেক জায়গায় জেলা বা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। আবার জাতীয় নির্বাচনের পরেই অনুষ্ঠেয় এই ভোটে বড় প্রভাব থাকছে স্থানীয় সংসদ-সদস্যদের। বেশিরভাগ প্রার্থীই চাইছেন এমপির সমর্থন। অনেক জায়গায় এমপিরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের মাঠেও নামিয়েছেন। আছে উলটো চিত্রও। কিছু কিছু জায়গায় মাঠে আছেন এমপিবিরোধী প্রার্থীরাও। স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্যদের আসনের উপজেলায়ও দেখা দিচ্ছে নানা জটিলতা। আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, তারা চান সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ফলে সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবতার নিরিখে শিগগিরই দেওয়া হবে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগই যেখানে কাউকে সমর্থন দিচ্ছে না, সেখানে আর কারও বা কোনো শাখার কোনো এখতিয়ারই নেই কাউকে সমর্থন দেওয়ার। এটা এখতিয়ারবহির্ভূত। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই নির্দেশনা দেওয়া হবে। এমপিদের প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে নির্দেশনা, সেটি ইতোমধ্যে আমাদের নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দিয়েছেন। তার এই বার্তাটি আমাদের এমপি সাহেবদের বুঝতে হবে। কাউকে সমর্থন নয়, তাদের জন্য শ্রেয় কাজ হবে-সবাইকে নিয়ে সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচনে এমপি বা ব্যক্তির প্রভাব যেন না থাকে সেজন্য জেলা আওয়ামী লীগ আলোচনা করে সমন্বয় ও সমঝোতা করতে পারে। কারণ যেখানে কাউকে এককভাবে দায়িত্ব তো দেওয়া হয়নি। ফলে এককভাবে প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, এ নির্বাচনে জনপ্রিয়রাই নির্বাচিত হয়ে আসবেন। আমাদের নেতাকর্মীদের মাঝে নৌকা এবং নৌকার বিপক্ষের প্রতিযোগিতা বন্ধেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে দলের বিভেদ এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে অনৈক্য কম হবে বলেও মনে করেন তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দিলেও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ভোটের মাঠে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন দলের নেতাকর্মীরা। স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় দলের অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব, কোন্দল, বিভেদ, বিভাজন। তৃণমূলের এমন সমস্যার সমাধান না হতেই আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দিয়ে উন্মুক্ত নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। ফলে আগ্রহী প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক ছাড়াই অংশ নিতে হচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু মাঠের পরিস্থিতি তেমনটা বলছে না। বরং নির্বাচনকে ঘিরে আবারও মুখোমুখি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন গ্রæপ এবং উপ-গ্রæপ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই নির্বাচন ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে তৃণমূলের রাজনীতি। মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। উঠান বৈঠক, কর্মিসভা, মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় এমপির সুদৃষ্টি লাভের দিকে। উন্মুক্ত নির্বাচনে এমপিদের সমর্থন পেলেই নির্বাচিত হওয়া সহজ হবে-এমন ধারণা তাদের। অন্যদিকে বসে নেই এমপি বিরোধী গ্রæপ। তারাও নিজেদের প্রার্থীদের মাঠে নামিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই আবার দৃশ্যপটে সামনে এসেছে। এমন প্রেক্ষাপটে উন্মুক্ত নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছে না ক্ষমতাসীনরাও। দলের হাইকমান্ডরে পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বলা হয়েছে-নির্বাচনে কোনো ধরনের সংঘাত তারা চান না। কেউ বিশৃঙ্খলা করলেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন এমন বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, সব শ্রেণি-পেশার মানুষদের নির্বাচনমুখী করতে দলীয় প্রতীক না রাখা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। নির্বাচনে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ সরাসরি কারও পক্ষ নেবে না। যাদের জনপ্রিয়তা আছে তারাই ভোটের মাঠে বিজয় অর্জন করবে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে জেলা বা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একক প্রার্থী দেওয়া নিয়েও রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এর পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে দলটির নেতাদের। ফলে এটা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ার আগেই সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাও চান তারা। সারা দেশে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে প্রায় সাড়ে চারশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার উপযুক্ত। এবার চার ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলায় ভোট হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা