আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:০৪

অযতœ-অবহেলায় রয়েছে কাঁচপুরের শহীদ মিনার

ডান্ডিবার্তা | ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
বিশ্বব্যাপী গভীর আন্তুরিক শ্রদ্ধার সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রæয়ারিতে পুলিশের গুলিতে রফিক, শফিক, জব্বার, বরকতসহ আরোও অসংখ্য মেধাবী ছাত্র ও সাধারণ জনতা শহীদ হয়েছিল। মাতৃভাষার জন্যে এবং দেশের জন্যে জীবন দেয়া শহীদদের স্মরণ রাখতে ও সম্মান জানাতে নির্মাণ করা হয় শহীদ মিনার। শহীদ মিনারের সামান্য পরিমাণ অবেহেলা ও অবজ্ঞা হলে দাগ কাটে খাঁটি বাঙালির মনে। যদি শহীদ মিনারেই নোংরা এবং ময়লা আবর্জনায় ঘেড়া থাকে তাহলে মনে প্রশ্ন জাগে আমরা শহীদদের কতোটুকু সম্মান দেখাত পারছি। গতকাল রবিবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ থানার সংলগ্নে শহীদ মিনারে সরেজমিনে দেখা গেছে এমন চিত্র। ব্যস্ত নগরীতে নীরব দাড়িয়ে আছে অবহেলিত এই শহীদ মিনারটি। খাবারের অবশিষ্ট অংশ, প্যাকেটসহ নানা ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে শহীদ মিনারের চার পাশে। শুধু বছরের বিশেষ দিনগুলো বাদে শহীদের স্মরণে এই মিনার ময়লার ভাগাড়ের রূপ নেয়। এরকম চিত্র দেখে আবেগ-আপ্লæত হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা। জানা যায়, কাঁচপুরে কোনো শহীদ মিনার ছিল না। নব্বই শতকের শুরুতে স্থানীয় ছাত্ররা ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহীদ মিনারটি নির্মান করেছে। এরপর থেকে প্রতি বছরই ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এ গভীর শ্রদ্ধার দিনটি পালন করা হয় ও ভাষা শহীদদের স্মরনে পুষ্প অর্পণ করা হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, শহীদ মিনারের চারদিকে নামে মাত্র বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে। আশেপাশের দোকানগুলো থেকেফেলা খাবারে পরিত্যক্ত অংশ, প্লাস্টিক, পলিথিন, বোতলসহ নানা অব্যবহিত বস্তু বেড়ার ভেতরে জমে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা জানায়, রাজনৈতিক জটিলতার কারনে শহীদ মিনারটি পরিচর্যা করা হয় না। শহীদ মিনারটি দোকানপাট ও অটোস্ট্যান্ডের দখলে পড়ে আছে। শুধু ভাষার মাস আসলেই স্মৃতির ফলকটির কথা সকলের মনে পড়ে। তাছাড়া বেশিরভাগ সময়ই যেন শহীদ মিনারটি অবহেলিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এ বিষয়টি আমাদেরকে ব্যথিত করে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তৈরি করা হয়েছে শহীদ মিনার। মায়ের ভাষার প্রতি ভালোবাসার এই নিদর্শন যখন অবহেলার হয়, খাঁটি বাঙালির মনে দাগ কাটে। লুণ্ঠিত হয় স্বাধীনতার চেতনা। মোশারফ হোসেন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ামিন হোসেন বলেন, শহীদ মিনার বাঙালি
জাতির ইতিহাসের সাথে জড়িত একটি ফলক। এ ফলকটি যেন কোনোভাবেই অবমাননা না হয়, সেদিকটি সকলের খেয়াল রাখতে হবে। বিষয়টি সরকারের গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। আমরা প্রতিবছর যেভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ দিবস পালন করি ঠিক সেভাবেই সম্মানের সহিত শহীদ মিনারের পরিচর্যা করা উচিত। কাঁচপুরের সোনাপুর এলাকার বাসিন্দা আসিফ হাসান বলেন, রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় শহীদ মিনারটি প্রায় চোখে পড়ে। বিশেষ করে খারাপ লাগে তখন, যখন দেখি শহীদ মিনারটি আশেপাশে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকে। কাঁচপুর বাজারের ব্যবসায়ী নিশা আহমেদ বলেন, প্রায় সময় দেখি বিভিন্ন যানবাহন এখানে পার্কিং করে রাখে। এখানে যে একটি শহীদ মিনার আছে তা বুঝার কোন উপায় নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মোঃ সফিউল্লাহ বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রæয়ারিতে ভাষা শহীদদের রক্তের বিনিময়ে
অর্জিত হয়েছে মাতৃভাষা বাংলা। শহীদদের স্মৃতির ফলকের প্রতি অবমাননা কারোই কাম্য নয়। শহীদ মিনার প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি হাজ্বী সেলিম হক বলেন, ছাত্র অবস্থায় আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়েছিল। শহীদ মিনারটির সংস্কার কাজ করে, শীঘ্রই উঁচু করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। শহীদ মিনারের আশেপাশের দোকানদারদের, এখানে ময়লা ফেলতে অনেকবার মানা করেছি। তারা আমাদের কথা শোনে না। সোনারগাঁ উপজেলা কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, আপনারা আমাদের অবগত করেছেন। বিষয়টি আমরা দেখব। এ বিষয়ে
জানার জন্যে কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোশাররফ
হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার
চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।



Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা