আনোয়ার-খোকনকে তৃনমূলের বয়কট
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে নাসিকের ১৯ থেকে ২৭নং ওয়ার্ডের তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। সম্প্রতি মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা ১৭টি ওয়ার্ড কমিটি ঘোসণা দেয়ার পর থেকে তৃনমূল নেতাকর্মীরা ফুসে উঠতে শুরু করে। নেতাকর্মীদের দাবি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের আখের গুছাতে অদক্ষদের দিয়ে টাকার বিনিময়ে নতুন কমিটি দিয়েছে। নেতাকর্মীরা মনে করেন আওয়ামীলীগকে শক্তিশালীর করার চেয়ে তারা দুই নেতা আওয়ামীলীগকে দুর্বল করার জন্য ষড়যন্ত্র করে এ ধরনের ওয়ান ম্যান শো কমিটি দিয়েছে। এ ক্ষোভে নেতাকর্মীরা দুই নেতাকে বন্দরে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেন। তৃনমূল নেতাদের দাবি কাউন্সিলেন মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের ভোটে যে নেতা হবেন আমরা তাকে মেনে নেব। অন্যথায় আমরা এধরনের পকেট কমিটি আমরা মানি না। এ সকল পকেট কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। নয়তো এই দুই নেতার রাজনীতি এখানেই শেষ। আমরা বিভিন্ন সময় এ নেতাদের পাশে ছিলাম, এখন আমরা তার পিছনে রাজনীতি বয়কট করলাম। মহানগর আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ূন কবির মৃধা বলেন, ১৯ থেকে ২৭নং ওয়ার্ড পর্যন্ত কারা দলের জন্য নিবেদিত তা আমি জানি কাদের দায়িত্ব দিলে দল শক্তিশালী হবে। যাদের দলের দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের দ্বারা দল আরো দুর্বল হয়েছে। তাই অচিরেই এ অদক্ষদের দিয়ে গঠিত কমিটি বাতিল করতে হবে। আর কাউন্সিলের মাধ্যমে শক্তিশালী কমিটি গঠন করতে হবে। নাসিক ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা তাকিয়ে আছি এমপি শামীম ওসমান, মেয়র আইভী, বন্দরের নেতা এম এ রশিদ ও হুমায়ূন কবির মৃধার প্রতি। তারা এসকল অদক্ষ কমিটি বিলুপ্ত করার জন্য পদক্ষেপ নিবেন। যাদের আমরা নেতা মনে করে এতদিন রাজপথে সকল কার্যক্রম চালিয়ে এসেছি সেই নেতা আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা দলকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন ওয়ার্ড থেকে দলকে শক্তিশালী করে সাজাতে। আর তারা দলতে শক্থিশালীর পরিবর্তে দুবর্ল করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে এ অদক্ষদের দ্বারা পকেট কমিটি বাতিলের জন্য কেন্দ্রকে অবহিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি আনোয়ার হোসেন নিজের আখের গুছাতে টাকার বিনিময়ে অদক্ষদের দিয়ে কমিটি গঠন করেছেন। তিনি যখন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন তিনি প্রতিটি কাজ থেকে পার্সেন্টিস নিতেন। তার এই দুর্নীতির টাকা দিয়ে বন্দরে তার শশুড় বাড়ি সংলগ্ন ৯ তলা ভবন করেছেন। আমরা দলতে শক্তিশালী করার জন্য এ সকল নেতাদের হাতকেও শক্তিশালী করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করেছি। আর তারা আমাদের অবমূল্যয়ন করেছেন। আমরাও ২৭নং ওয়ার্ডে আনোয়ার-খোকনকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করলাম। তারা এমন লোকদের নেতা বানিয়েছে যিনি নাইটগার্ড। যার কোন কর্মী নেই, দলের জন্য কোন অবদান নেই। আবার এমন লোককে নেতা বানিয়েছেন যিনি ছাত্রলীগ করতেন গঠনতন্ত্র মোতাবেক ছাত্রলীগ থেকে সরাসরি মূল দলে আসতে পারেন না। ছাত্রলীগ নেতাকে যুবলীগ করে তার পর ধাপে ধাপে মূল দলে আসতে হয়। কিন্তু তারা এক লাফে ছাত্রলীগ নেতাকে মূল দলে পদ দিয়েছেন। আমরা এ সকল কর্মকান্ডের জোর প্রতিবাদ জানাই। আর ২৭নং ওয়ার্ডে যাতে নেকা বানিয়েছে সে এডভোটেকট হলেও তার অবস্থান বন্দরের বাইরে পাঠানতলী এলাকায়। বলা চলে সেই হিসাবে সে বহিরাগত। যারা এ ওয়ার্ডে রাজনীতি করবে তাকে এ ওয়ার্ডে বসবাস করতে হবে। আর তার কোন কর্মী নেই। দলের জন্য অবদান নেই। আমরা মাস ব্যাপী শান্তির সমাবেশ করলাম কিন্তু সেই নেতা একদিনও শান্তির সমাবেশে আসেনি। তাদের যদি দলের দায়িত্ব দেয়া হয় তবে দল দুবর্ল থেকে অধিক দুর্বল হয়ে পড়বে। আমার এসকল অদক্ষ কমিটি মানি না। কাইন্সলের মাধ্যমে যে নেতা হবে তাকে আমার মেনে নেব। আর যে নেতারা দলকে দুবর্ল করার ষড়যন্ত্র করবে আমরা এমন নেতা চাই না তাদের বহিস্কারের আবেদন করঠি কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে। এ ব্যপারে ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের পরনো কমিটির সভাপতি হাজী সামাদ বলেন, শীর্ষ নেতারা এধরনের ভুল করবেন তা আমার বোধগম্য নয়। একজন নাইটগার্ডকে দলের দায়িত্ব দিবেন তা কিভাবে মেনে যায়। যার কোন কর্মী নেই দলের জন্য অবদান নেই। শুধু চাটুকারিতা করলেই দলের পদ পওয়া যায় এটা এই প্রথম দেখলাম। তবে আনোয়ার ভাই ও খোকন সাহা যে কমিটি দিয়েছে তা আমরা মানি না। অবশ্যই কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করে কমিটি গঠন করতে হবে। তাই আমরা তাদের দেয়া অদক্ষ কমিটি বর্জন করলাম। আমি ৮৬ সাল থেকে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে রাজনীতি করছি। পরে যুবলীগের সভাপতি হলাম। এর পর ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হলাম। কিন্তু আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহা কমিটি গঠনের আগে আমাদের সাথে কোন আলাপ আলোচনাও করেনি। তারা নিজেদের একান্ত ইচ্ছায় দলের তৃনমূলের মতামত না নিয়ে অদক্ষ কমিটি ঘোষনা দিয়ে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমরা এর দ্রæত প্রতিকার চাই। এ ব্যপারে ২৩নং ওয়ার্ড আওয়ামলিীগ নেতা মোছাদ্দেক আলী আঙ্গুর বলেন, আমি ছাত্রলীগ থেকে যুবলীগ, যুবলীগ থেকে আওয়ামীলীগ করে আসছি। আমি একজন আওয়ামীলী পরিবারের সন্তান। আমার বড় ভাই প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন কবির ছিলেন কদম রসুল পৌর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। আর আনোয়ার ও খোকন সাহা এ ধদরনের আওয়ামী পরিবারের লোকদের বাদ দিয়ে রাজাকারের সন্তান ও ওয়ারম্যা শো লোকদিদের দিয়ে অদক্ষ ও দুর্বল কমিটি ঘোসনা দিয়ে প্রকৃত আওয়ামীলীগার দের অপমান করেছেন। আমরা এ সকল কমিটি বয়কট করলাম। কাউন্সিলের মাধ্যমে যাকে নেতা নির্বাচন করা হবে আমরা তাকেই নেতা হিসাবে মানব। একই ওয়ার্ডের আরেক আওয়ামীলী পরিবারের সন্তান যে পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালিন নেতার সেই পরিবারের সন্তান কুদ্দুস মৃধা বলেন, আমরা অতিদ্রæত অদক্ষ কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। তবে আমরা এমপি শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর প্রতি তাকিয়ে আছি আমরা তাদের নেতৃত্বে নতুন শক্তিশালী কমিটি পাব বলে আশা করছি। এভাবে বন্দরে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহার বিদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা।