বর্তমান কর্মসূচিতে আস্থাহীন তৃনমূল
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্বাচনের দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও কঠোর ভূমিকায় রাজপথে নামতে পারেনি বিএনপি। বর্তমানে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা যাতে হতাশায় না পরে সেই লক্ষে কঠোর আন্দোলন থেকে বেড়িয়ে কালো পতাকা মিছিল ও লিফলেট বিতরণের মতো ঢিলেঢালা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েই দিন চলছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। তাদের ধারণা বর্তমানে ছোট ছোট কোন কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মী-সমর্থদের দলমুখী রাখতে হবে। তা না হলে দীর্ঘদিন নানা আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপির যতটুকু সমর্থন বেড়েছিলো তা ধূলোয় মিশে যেত আর বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারো ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরের মতো করে কর্মী সংকটে ভূগতেন। সেদিকে লক্ষ্যে করেই দ্বাদশ নির্বাচনের পর বিএনপির নেতাকর্মীরা সংগঠন চাঙ্গা রাখতে ছোট ছোট কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, নির্বাচনের পর প্রথম গত ২৭ জানুয়ারী সারা দেশে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর একত্রিতভাবে ঢাকা নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেন। বিগত দিনে ঢাকায় বিএনপি যে চমক দেখিয়েছিলেন সেদিন কয়েকটি জেলা মিলিয়ে ও বিএনপির বেশি লোক জমায়েত করতে পারেনি। অপর দিকে সাংসদ অধিবেশনের দিন ৩০ জানুয়ারী সকল থানা, উপজেলায় কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। যেখানে বিএনপির সকল জায়গার কর্মসূচি পালনে পুলিশের বাধার মুখে পরেন। তা ছাড়া সেদিনের সকল কর্মসূচি বলা চলে পন্ডই হয়ে যায়। পরবর্তীতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং একদফা দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী টানা ৬ দিনের দিনের লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। রাজপথে কর্মসূচির পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়াতে বিএনপি এই মুহূর্তে আইনি প্রক্রিয়ায় দলের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এদিকে বিএনপির দাবি, ৭ জানুয়ারির ‘একতরফা’ ও আসন ভাগাভাগির নির্বাচন পশ্চিমাসহ গণতান্ত্রিক বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। কারণ, বিএনপিবিহীন নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে সরকার যে ডামি-স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে ভোট করেছে, দেশের জনগণ ও বিদেশিরা সে সম্পর্কে অবগত। নির্বাচনের পরেও বাংলাদেশের গণতন্ত্রহীনতা, ভোটাধিকার ও মানবাধিকার হরণ এবং সুশাসনের অভাবের বিষয়টিতে তারা সুস্পষ্ট বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তা ছাড়া বর্তমানে সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে ও বিএনপির নেতাকর্মীরা যারা কঠোর আন্দোলনে কেউ কেউ রাজপথে থেকে আবার কেউ কেউ ঘরে বসে মামলা খেয়েছেন সেই মামলাগুলোয় আগাম জামিন পেতে উচ্চ আদালতে আবেদন করলেও তারা এখনো সেই জামিন পায়নি। যাকে ঘিরে বিএনপির বহু নেতাকর্মী এখনো রাজপথে আসতে পারছে না। যাকে ঘিরে বর্তমানে আন্দোলনে কঠোর পন্থায় যাওয়াটা ঠিক হবে না বলছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সূত্র বলছে, গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এই পর্যন্ত ৩ মাস বিএনপির নেতা-কর্মীরা মামলায় জর্জরিত হয়ে ঘর-বাড়ি ছাড়া আত্মগোপনে থেকে ছন্নছাড়া অবস্থায় পরিণত হয়েছেন। এদিকে গত ৩ মাস বিএনপি দফায় দফায় প্রায় ১৩ দফা অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন যা বিএনপির নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমেই পালন করেছেন। তা ছাড়া নানা মামলায় কোন নেতাকর্মী রাজপথে আসেনি। আর আন্দোলনে ও ছিলো না কোন জোর ভূমিকা যাকে ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের উপর দিয়েই নির্বাচন হয়ে যায়। আর বিএনপির রাজনীতি অনেকটাই ঝিমিয়ে পরেন। পরবর্তীতে নির্বাচনের প্রায় ২০দিন পর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চড়া দামের প্রতিবাদে, কারাবন্দী নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং সংসদ বাতিলের দাবিতে প্রথমে ২৭ জানুয়ারী পরবর্তীতে ৩০ জানুয়ারী কালো পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি এটা কোন আন্দোলনের কর্মসূচি নয়। এটা জনস্বার্থের কর্মসূচি এভাবে কর্মসূচি পালন করে বিএনপি দেশের ক্ষমতায় রদবদল ঘটাতে পারবে না। যাকে ঘিরে এবার টানা ৬ দিন লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির ঘোষণা আসেন। এই সকল কর্মসূচিতে খুশি নয় বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, কঠোর আন্দোলনে ও এই সরকারে কিছু হয়নি, এখন কলো পতাকা ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে সরকার পতনের স্বপ্ন দেখা যায় কিন্তু বাস্তবায়ন না। কেন্দ্রীয় নেতাদের এই কর্মসূচি ঘোষণায় ক্ষুদ্ধ নেতারা। বর্তমানে গতকাল ১৫ ফেব্রæয়ারি বিএনপির মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারামুক্ত হয়ে এসেছেন। এখন সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা কঠোর ও গঠনমূলক কর্মসূচি আশা করছে।