হতাশায় আ’লীগের কর্মীরা!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্মীর চেয়ে নেতার সংখ্যা বেড়ে গেছে। দলীয় কর্মসূচী পালনে তাদের তেমন সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় না। তবে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের অনেক নেতা রয়েছেন যারা দলের স্বার্থে রাজপথে ভূমিকা না রাখলেও নিজেদের স্বার্থে রাজপথে বিশাল বিশাল শো-ডাউন করেছেন। সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনে পূর্বের ন্যায় অনেকেই দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। এমনকি এর আগেও একাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনেও তাদের এমন স্বার্থন্বেষী রূপ দেখা গেছে। একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে লবিংসহ স্থানীয় ভাবে বিশাল বিশাল শো-ডাউন করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ বাদল, সাবেক সহ-সভাপতি আরজু রহমান ভূইয়া, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কাদির, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানসহ আওয়ামীলীগ নেতা এড. আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতসহ বেশ কয়েক জন নেতা। অথচ নির্বাচনের পর রাজপথে তাদের তাক্ লাগানো শো-ডাউন করতে দেখা যায়নি। নির্বাচনের পূর্বে তিনারা শহরে বিশাল শো-ডাউন করলেও নির্বাচন শেষে ঢাকাতে আওয়ামীলীগের আনন্দ র্যালীতে কর্মী ছাড়াই শুধু নেতারাই উপস্থিত হয়েছিলেন। বর্তমানে যে কোন কর্মসূচী ২নং রেল গেইটস্থ আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে জেলা ও মহানগরের নেতারা পালন করলেও কর্মীদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায় না। আর আওয়ামীলীগের পদ-পদবী পাওয়াসহ নৌকা প্রতীক নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিজয়ী হলেও মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর কাছে বরাবরই অমূল্যায়িত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের কর্মীরা। তবে মেয়র আইভীর আশ্রয় প্রশ্রয়ে অনেকেই জেলা আওয়ামীলীগের পদপদবী পাওয়াসহ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। মেয়র আইভীর কাছে আওয়ামীলীগের কর্মীরা অমূল্যায়িত হলেও বিএনপি-জামাতের সাথে রয়েছে সুসম্পর্ক। জানাগাছে, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের বিশাল বিশাল জনসভা একমাত্র তিনিই সফল করেছেন। অতীতের রাজনীতির দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যাবে, নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের কেউ শামীম ওসমানের মত ব্যাপক আয়োজন করতে দেখা যায়নি বা কারো পক্ষে এমন বিশাল আয়োজন করা সম্ভব না মনে করছেন দলের ত্যাগী নেতারা। শামীম ওসমানের মত বিশাল জনসভা করতে পারেনি নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের কোন নেতা। অনেকে মুখে মুখে বড় বড় কথা বললেও রাজপথে তাদের কোন দাপট নেই। কেননা যার যত বেশি কর্মী রয়েছে সে ততই দাপুটে। সেক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মাহনগর আওয়ামীলীগের অনেক নেতাই রয়েছেন যারা কর্মীশূণ্য। আর বিশাল কর্মী বাহিনী থাকায় শামীম ওসমান বরাবরের মতই রাজনীতিতে বেশি দাপুটে। কর্মীদের কারণেই নানা ষড়যন্ত্রের পরও রাজনীতিতে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে শামীম ওসমান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে নেতারা যত কর্মী বেশি থাকবে সে রাজনীতিতে ততই শক্ত অবস্থান তৈরী করতে পারবে। যদিও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের অনেক নেতা কর্মীবিহীন রয়েছেন। তবে শুধুমাত্র পদ-পদবীর কারণেই তারা ঠিকে রয়েছেন। তবে এভাবে তারা বেশি দিন রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবে না। পর্যাক্রমে কর্মীবিহীন নেতাদের অস্তিত্ব থাকবে না নারায়ণগঞ্জে।
