আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | দুপুর ২:৪০

দ্রব্যমূল্য ও বিদ্যুৎ নিয়ে চাপের মুখে সরকার

ডান্ডিবার্তা | ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ | ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সরকার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের এই
নীতিগত সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি
বলেছেন যে, বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করা হবে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতির
চাপে চিঁড়েচ্যাপ্টা থাকা সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষ এমনি
অসহনীয় জীবন যাপন করছেন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কিছুতেই
নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির
ঝুঁকি সরকার কেন নিচ্ছে- সেটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন
উঠেছে। বিশেষ করে অর্থনীতির সূচকগুলোতে আবার একটা
ইতিবাচক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
আবার ২০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। তাছাড়া বাংলাদেশের
রপ্তানি আয় জানুয়ারি মাসে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এরকম পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংস্কারকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত
বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। তারা মনে করেন, খেলাপি ঋণ বন্ধ, অর্থ
পাচার বন্ধ এবং দুর্নীতি যদি বন্ধ করা যায় তাহলে বিদ্যুতের মূল্য
বৃদ্ধি করা উচিত নয়। তাছাড়া মূল্য সমন্বয়ের যে বিষয়টি বলা
হচ্ছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট মহল। তারা বলছেন,
সমন্বয় মানে হল আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম কমে, তখন তেলের
দাম কমাতে হবে, গ্যাসের দাম কমাতে হবে। আবার আন্তর্জাতিক
বাজারে যখন বাড়বে তখন সেটা বাড়াতে হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ এবং
জ্বালানি মন্ত্রণালয় কখনোই তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের
সঙ্গে সমন্বয় করে না। শুধুমাত্র যখন মূল্য বৃদ্ধি হয় তখন এটির দাম
বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কদিন আগে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।
এখন আবার যদি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয় তাহলে এটি সাধারণ
মধ্যবিত্তদের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিভিন্ন মহল মনে করছে যে, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে যে
অনিয়ম এবং আমদানি নির্ভরতা এবং কিছু কিছু ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে মুনাফা দেওয়ার প্রবণতা বিশেষ করে কুইক রেন্টাল
বিদ্যুতের নামে যে স্বেচ্ছাচারিতা হচ্ছে এগুলো যদি বন্ধ করা যায়
তাহলে পরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু
ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কিছু ব্যক্তির হাতে রাষ্ট্রের কোটি
কোটি সম্পদ তুলে দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য বিদ্যুতের মূল্য
বৃদ্ধি করা কতটুকু নৈতিক সিদ্ধান্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর
এসব কারণেই সাধারণ মানুষজন বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে ফুঁসে
উঠতে পারে বলেও কোন কোন মহল মনে করছেন। অন্যদিকে বিএনপি
সহ বিরোধী দলগুলো বিদ্যুতের মূল্য নিয়ে আন্দোলনের পরিকল্পনা
তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হলে তারা
আন্দোলনে নামবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো বিদ্যুতের মূল্য
বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে এবং এ নিয়ে আন্দোলন করার
হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সরকার নির্বাচনের পর একটি স্বস্তিদায়ক
অবস্থায় রয়েছে। সামনে রমজান এবং গ্রীষ্মের শুরু হচ্ছে। এ সময়
বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ দিতে পারবে কিনা তা নিয়েও
অনিশ্চিয়তা রয়েছে। রমজানে এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের বাজার
অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। সার্বিক পরিস্থিতিতে এরকম একটি
সময়ে সরকার কি বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করে ঝুঁকি নিচ্ছে? এই
প্রশ্নটি উঠেছে। নাকি সরকারের ভিতর কিছু লোক আছেন যারা
ইচ্ছা করেই সরকারকে বিপদে ফেলতে চান। কারণ বিদ্যুতের মূল্য
বৃদ্ধি এই সময় কতটা যৌক্তিক হবে এবং সরকারের জন্য কতটা
নিরাপদ হবে সেই প্রশ্নটি সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে। কিছু
মানুষ সরকার যখন একটি স্বাভাবিক অবস্থায় আছে, একটি
স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছে তখন সরকারকে অস্থির করার দায়িত্ব
নিয়েছে কিনা সেই প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে উঠেছে।



Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা