বন্দরে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা গুরুতর জখম স্বামী হাসপাতালে
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বন্দরে দিপালী রানী (৪২) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুবৃত্তরা নিহতের স্বামী শ্যামা চন্দ্র দাস (৫০) কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে বন্দরের লেজারার্স এলাকার একটি বাড়ি থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে আহত শ্যামা চন্দ্র দাসকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান পুলিশ ও নিহতের মেয়ে। এদিকে গুরুতর আহত স্বামী শ্যামা চন্দ্র দাস গলায় ও সারাদেহে মারাত্মক ছুরিকাঘাত নিয়ে হাসপাতালে যাবার আগে পরিবার ও স্থানীয়দের কাছে জানিয়ে গেছেন রাতে কারা তাদের উপর হামলা করে তাদেরকে উপর্যুপুরি কুপিয়েছে এবং তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। তিনি জানান, বাড়িওয়ালার কথিত বোন ফরিদা নামে বাড়ির কেয়ারটেকার তাদেরকে কুপিয়েছে। এ ঘটনায় বাড়ির ভাড়াটিয়া ও ম্যানেজার ফরিদা বেগম ও ছেলে সিয়ামকে আটক করেছে পুলিশ। তবে ফরিদার স্বামী পলাতক আছে। নিহতের মেয়ে মলি রানী জানান, তারা চার বোন। দুই বোন বিয়ের পর জামাইয়ের বাড়িতে থাকে। পাশের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় উচ্চ শব্দ ছিল। মায়ের অনুমতি নিয়ে বোনকে নিয়ে তিনি বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে যান। পরে সেখান থেকে এসে দরজা খোলা পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে শুয়ে থাকেন। সকালে মাকে গার্মেন্টসে যাবার জন্য ডাকতে গেলে তিনি তাকে রক্তাক্ত অবস্থা দেখতে পান। তখন দেখেন বাবা বেঁচে আছেন। তিনি তাদেরকে হত্যাকারীদের বিবরণ দিয়ে গেছেন। হত্যার সাথে বাড়ির কেয়ারটেকার জড়িত রয়েছে অভিযোগ করে মলি বলেন, এই বাড়ির বাড়িওলার বোন ফরিদা বেগম কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার সাথে প্রায় সময় মায়ের ঝগড়া-ঝাটি হতো। কিছুদিন আগেও রান্না করা নিয়ে তার সাথে ঝগড়া হয়েছে। এছাড়া ঘর ভাড়ার টাকা নিয়েও ঝগড়া হয়েছে। তবে তাদের সব ভাড়া আমরা ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছি। এই ঝগড়ার রেশ ধরে ফরিদা বেগম ও তার স্বামী মিলে আমার বাবা-মাকে কুপিয়েছে। বাবা হাসপাতালে আহত অবস্থায় এই ঘটনার কথা স্বীকার করে আমাদের জানিয়েছে। আমি আমার মায়ের খুনিদের বিচার চাই। বন্দর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহত শ্যামা চন্দ্রকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের মেয়ের অভিযোগে ইতোমধ্যে ফরিদা ও তার ছেলেকে আটক করা হয়েছে। ফরিদার পলাতক স্বামী ফরিদকে আটক করতে পুলিশ কাজ করছে। তদন্তের পর ঘটনার বিস্তারিত জানানো যাবে। নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি খুবই রহস্যজনক। এই ঘটনায় দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নিহত দিপালী রাণীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। কারা এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তার তদন্ত চলছে।