আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | রাত ১:১৭

নাসিকের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি!

ডান্ডিবার্তা | ০৩ মার্চ, ২০২৪ | ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে মেতে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগ নেতার ভাগিনা পরিচয়দানকারী মশিউর রহমান মামুন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের খাস আদায়ের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় এই মশিউর রহমান মামুনকে। টার্মিনাল এলাকায় টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয়া হলেও সিটি কর্পোরেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে শহর ও শহরের বাইরের সড়কগুলোতে চলাচলকারী প্রতিটি বাস থেকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন হাশেম মোল্লা নামে ভুক্তভোগী এক পরিবহন শ্রমিক। গত ২২ ফেব্রæয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও গত ১৩ ফেব্রæয়ারি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এবং গত ২৯ জানুয়ারি র‌্যাব-১১ এর দপ্তরে তিনটি লিখিত অভিযোগ করে এর প্রতিকার চান তিনি। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এর খাস আদায় এর দায়িত্ব পায় মশিউর রহমান মামুন। এখান থেকে প্রতিদিন বন্ধু, বন্ধন, আনন্দ, উৎসব ও বাঁধন নামে ৫টি পরিবহন কোম্পানীর বাস চলাচল করে। এই সকল পরিবহন থেকে তাকে টোল আদায় করতে বলা হয়েছে। তবে, এসকল পরিবহনসহ শহর ও শহরের বাইরের অন্যান্য সড়ক যেমন কাশিপুর, ফারিয়ার মোড়, মেথর খোলা, পঞ্চবটি, ফতল্লা, শিবু মার্কেট, জেলা পরিষদ ও চাষাড়া দিয়ে যতো ডে-নাইট কোচ ও বিভিন্ন গার্মেন্টস এবং ব্যাংকের স্টাফ বাস চলাচল করে, তা থেকে সিটি কর্পোরেশনের নামে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে এই মামুন। অভিযোগের তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, এ মশিউর রহমান মামুন সর্বক্ষেত্রে নিজেকে জাকিরুল আলম হেলালের ভাগিনা পরিচয় দিয়ে থাকে। টোল আদায়ের বিষয়ে কেউ জানতে চাইলে সে, হেলালের নামই ব্যবহার করে। এই ব্যবসা তার নিজের না, এই ব্যবসা জাকিরুল আলম হেলালের এমনটাই সকলের কাছে বলে বেড়ায় সে। আরও জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ টার্মিনাল থেকে টোল আদায়ের পাশাপাশি শহর ও শহরতলীর প্রতিটি সড়ক ও বাস থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে মামুন। টার্মিনালের বাইরের পরিবহনগুলো থেকে পরিবহন ভেদে মাসিক পনের’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা হিসেবে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে জানায় খোদ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। তবে, সিটি কর্পোরেশনের নাম ব্যবহার করায় এবং আওয়ামীলীগ নেতার নাম ভাঙ্গানোর কারণে কেউ প্রকাশ্যে কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না। মামুন সম্পর্কে খোঁজ নিতে গেলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানায়, ওর বিরুদ্ধে নিউজ করতে পারবেন না ভাই, সেই প্রভাবশালী নেতার ভাগিনা। তার উপর সে আবার বিশেষ পেশার কিছু লোককে মান্থলি টাকা-পয়সা দিয়ে নিজের পকেটে রাখে। বিশেষ পেশার অনেকে আবার তার পিছনে পিছনে কুকুরের মতো ঘুরে। তাই তার বিরুদ্ধে কেউ কিছুই করতে পারে না। এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত মশিউর রহমান মামুন বলেন, আমি ইজারাদার না। এই ব্যবসা আমার না। আমি কোনো টাকাও তুলি না। এটা হেলাল মামা (জাকিরুল আলম হেলাল)’র প্রতিষ্ঠানের নামে তোলা হয়। তার সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি ভালো বলতে পারবে। আমি তার মেঝো বোনের ছেলে, তাই আমি দায়িত্ব পালন করি। ইজারার সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও খানপুরের ইজারাদার শাহআলম, মোস্তফা ও হাশেম নামের দুই/তিনজন সিটি কর্পোরেশনের নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে গিয়ে চাঁদা তোলে বলে তিনিও অভিযোগ করেন। এদিকে, জাকিরুল আলম হেলালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তো এই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি ৯/১০ মাস হলো। আমি এখন ডেভেলপার ব্যবসা করি। আগে করেছি, এটা করেছি, বাজারটাও করেছি। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন করোনাকালে আমার টাকা দেয়নি, তাই ইজারা আমি ছেড়ে দিয়েছি। এদিকে, ভুক্তভোগী পরিবহন শ্রমিক হাশেম মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, কেউ যদি এই চাঁদা দিতে না চায়, তাহলে চলন্ত গাড়ি আটকে রেখে চাঁদা আদায় করা হয়। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা জিজ্ঞাসা করলে সিটি কর্পোরেশনের টোল আদায় চলছে বলে জানায় এই চাঁদাবাজ চক্রটি। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর দুটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অনুসন্ধানে জানা যায়, সিটি করপোরেশন ও ইজারাদারের চুক্তিপত্রের ৬ নম্বর শর্তে উল্লেখ আছে যে, টার্মিনালের সীমানা থেকে টোল আদায় করতে হবে। কিন্তু এই শর্ত ভেঙ্গে সীমানার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করছে ইজারাদার মামুন। আরও জানা যায়, যে ঠিকানা দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের সাথে চুক্তিপত্র করেছিলো সেই ঠিকানাও ভুয়া। এ বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বাজার কর্মকর্তা জহিরুল আলমকে কয়েকদিন কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি। একবার কল ধরে তিনি বলেন, জহির সাহেব তো নেই, মোবাইল রেখে বাইরে গেছে। কোথায় গেছে জানতে চাইলে তিনি কল কেটে দেন। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন এ বিষয়ে বলেন, নিয়মের উর্ধ্বে কেউ নয়। নিয়ম ভেঙ্গে টোল আদায় করা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমি অধিকতর খোঁজ নিবো, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা