বন্দরে ক্ষমতাসীনদের হ-য-ব-র-ল অবস্থা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই বন্দরে সরকারদলীয় রাজনীতিতে বইছে নানা বিশ্লেষণ। বন্দর থানা আওয়ামীলীগের কমিটি-উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে সর্বত্র আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে। উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামী ৪ মে অনুষ্ঠিত হতে পারে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ঘন্টা বাঝতে শুরু করেছে। উপজেলা নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থীর নাম ১ম ভাগে শোনা গেলেও বর্তমানে ২ জন প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছে। যেখানে সরকারদলীয় প্রার্থীদের নাম থাকলেও ভোটের মাঠে নামেনি। বিএনপির সাবেক ২ বারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুল ও জাতীয় পার্টির মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের হেট্রিক বিজয়ী চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাকসুদ হোসেন বন্দরের দক্ষিনাঞ্চল -উত্তরাঞ্চল চষে বেড়াচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদসহ কাজিম উদ্দিন, এম এ সালামদের দেখা মিলছে অনেকটা নীরবতায়। অপরদিকে সংসদ নির্বাচনের পর বন্দরের সরকার দলীয় রাজনীতিতে হ-য-বরল অবস্থা বিরাজ করছে। উপজেলা নির্বাচনকে টার্গেট করে নিখুঁতভাবে বন্দরে সরকারদলীয় রাজনীতিতে কোন্দল সৃষ্টি পূর্বক নিজেদের স্বার্থ হাসিলে মরিয়া একাধিক গ্রুপ। দীর্ঘদিনের অবহেলিত আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে গতিশীল করতে বন্দর থানা কমিটি ঘোষণা করার জন্য গত ১০ বছরে ৯টি ওর্য়াডে প্রায় ৫৬টি ওর্য়াড ভিত্তিক সভা করেছে মহানগর আওয়ামীলীগ। কমিটি ঘোষণার নামে মূলা ঝুলিয়ে আইওয়াশ পূর্বক নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এড.খোকন সাহা এমনই অভিযোগ তৃণমূলের। বন্দর (মহানগর) ৯টি ওর্য়াডে এতগুলো সভা করেও ওর্য়াড কমিটি ঘোষণা করতে ব্যার্থ হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর হঠাৎ মহানগরের বন্দরের ৯টি ওর্য়াডসহ ১৭টি ওর্য়াডের সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে। ১৭টি ওর্য়াড কমিটি ঘোষণার পরই পাল্টে যায় রাজনৈতিক দৃশ্যপট। শুরু হয় প্রতিবাদ সভা, মিছিল, জেলা অফিসে তালা, অবাঞ্ছিত ঘোষণাসহ নানাবিধ। এমনকি ওই কমিটির বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগসহ স্বারক লিপি দিয়েছে বলে জানা গেছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মহানগর অনুমোদন দিবে থানা কমিটিকে। আর থানা কমিটি কাউন্সিলের মাধ্যমে অনুমোদন দিবে ওর্য়াড কমিটিকে। নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করে সাংঘর্ষিক ভাবে ১৭টি ওর্য়াড কমিটির আংশিক ঘোষণা দেন। শুরু হয় তুল কলাম কান্ড। বন্দর থানা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে আটঘাট বেঁধে নেমেছে ত্যাগী নেতারা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পদপদবীর জন্য ত্যাগী নেতারা রাজপথে থাকলেও অদৃশ্য কালো ইশারায় সকল কিছু কেমন জানি উল্টো -পাল্টা হয়ে পড়ছে। যে কারনে বন্দর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তেমন একটা দেখা মিলছে না। উপজেলার নির্বাচনী মাঠে বিএনপি -জাতীয় পার্টির ২ প্রার্থী সোরগোল তুললেও সরকার দলীয় প্রার্থীরা নীরব। তাদের নীরবতাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন সচেতন মহল। অনেকে বলছেন কোন প্রকার পরামর্শ, আলাপ-আলোচনা ছাড়া হঠাৎ করে মহানগরের ১৭টি ওর্য়াড আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা তাদের পূর্ব পরিকল্পিত। কমিটি ঘোষণা করে হ-য-বরল অবস্থা সৃষ্টি করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজেদের মত করে নিবেন। এই কমিটি ঘোষণা করে নাই, উপজেলা নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীকে কৌশলে হোঁচট দেয়ায়ই তাদের লক্ষ্য। দীর্ঘদিনের চিত্রকর বন্দর থানা আওয়ামীলীগের কমিটির জন্য যেখানে তাকিয়ে রয়েছে ত্যাগী নেতারা। সেখানে ও কমিটি ঘোষণা না করে বির্তকের জন্ম দিয়েছে বলে রাজনৈতিক বৌদ্ধদের ভাষ্য। অপরদিকে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের কমিটি ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে নতুন মাত্রা ও সমিকরন শুরু হয়েছে। দিন যত সামনে আসছে, নির্বাচনী রাজনীতি ততই নতুন মাত্রা পাচ্ছে। হঠাৎ করেই রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মেরুকরণ। বদলাচ্ছে রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা। নানা পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি-এই নির্বাচনী রাজনীতির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে না থাকলেও নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ। কে, কাকে, কোন কৌশলে পেছনে ফেলে পার হবে নির্বাচনী বৈতরণী; সে নিয়ে যেমন রয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ, সমীকরণ; তেমনি জয় নিশ্চিত করতে কাকে নিয়ে কোন পথে এগোলে সফলতা আসবে-ভাবতে হচ্ছে তা নিয়েও। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে। দল ক্ষমতায় থাকায় সরকার পরিচালনায় প্রতিদিনই নানা চ্যালেঞ্জ যেমন সামাল দিতে হচ্ছে তাদের, তেমনি নির্বাচনী রাজনীতিতে নিতে হচ্ছে নানা উদ্যোগ ও কৌশল। ফলে গত কয়েক দিনের রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আওয়ামীলীগ সরকার টানা ৪ বারের মত ক্ষমতার আসনে। দেশ গঠনে সকল আন্দোলনের সূতিকাগার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। বন্দর থানা আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নের্তৃত্বের সংকটে সাংগঠনিকভাবে প্রতিনিয়ত বেকফুটে যাচ্ছে। সংগঠনকে গতিশীল ও রাজনীতিতে আমুল পরিবর্তন করতে এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। রাজনীতিতে সক্রিয়, কারা নির্যাতিত নেতা হুমায়ন কবির মৃধাকে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসাবে দেখতে চাই তৃনমুলের ত্যাগী, আপোষহীন ও রাজনৈতিক বৌদ্ধারা। প্রয়াত ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক( পদক প্রাপ্ত) ও আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আশোক আলী মৃধার ছেলে হুমায়ন কবির মৃধা। মহানগর আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন কবির মৃধা তার রাজনৈতিক পথচলা ১৯৭৮ সালে। ১৯৭৮ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে হাতখরি। যে অবস্থানে/জায়গায় থেকে রাজনীতি শুরু যা নারায়ণগঞ্জ সদর-বন্দর আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। বন্দরের কদম রসুল এলাকায় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে গিয়ে যে পরিমান নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে তা দেশের কোন এলাকায় এমন হয়েছে বলে আমি মনে করি না বলে জানান প্রবীন আওয়ামী লীগের নেতা হাজী আব্দুস সামাদ। যুবলীগ নেতা শরীফ হোসেন বলেন, কদম রসুল এলাকা ( নাসিক ২৩ নং ওর্য়াড) এলাকা বিএনপির ঘাটি। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও প্রয়াত সাংসদ হাজী জালাল উদ্দীন, তার ছেলে সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম, সাবেক ২ বারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আতাউর রহমান মুকুল ও নাসিক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার এলাকা। সেই এলাকায় ছাত্রলীগের কমিটি করে বাড়িতে ঘুমাতে পারি নাই। আদিম যুগের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। সেই দূরদিনের সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিকে চাঙ্গা রাখতে হুমায়ন কবির মৃধা ভাইয়ের নের্তৃত্বে আমরা ছিলাম অটুট। নানা নির্যাতন আর মিথ্যা মামলায় বেহাল অবস্থা করেছে হুমায়ন কবির ভাইসহ আমাদের। এত জটিলতার মাঝেও শিক্ষানুরাগী, সমাজ সেবক হুমায়ন কবির মৃধা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সর্বত্র সক্রিয় থেকে আমাদের নের্তৃত্ব দিয়েছে। অপরদিকে আওয়ামীলীগ সরকার টানা ৪ বার ক্ষমতার আসনে থাকলেও কাউকে একটি ফুলের আচর দিতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। অন্যথায় আমাদের রাজনৈতিক চরিত্রও ওদের মত হবে। আদর্শের রাজনীতিতে অটুট হুমায়ন কবির মৃধা ভাইকে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দেখতে চাই। হুমায়ন কবির মৃধার হাতে যদি দেয়া হয় এ দায়িত্ব, গতিশীল হবে বন্দরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি। আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হাসান আরিফ বলেন, কদম রসুল এলাকায় রাজনীতি করা একটা সময় বিশাল ফ্যাক্টর ছিল। সেই প্রতিকূল মুহূর্তেও পিছু হঠাতে পারেনি হুমায়ন কবির মৃধা ভাইকে। কারন তার শুধু নয় মৃধা বংশের রক্তে স্বাধীনতা স্ব-পক্ষের শক্তির রাজনীতিতে সক্রিয়। ওনাদের মত ত্যাগী, কর্মীবান্ধব স্বচ্ছ রাজনীতিবীদের হাতে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দিলে পুনরায় গর্জে উঠবে। আবার ঢাক দিবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য। রাজপথে ঢাকবে অপশক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে। সংগঠন চাঙ্গা করতে ও অন্যায়ের এক আপোষহীন প্রতিবাদী নেতা হুমায়ন কবির মৃধা। যে লোকটিকে দেখে যাচ্ছি শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। ৬২ বছর বয়সে ৩০ বছরের যুবকের মত অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি করে রাজপথে মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে। এমনকি যে ওর্য়াড কমিটিতে রাজাকারের ছেলে, নানা বির্তকিত লোকদের পদ দেয়া হয়েছে এর প্রতিবাদ তিনিই করেছেন। প্রকাশ্য রাজাকারের ছেলের নামসহ বির্তকিত লোকদের চিহ্নিত করে দিয়েছে। যা সর্ব মহলে আলোচিত। সংগঠনের স্বার্থে যে কোন পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত হুমায়ন কবির মৃধা। নিজের পদ পদবীর চিন্তা না করে ত্যাগী নেতাদের জন্য চরম হুমকিও দিয়েছেন। ওর্য়াড কমিটি নিয়ে যে খেলা হয়েছে তা প্রকাশ্য করেন। হুমায়ন কবির মৃধার কঠোর হুশিয়ারির পর নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী, জাহাঙ্গীর আলম, জি এম আরাফাতসহ সিনিয়র নেতাদের দৃষ্টিতে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে জেলা আওয়ামীলীগের অফিসে তারা প্রতিবাদ সভা করে আনোয়ার হোসেন ও খোকন সাহাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এতে ক্ষান্ত হননি আওয়ামী লীগের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে ৪৮ ঘন্টা পর তালা খুলে দেয়া হয়েছে। হুমায়ন কবির মৃধার প্রতিবাদটি টক অব দ্যা কান্টি। তাদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনসহ কঠোর অবস্থানের বিষয়ে( ডিবিসি) হুমায়ন কবির মৃধা, নাসিক মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভীর বক্তব্য ও অবস্থান নিয়ে প্রায় ৭ মিনিটের সংবাদ প্রকাশ করে। এক হুমায়ন কবির মৃধার যুক্তিক প্রতিবাদকে সাধুবাদ জানিয়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বেশ উল্টো পাল্টো খেলা চলছে। মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার দেয়া ১৭টি কমিটি, ১০ দিনের মধ্যে পুনাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার কঠোর হুশিয়ারি করলেও অবশেষে ব্যার্থ হয়েছেন। এক হুমায়ন কবির মৃধার বিচক্ষণতায় বেকায়দায় তারা। এমন বিচক্ষণ ও রাজপথের আপোষহীন নেতা হুমায়ন কবির মৃধা ভাইকে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব দেয়া মানে সংগঠনকে অক্সিজেন সাপ্লাই হিসেবে দেয়া। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন হুমায়ন কবির মৃধাদের বেশ প্রয়োজন। কারন সংগঠন প্রেমিক, অন্যায়ের প্রতিবাদকারী, কর্মী তৈরি করার কারিগর হুমায়ন কবির মৃধা ভাইকে বন্দর থানা আওয়ামীলীগ সভাপতি করা হলে রাজনীতিতে বেশ পরিবর্তন আসবে। রাজনীতি অনেকে করে, রাজনৈতিক মাঠে এমন হুমায়ন কবির মৃধাদের অনেক প্রয়োজন। নেতা অনেকে হবে, অনেকে আসবে, কিন্তু হুমায়ন কবির মৃধা একজনই বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা মোসাদ্দেক আলী আঙ্গুর।