বিএনপির কমিটি না হওয়ায় ক্ষোভ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্র জমা পড়ে থাকলেও কেন এতদিনেও রাজপথে রক্ত ঘাম ও শ্রম ঝরানো নেতাকর্মীদের একটি দলীয় পরিচয় দেয়া যায়নি তা নিয়ে দলের সাংগঠনিক সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির নেতারা। গত শনিবার বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সাথে বিভাগের অন্তর্গত জেলা ও মহানগর ইউনিটের নেতাদের সাথে বৈঠকে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপি নেতারা। পাশাপাশি কমিটি নিয়ে অন্য একটি জেলার সাধারণ সম্পাদকের দেয়া কড়া বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন নেতারা। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত নেতারা কড়া ভাষায় নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। কেন দলের ত্যাগী ও রাজপথে রক্ত ঘাম শ্রম ঝরানো নেতাদের কমিটি পড়ে আছে অনুমোদন দেয়া হচ্ছেনা তাও জানতে চান নেতারা। একটি জেলার সাধারণ সম্পাদক যিনি নিজেও জেল খেটে বের হয়েছেন তিনি বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মী কারাগার থেকে বের হয়েছেন, অনেকে এখনো আছেন, অনেকে রক্ত শ্রম দিয়েছেন অনেকের অঙ্গহানি হয়েছে। আমরা ২৮ অক্টোবরেরও অনেক আগে কমিটি প্রস্তুত করে কেন্দ্রে জমা দিয়েহি কই কেন কমিটি হলোনা। এত ত্যাগ শ্রম রক্ত দেয়ার পর তাদের দলীয় কোন পরিচয় না দিয়ে আবারো কর্মসূচীর জন্য কোন মুখে আমরা ডাকবো? এসময় ঐ নেতা ক্ষুব্দ হয়ে সাংগঠনিক টিমকে বলেন, যদি আপনারা না পারেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বলতে তাহলে আমাদের সাথে যুক্ত করে দিন। আমরা তাকে বলি। কেন এভাবে আমরা এত বিশাল সমাগম করার পরও সেদিন ব্যর্থ হলাম। কেন্দ্রের কাদের দোষ ছিল তাদের দায় ছিল? এগুলো খুঁজে বের করতে হবে। জানা যায়, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের অনেক আগেই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে জমা দেয় জেলা বিএনপি। সেই কমিটি জমা দেয়ার পর থেকে হবে হচ্ছে করে এখনো অপেক্ষায় আছে। এদিকে জেলা বিএনপির কমিটির মাত্র দুটি পদ ছাড়া আর কারো কোন পদ পদবি নেই। এহেন অবস্থায় গেল আন্দোলনে আলোর মুখ দেখেনি জেলা বিএনপি। এ বিষয়টিও উঠে আসে সাংগঠনিক টিমের সাথে আলোচনায়। বৈঠকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগীয় অন্যান্য জেলাগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা এতে উপস্থিত ছিলেন। এদিকে গত ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে বিএনপির ব্যর্থতা ও কেন্দ্রের গাফিলতি খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দলীয় সভায় জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় জেলা ও মহানগরগুলোর নেতারা। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে গেল আন্দোলনের বিষয় উঠে আসলে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেতাকর্মীরা। বক্তব্য নেতারা বলেন, ২৮ অক্টোবর দলের জেলার নেতাদের দায়িত্ব ছিল লোক আনা। বিগত যেকোন সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীদের সেদিন ঢাকায় উপস্থিত করা হয়েছিল। ঢাকার ইতিহাসে সেদিন বৃহৎ জনসমাবেশ হয়েছিল। কিন্তু সেদিন কেন ফলাফল আসেনি? কেন সেদিন সমাবেশের মধ্যে পুলিশ ঢুকে গেল? কেন সেদিন মাইক বন্ধ হয়ে গেল একটি জেনারেটরের ব্যবস্থাও ছিলনা, কেন সেদিন কেন্দ্রীয় নেতারা অবস্থান নিলেন না? কেন পরিকল্পনার অভাবে সফল আন্দোলন এভাবে ব্যর্থ হয়ে গেল সেটি অবশ্যই কেন্দ্রকে খুঁজে বের করতে হবে। কেন্দ্রের কাদের ব্যর্থতা এবং কোথায় কোথায় ব্যর্থতা খুঁজুন। এভাবে ব্যর্থ বার বার হওয়া যাবেনা। নেতাদের এসব বক্তব্য কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিম মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং এ ব্যাপারে দেখেবেন বলে নেতাদের আশ্বস্ত করেন। বৈঠকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগীয় অন্যান্য জেলাগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা এতে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বৈঠক করেছে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম। বৈঠকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগীয় অন্যান্য জেলাগুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা এতে উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, বৈঠকে আসন্ন রমজানে জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মসূচী, সাংগঠনিক নানা বিষয়, দলের কমিটি, বিগত রাজনৈতিক নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া সামনের দিনে কিভাবে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করা যায় তা নিয়ে কথা হয় সভায়।