না’গঞ্জ আ’লীগ নেতাকর্মীরা ব্যথিত!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতেও নৌকা না দেয়ায় ব্যথিত নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ নেতারা। আগামীতে নৌকা না দিলে কঠোর অস্থায় যাবে তৃনমূল নেতাকর্মীরা। গত ৭ মার্চ উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল বলেন, এবারের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বলেছিলাম এখানে নৌকা দিতে হবে। আমি বলতে চাই সামনে সদর-বন্দর আসনে নৌকা দিতে হবে। আমাদের তো সময় অনেক হলো, খালি কি আমি আর হাই ভাই থাকবো। সামনে আরাফাতকে আপনারা দেখতে চান না। তাদেরকে সামনে দায়িত্ব নিতে হবে। তোফায়েল ভাইকে দেখতে যাওয়ায় আমি আমার বন্ধু শামীম ওসমানকে ধন্যবাদ জানাই। এখানে দাঁড়িয়ে আমি বলতে চাই স্থানীয় নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্ধ বাতিল করতে হবে আমি সবার আগে দাবী জানিয়েছিলাম আজ তা হয়েছে। ৭ মার্চ ভাষণ উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আলোচনা সভায় এ কথা বলা হয়। ভিপি বাদল বলেন, পিঠে নৌকার মার্কার সিল এবং গায়ে আওয়ামী লীগের সিল না থাকলে কেউ জিজ্ঞেস করবে না। এমনকি কেউ পাত্তাও দিবে না। দলের জন্য আমি কাজ করে যেতে চাই। আমি যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলাম তখন কেউ দেখতেও যান নাই। দেখতে যাইয়েন। অসুস্থ মানুষকে দেখতে যাওয়া সুন্নাত। যার যতটুকু সম্মান তাকে ততটুকু মুল্যায়ন করতে হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সদর-বন্দর আসনে যখন নৌকা দেয় নাই তখন অনেক ক্ষোভ ছিল। তারপর নারায়ণগঞ্জে যখন প্রধানমন্ত্রী আসলেন তখন আপাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার গলা ভাঙ্গে না। তখন তিনি বললেন না ভাঙ্গে না। নেত্রী এত পরিশ্রম করেন তা দেখে সেই ক্ষোভ দূর হয়ে যায়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাই যখন মঞ্চে যেতে চায় তখন এস এসএফ তাকে আটকে দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব লিকু ভাই আমাদের ডেকে নেয়। কে জেলা প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারির দাম নেই। আগামী বার আমাদেরকে কি নৌকা দিবেন না। চলেন আমরা নেত্রীর কাছে যাই প্রয়োজনে সকল গাড়ি ভাড়া, খাওয়ার খরচ আমি বহন করবো। সিনিয়র নেতৃবৃন্দ সময় করে সকলে মিলে একদিন চলেন নেত্রীর কাছে গিয়ে বলবো আমাদেরকে নৌকা দিতে হবে। আমাদের দলীয় সেক্রেটারি একটা কথা বলে থাকেন, অন্তর জালা, জালা আর জালা। যদি নৌকায় না দেয় তাহলে আমরা এই জালা নিভানোর জন্য বিষ খেয়ে সেই জালা নিভাই। তাই আগামী বার আমাদের নৌকা না দিলে বিষ খেয়ে সেই জালা নিভাবো। চিকিৎসা ব্যবস্থা ও দালাল প্রসঙ্গে বলেন, পিজি হাসপাতালে যান দেখবেন দালালের অভাব নেই। নারায়ণগঞ্জের পপুলার হসপিটালে বিকেলে যান দেখবেন রোগীর বাজার আর বাজার। চিকিৎসার বাজার। খানপুর এবং ভিক্টোরিয়া গিয়ে দেখেন দালালে ভরা। চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ কষ্ট পায়। পিজি হাসাপাতালের বিকেলে যাইবেন দালালে ভর্তি। ডাক্তাররা বসে রোগি দেখে ১শ থেকে দেরশ। এই ভাবে প্রতিদিনর দেড় লাখ টাকা আর মাসে দেড় কোটি টাকা কামিয়ে নেন। এ সময় আরেক নেতা বলেন, ডাক্তাররা রোগী না দেখে বর্তমানে ঔষধ কোম্পানির লোকদের নিয়ে আড্ডা করেন। সেই সাথে তারা কমিশন বানিজ্য করেন। তিনি আরও বলেন, যে ঔষধ ২১শ’ টাকা ছিল সেই ঔষধ এখন ২৪শ’ টাকা হয়ে গেছে। আর ২৪শ’ টাকার ঔষধ ৩ হাজার হয়েছে। মানুষ যাবে কোথায়। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আরজু ভূঁইয়া বলেন, বন্দর আওয়ামী লীগের যারা সভাপতি সেক্রেটারি রয়েছেন তারা নিজেদের ব্যনার ফেস্টুনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেক্রেটারির ছবি ব্যবহার না করে অন্য দলের এমপি সেলিম ওসমানের ছবি ব্যবহার করেন। তাদেরকে শোকজ করেন। তারা এত বড় সাহস পায় কোথায়। তাদেরকে শোকজ করে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসেন। তার কথার জবাবে ভিপি বাদল বলেন, আমি তাদের শোকজে স্বাক্ষর দিয়ে গেলাম। আপনারা হাই ভাইকে বলেন। এ সময় বন্দরের মজিবর নামের আরেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজাকারের ছেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করে ব্যানার ফেস্টুন টানান। আপনারা বললে আমি তার নামে লিখিত অভিযোগ দিব। তখন তার কথার প্রেক্ষিতে ভিপি বাদল বলেন, আপনারা সভা করেন সেখানে গিয়ে আমরা বলবো বন্দরের যারা স্বাধীনতা বিরোধী রয়েছে তারা প্রধানমন্ত্রীর ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ব্যবহার করতে পারবে না। অপ্রদিকে এর আগে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে নৌকার দাবী তুলেন জেলা আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ। এমনকি একই দাবীতে সোচ্চার ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ভিপি বাদল। যা এখনো পর্যন্ত তিনি সেই দাবীতে অটল রয়েছেন। এমনকি তিনি আগামীতে সদর-বন্দর আসনে নৌকা দেয়া না হলে বিষ খেয়ে সেই জ্বালা নিভানোর কথা পর্যন্ত বলেন। তার এই মন্তব্যের পরে পুরো শহর জুড়ে আলোচনা হচ্ছে। আবার দলের অনেকেই বলছেন তিনি ঠিক কথাই বলেছেন। তার এমন মন্তব্যের সাথে তারাও এমকত পোষন করেন।