ডান্ডিবার্তা | মার্চ ১০, ২০২৪, ১১:১৫ | Comments Off on সোনারগাঁয়ে নির্বাচনী সহিংসতায় যুবক খুন
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সোনারগাঁ উপনির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে ২ গ্রæপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ১ যুবক নিহত ও পুলিশসহ মোট ২০জন আহত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে সোনারগায়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে ৬৯নং দুধ ঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় পুলিশ ১০ রাউন্ড টিয়ারসেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। নিহত যুবক হলেন, পিরোজপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে এলাকার আমির ভূইয়ার ছেলে হৃদয় (২২)। নিহত যুবক উপনির্বাচনী
প্রতিদ্ব›িদ্ব কায়সার আহম্মেদ রাজুর সমর্থক বলে জানা যায়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন কামাল ভূইয়ার ছেলে ফারুক ভূইয়া (৪৫)। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল থেকেই ভোট গ্রহন চলে। শেষে আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু ৮১১ ভোট পান। এসময় ফলাফল জানার পর ওই কেন্দ্রের
প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে পুনরায় ভোট গননার অনুরোধ করেন। পুনরায় ভোট গননা করে রাজুর পক্ষে এক ভোট যুক্ত হয়। এ নিয়ে রাজুর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। রাজু প্রিজাইর্ডিং কর্মকর্তাকে তৃতীয় দফায় ভোট গননা করতে দাবি করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এক সময় হটাৎ গোলাগুলি শুরু হয়। সংর্ঘষে আজিজ গ্রæপের গুলিতে ১জন নিহতসহ ২ জন আহত হয় বলে জানা যায়। তাছাড়া ভোট কেন্দ্রের ব্যালট বক্সসহ নির্বাচনের সরঞ্জাম ভাংচুর করা হয়। এদিকে নিহত হৃদয়ের মা জানায়, আব্দুল আজিজ আমাদের হৃদয়কে গুলি করে মেরে ফেলেছে। আমার বুক খালি করেছে ওই আজিজ। আমি এই হত্যার বিচার চাই। সংঘর্ষে নিহত হৃদয়ের বড়ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, তারা কায়সার আহমেদ রাজুর সমর্থক। ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় কেন্দ্রের বাইরে তারা অপেক্ষা করছিলেন। ফলাফল ঘোষণার পর আজিজুর রহমান তার লোকজন নিয়ে তাদের উপর হামলা চালান। “আজিজুর ও তার লোকজন গুলিকরছে, ওই গুলিতে আমার ভাই মারা গেছে। আমার বড়ভাই ইকবাল ও চাচাতো ভাই ফারুকও আহত হইছে। ফারুকের গুলি লাগছে, সে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায়।” তবে, যোগাযোগ করা হলে আজিজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কায়সার আহমেদ রাজুর লোকজন পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এ সময় ছোড়া গুলিতে একজন নিহত হন। আমাদের পক্ষের কেউ গুলি করার অভিযোগ মিথ্যা।” পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, “সারাদিন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। ফলাফল ঘোষণার পর যখন নির্বাচন কর্মকর্তারা কেন্দ্র থেকে উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন তখন কেন্দ্রের একপাশে দুইপক্ষের সংঘর্ষে বাঁধে। এক পর্যায়ে তারা নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা কর্মকর্তা ও সদস্যদের উপর ইট-পাটকেল মারতে থাকে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়ে।” এতে পুলিশের অন্তত ১১ জন সদস্য আহত হয়েছেন জানিয়ে এসপি বলেন, “তবে, নিহত ওই যুবক সংঘর্ষের মধ্যে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে তার পরিবারের লোকজন জানিয়েছে। আরও একজন গুলিবিদ্ধ বলে জেনেছি।” এই ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, উপনির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী আজিজুর রহমানকে পিরোজপুর ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান জেলা
নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ।