ডান্ডিবার্তা | মার্চ ১০, ২০২৪, ১১:২৯ | Comments Off on না’গঞ্জের বহুতল ভবনের রেস্তোরা গুলি যেন মরণ ফাঁদ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
রাজধানীর বেইলী রোডে ভয়াবহ আগুনের ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জে ২টি রেস্তোরায় অভিযান চালালেও রহস্যজন্ক কারণে থমকে আছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিস কর্তপক্ষ। নারায়ণগঞ্জ শহরের বহুতল রেস্তোরাঁ ভবনগুলোর ৮৫ শতাংশ যেন বোমা তৈরির কারখানা। নগরীর এত এত রেস্তোরাঁর মধ্যে অগ্নিনিরাপত্তা সনদ আছে
হাতেগোনা কয়েকটির। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি বহুতল ভবনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ রেস্তোরাঁ থাকার কথা থাকলেও মানছে না কেউ। শহরের বালুরমাঠের রেস্তোরা দিয়ে সাজানো প্রতিটি ভবন পুরোটাই ঠাসা রেস্তোরাঁ দিয়ে। ওঠা-নামার একমাত্র পথ লিফট। ভেতরে একটি দুটি সিড়ি থাকলেও কয়েকটির সিড়ি দেখা গেছে দখলে নিয়েছে সিলিন্ডারে। বারান্দা থাকলেও তা কাঁচে ঢাকা। এ যেন পুরোই বোমার কারখানা। একই অবস্থা বিবি রোডের বেশিরভাগ রেস্তোরার ভবনগুলোরও। শহরে প্রকৃত অর্থে কেমন ভবন নির্মাণ হওয়া উচিত? এ প্রশ্নে এক স্থপতি জানান, সর্বোচ্চ ১০ ভাগ রেস্তোরাঁ থাকতে পারবে একটি সুউচ্চ বাণিজ্যিক ভবনে। তিনি বলেন, ভবনে রেস্টুরেন্ট দেয়ার ক্ষেতে একটি মাত্রা নিদির্ষ্ট করে দেয়া উচিত। ১০০ পার্স্টেন্ট কোনোভাবেই নয়। এই কালাচার আমি কোথাও দেখিনি। সা¤প্রতিক বাংলাদেশে শুরু হয়েছে। তাহলে এগুলো দেখবে কারা?
সরকারের কয়েকটি সংস্থা এর তদারকির দায়িত্বে থাকলেও শুধু খাবারে ভেজালবিরোধি অভিযানেই সারা। শহরে এত এত রেস্তোরাঁ থাকলেও ফায়ার সার্টিফিকেট আছে হাতেগোনা কয়েকটি। তার সেই সার্টিফিকেটের দেয়া অধিকাংশ শর্তই এখন মানা হয়না। অন্যান্য সংস্থার অনুমোদনের ধার ধারে না কেউ। স¤প্রতি শহরের কিছু বহুতল ভবনের রেস্তোরাগুলো পরিদর্শন শেষে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারি পরিচালক ফখরউদ্দিন জানান, রুফ আসলে থাকে যেকোন দুর্ঘটনায় মানুষ যদি নিচে নামতে না পারে সে ছাদে দিয়ে আশ্রয় নেবে। আমরা দেখলাম রুফটপ দখল হয়ে গেছে এতে করে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে কেউ ছাদে এসে আশ্রয় নিতে পারবেনা। তিনি বলেন, যদি মানুষ নিচে না নামতে পারে সে উপরে আশ্রয় নেবে এটা কোন প্রতিষ্ঠান দিতে দখল হলে মানুষ আশ্রয় নিতে না পারলে মৃত্যুরসংখ্যা বাড়বে এবং সেটি বেইলি রোডের মতই হবে। এর আগে গত
রোববার বিকেলে শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকার প্যারাডাইজ ভবন, এমডি স্কয়ার, মনির টাওয়ারে এ তদারকি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসকল ভবনে নামীদামী খাবারের দোকানগুলো রয়েছে। অভিযান সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি ভবনে গিয়ে সেখানে দেখা গেছে কোথাও কোথাও অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র নেই, যেগুলো আছে সেগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ, অনেক রেস্টুরেন্টে রান্না ঘরে গাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে, সিড়িতেও পাওয়া গেছে সিলিন্ডার, কয়েকটি ভবনে নেই জরুরি বহিগমন ব্যবস্থা (ইমার্জেন্সি এক্সিট)। এসব বিষয় প্রত্যক্ষ করে দ্রæত এসব বিষয় সমাধানে সময় দিতে সতর্ক করা হয় মালিকদের। অভিযানে অংশ নেয়া নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী জানান, আমরা ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ টিম এ অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকার প্যারাডাইজ ভবন, এমডি স্কয়ার, মনির টাওয়ারসহ
কিছু ভবনে ঘুরে প্রতিটি রেস্টুরেন্ট ও ভবনের ব্যবস্থাপনা পর্যবেক্ষন করি। কোথাও কোথাও অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র নেই, কয়েকটিতে যেগুলো আছে সেগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ। আমরা বলেছি যেন দ্রæত অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র ব্যবস্থা করা হয় এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এখানে আছে তাদের সাথে সমন্বয় করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক রেস্টুরেন্টে রান্না ঘরে গাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা বলেছি যেন নিচে এবং নিরাপদ দূরত্বে গ্যাস সিলিন্ডার রেখে ব্যবহার করা হয় এবং এ ব্যাপারে আমরা
জোর দিয়েছি। কয়েকটি ভবনে নেই জরুরি বহিগমন ব্যবস্থা (ইমার্জেন্সি এক্সিট) সেটিও দ্রæত কিভাবে করা যায় সে ব্যাপারেও দিক নির্দেশনা দিয়ে করতে বলা হয়েছে। তবে এসব অভিযান পরিচালনা করা হলেও এখন পর্যন্ত কোন রেস্তোরা কিংবা ভবনের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থাকোন কর্তৃপক্ষকে নিতে দেখা যায়নি।