তফসীলের আগেই প্রার্থীরা মাঠে
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বন্দর উপজেলার নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক প্রচারণায় নেমে পড়েছে প্রার্থীরা। যারা নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক হওয়া সত্ত্বেও এতদিন ছিলেন পর্দার আড়ালে, এখন তারাও আসছেন প্রকাশ্যে। এবারের নির্বাচনে দলীয় কোন প্রতীক কিংবা সমর্থন না থাকার ঘোষণা আসায় নির্বাচনের প্রার্থী হতে অনেকেই আগ্রহী হতে দেখা গেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। আসন্ন বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার প্রচারণায় যারা এগিয়ে আছেন তাদের মধ্যে আছেন মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও সাবেক দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল। প্রচারণায় আছেন মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ সালাম। এরই মধ্যে প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ানকেও। তবে নির্বাচন নিয়ে বন্দর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এমএ রশিদ ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান নির্বাচন অংশগ্রহণ করবেন বলে জানা গেলেও তাদের তেমন একটা প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। তবে তাদের পক্ষ হতে তাদের ভক্ত ও সমর্থকদের নামে কিছু ফেস্টুন ও ব্যানার দেখা যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে কাজিম উদ্দিন প্রধান চিকিৎসাগত কারণে দেশের বাইরে থাকায় তার পক্ষে সমর্থকরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও তার ভক্তদের পক্ষ হতে জানানো হয়। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এরই মধ্যে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ দলগতভাবে কাউকে সমর্থন দিবে না বলে জানিয়েছে। দলের নীতিনির্ধারকরা উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে দলীয় শৃঙ্খলা এবং নীতিমালার ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা তৈরি করতে চাচ্ছে। যেখানে এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেয়া কোন প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত কোন সংসদ সদস্য সমর্থন দিতে পারবেন না। এমনকি তারা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে কোনো উপজেলা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা বা তার নিজস্ব প্রার্থী এ রকম বক্তব্যও রাখতে পারবেন না। যদি তারা রাখে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানা যায়। তবে সদর-বন্দর আসনের এমপি দলগতভাবে আওয়ামী লীগের সমর্থিত এমপি নন। তিনি জাতীয় পার্টির এমপি হওয়ায় এই নিয়মের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে তিনি বাধ্যও নন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তাই এবারের নির্বাচনেও বন্দরের প্রার্থীদের তালিকায় এমপি সেলিম ওসমান ও তার পরিবারের ভক্ত এবং সখ্য ব্যক্তিদের সংখ্যাই বেশি বলে মনে করছেন তারা। তবে বিশ্বস্ত হিসেবে এই পরিবার কার উপর সহানুভূতিশীল হন তাই এখন দেখার বিষয় বলে জানান তারা। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বন্দরের বিভিন্ন মানুষের সাথে আলাপ করে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ এই পদে এখানকার বর্তমান এমপি ও তার পরিবারের সখ্যতা ছাড়া কোন লোক নির্বাচিত হতে পারেননি। বিশেষ করে আতাউর রহমান মুকুল পরপর দুইবারই এই পরিবারের সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন বলেও জানান তারা। এরপর বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ রশিদও এই পরিবারের সমর্থন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানান তারা। তাই এই নির্বাচনে এই পরিবার কাকে সমর্থন দিবেন তা নিয়েই এখন চলছে আলোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণ। তাদের মতে এই নির্বাচনে বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান এই তালিকায় আছেন বলে জানা যায়। তার কারণ হিসেবে তারা জানান, বন্দরে অনুষ্ঠিত গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই পরিবার তাদের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত কাজিম উদ্দিন প্রধানকে সমর্থন না দিয়ে দেলোয়ার হোসেন প্রধানকে সমর্থন দিয়েছেন। কাজিম উদ্দিন সেই নির্বাচনে বিভিন্ন জটিলতায় বিজয়ী হতে পারেননি। তাই নির্বাচনে তাকে সমর্থন দিয়ে সেই ক্ষত পুরণ করতে পারেন বলে মনে করেন তারা। অন্যদিকে এর আগে এমপি পরিবারের সমর্থন নিয়ে দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মুকুল। সেই প্রতিদানে এবার দল থেকে বহিষ্কৃত হতে হয়েছে বলে মনে করেন তারা। তাই আবারও মুকুলকে সমর্থন দিলে তাতে অবাক হবার মতো কিছুই নেই বলে জানান তারা।