হঠাৎ নিষ্ক্রিয় জেলা বিএনপি!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দেশের সবচাইতে বড় বিরোধী দল বিএনপি বর্তমানে গত ৩ মাস যাবৎ কঠোর আন্দোলণ পরিচালনা চালিয়ে গেছেন। যাকে ঘিরে হামলা-মামলায় জর্জরিত হয়ে পরেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাছাড়া কঠোর আন্দোলন হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে ও গত ৭ জানুয়ারী নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বিএনপি। কিন্তু নির্বাচনের পূর্বে যে নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিলো তার মাধ্যমে জনগণ নির্বাচন কেন্দ্রে যায়নি এই সফলতা অর্জন শুধু রয়েছে বিএনপির তাছাড়া রাজপথের ভূমিকা ছিলো পুরোই ছন্নছাড়া অবস্থায়। এদিকে ১৩ দফা অবরোধ পালনের পর বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচি নির্বাচন বর্জনের দাবিতে লিফলেট বিতরণ পরবর্তীতে বর্জনের দাবিতে সাড়া দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে। লিফলেট বিতরণ, তারেক রহমানের জন্মদিনে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি কম্বল বিরতণ এদিকে গত ২৭ জানুয়ারী ঢাকায় কালো পতাকা কর্মসূচি পালনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাকিদের মধ্যে ছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহম্মেদ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল রাজীবকে তাছাড়া আরো বাকিদের দেখা যায়নি। কিন্তু গত ৩০ জানুয়ারী জেলা, মহানগর, উপজেলায়, থানায় কর্মসূচি পালন হলেও দেখা যায়নি জেলা বিএনপির কোন নেতাকর্মীকে যা নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অপরদিকে এই কর্মসূচি পালনের জন্য প্রেসক্লাবের সামনে মহানগর বিএনপি কালো পতাকা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে সেখানে আগে থেকেই পুলিশ অবস্থান করেন এবং তারা বাধার মুখে পরেন কিন্তু তারপরেও সেই বাধা উপক্ষো করেই কোন রকম কালো পতাকা মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে মহানগর বিএনপি। কিন্তু এই চলমান আন্দোলনে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এই পর্যন্ত ৩ মাস রাজপথে দেখা যায়নি জেলা বিএনপিকে। এছাড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন দীর্ঘদিন যাবৎই রাজনীতি থেকে উধাও ভূমিকা পালণ করে যাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জের এই নেতাদের শুধুমাত্র ঢাকায় বিএনপির ১৬ ডিসেম্বরের কর্মসূচিতে ও দেখা গেছে আবার গত ২৭ জানুয়ারী কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচিতে ও দেখা গেছে। তাছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি প্রশাসনের কঠোরতা কম লক্ষ্য করা গেছে। অনেক নেতাকর্মীকেই জামিন দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বাকি নেতাকর্মীরা ও জামিনের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি একটি জনসমর্থন দল এই দলের হাজারো হাজারো নেতাকর্মী রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এই জেলায় বিএনপির সম্মেলনের পর ২ জনের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির রাজনীতি। আর এই দুইজন বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রয় ভূমিকা পালন করছেন। যা নিয়ে হতাশার ছাপ দেখা মিলছে জেলা বিএনপির মুখে মুখে। সকলের দাবি, কবে হবে জেলা বিএনপি পূর্নাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে বড় আকারে ধারণ হবে আর একজনকে না পাওয়া গেলেও বাকিদের পাওয়া যাবে। এদিকে জানা গেছে, সম্মেলনের পরপরই কেন্দ্রে পূর্নাঙ্গ কমিটির লিস্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখনো তা পূর্নাঙ্গ হয়ে ফেরত আসেনি। নেতাকর্মীরা মনে করছে এটা জেলা বিএনপির একটি ব্যর্থতা। তাছাড়া তারা আবারো রাজপথে কবে সক্রিয় হবে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এদিকে সকল নেতাকর্মী জামিনে বের হয়ে আসছে মহানগর বিএনপি ও জেলা বিএনপির বহু নেতা তাছাড়া অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জামিনে আসলেও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা এখনো আত্মগোপনই রয়েছে। সূত্রমতে, গত ২০২১ সালের ১০ই নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছিলো ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে। সদস্য সচিব হয়েছিলো জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক গোলাম ফারুক। এদিকে কমিটির বাকি যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন, মামুন মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম রবি, শহীদুল ইসলাম টিটু, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, লুৎফর রহমান খোকা, মোশারফ হোসেন ও জুয়েল আহমেদ। এই আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রান ফিরে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির। এই কমিটির মাধ্যমে জেলাজুড়ে বিচরণ সৃষ্টি হয়েছিলো। বিএনপির সকল পর্যায়ের আন্দোলনে জেলা বিএনপির ব্যাপক ভূমিকার দেখা মিলতো। তাছাড়া তাদের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি ইউনিটের কমিটি ও গঠন হতে দেখা গেছে। কিন্তু গত বছরের ১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে দেখা মিলছে জেলা বিএনপির আরেক রূপের। এই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটির বাকি ৭ জন বাদ পরে কমিটি দুই নেতাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে পরে। যাকে ঘিরে কোন ধরনের ভূমিকা তারা রাজপথে দেখা পারছে। সকল আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উপরেই ভর করে আন্দোলন করতেন তার সেই লোক ছিলো বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর। তা ছাড়া তারা কেন্দ্রীয়ভাবে জোর দিয়ে এখনো কমিটি পূর্নাঙ্গ করা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পন্ড হয়ে যাওয়ার পর জেলা বিএনপিকে গত ৩ মাসে আর নারায়ণগঞ্জের রাজপথে লক্ষ্য করা যায়নি। যাকে ঘিরে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন জেলা বিএনপি। অপরদিকে জেলা বিএনপির কমিটিতে থাকা বাকি সদস্যরা যারা আহ্বায়ক কমিটিতে ছিলেন এখনো মূল কমিটিতে স্থান পায়নি তারা পদ-পদবী বিহীন হওয়ায় আর রাজপথে আসতে চাচ্ছেন না। অপরদিকে পূর্নাঙ্গ কমিটির ভাইটাল পদে স্থান পেতে বিএনপির বহু ওয়ান ম্যান শো নেতারা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। যার মধ্য অন্যতম জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা। এদিকে এমন আরো বহু নেতাকর্মী রয়েছে যারা স্থান পেতে ব্যাপকভাবে লবিং করেছেন কিন্তু তারা কেউ এই কঠোর ভূমিকায় রাজপথে ছিলেন না। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন আন্দোলন চালিয়ে মামলা-হামলা থেকে জামিন নিচ্ছেন এখন শুদু দেখার বিষয় জেলা বিএনপির এই দুই নেতা নিজেদের অবস্থান নারায়ণগঞ্জে শক্ত করেন কবে।