রাজপথ বিমুখ জেলা বিএনপি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি রাজপথ থেকে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। যা নিয়ে রীতিমতো দলীয় নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে শুরু করে প্রকাশ্যে নানাভাবে ক্ষোভ ঝাড়লেও কোন ক্ষোভকেই পাত্তা দিচ্ছেন না নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। তা ছাড়া জেলা বিএনপির কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় বর্তমানে এই দুইজনেই বন্দি রয়েছে জেলা বিএনপির রাজনীতি। তা ছাড়া কর্মীরা গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে টানা ৩ মাস যাবৎ কঠোর আন্দোলণ পরিচালনা করলে ও সেখানে জেলা বিএনপির মাঠ পর্যায়ের ভূমিকা বা নির্দেশনা বিত্তিক ভূমিকা ও চোখে পরেনি। এদিকে আন্দোলন করতে গিয়ে মামলায় জর্জরিত হওয়ায় জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের পাশে ও ছিলেন না এই গিয়াস উদ্দিন ও গোলাম ফারুক খোকন। নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা গেছে, বেশির ভাগ নেতাকর্মীদের মামলায় বা গ্রেফতারের পর কারাগারে ও ব্যাপক হারে খোঁজ খবর রেখেছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। তা ছাড়া কঠোর আন্দোলন হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে ও গত ৭ জানুয়ারী নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বিএনপি। কিন্তু নির্বাচনের পূর্বে যে নির্বাচন বর্জনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিলো তার মাধ্যমে জনগণ নির্বাচনে কেন্দ্র যায়নি এই সফলতা অর্জন শুধু রয়েছে বিএনপির তা ছাড়া রাজপথের ভূমিকা ছিলো পুরোই ছন্নছাড়া অবস্থায়। এদিকে ১৩ দফা অবরোধ পালনের পর বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচি নির্বাচন বর্জনের দাবিতে লিফলেট বিতরণ পরবর্তীতে বর্জনের দাবিতে সাড়া দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিফলেট বিতরণ, তারেক রহমানের জন্মদিনে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি কম্বল বিরতণ এদিকে গত ২৭ জানুয়ারী ঢাকায় কালো পতাকা কর্মসূচি পালনে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাকিদের মধ্যে ছিলেন আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহম্মেদ ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল রাজীবকে তা ছাড়া আরো বাকিদের দেখা যায়নি। এদিকে গত ৩০ জানুয়ারী লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিনকে সিদ্ধিরগঞ্জের ১০ মিনিটের জন্য দেখা গিয়েছিলো। পরবর্তীতে টানা ৬ দিনের লিফলেট বিরতণ বিতরণ কর্মসূচি তা ছাড়া গত ৯ মার্চ আরেক দফা লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে ও জেলা বিএনপির নিশ্চুপ ভূমিকা। বর্তমানে রমজানকে ঘিরে মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা সভা অতিবাহিত হচ্ছে তা ছাড়া ও ১০ রমজানের পর পরই মহানগর বিএনপির সম্মেলন নিয়ে চালু হবে তোড়জোড় ভূমিকা। অপর সাইডে জেলা বিএনপি ইফতার পার্টি শুধু নয়, কোন কাজেই তারা অটুট ভূমিকা রাখছেন না। যা নিয়ে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে নেমে আসছে হতাশা তারা বলছে কবে রাজপথে স্বশরীরে দেখা যাবে জেলা বিএনপিকে। সূত্র মতে, গত ২০২১ সালের ১০ই নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সেই কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছিলো ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে। সদস্য সচিব হয়েছিলো জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক গোলাম ফারুক। এদিকে কমিটির বাকি যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন, মামুন মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম রবি, শহীদুল ইসলাম টিটু, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, লুৎফর রহমান খোকা, মোশারফ হোসেন ও জুয়েল আহমেদ। এই আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রান ফিরে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির। এই কমিটির মাধ্যমে জেলা জুড়ে বিচরণ সৃষ্টি হয়েছিলো। বিএনপির সকল পর্যায়ের আন্দোলনে জেলা বিএনপির ব্যাপক ভূমিকার দেখা মিলতো। তা ছাড়া তাদের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির আওতাধীন প্রতিটি ইউনিটের কমিটি ও গঠন হতে দেখা গেছে। কিন্তু গত বছরের ১৭ জুন জেলা বিএনপির সম্মেলনের মাধ্যমে দেখা মিলছে জেলা বিএনপির আরেক রূপের। এই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটির বাকি ৭ জন বাদ পরে কমিটি দুই নেতাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে পরে। যাকে ঘিরে কোন ধরনের ভূমিকা তারা রাজপথে দেখা পারছে। সকল আন্দোলনের কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উপরেই ভর করে আন্দোলন করতেন তার সেই লোক ছিলো বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর। তা ছাড়া তারা কেন্দ্রীয়ভাবে জোর দিয়ে এখনো কমিটি পূর্নাঙ্গ করা সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পন্ড হয়ে যাওয়ার পর জেলা বিএনপিকে গত ৩ মাসে আর নারায়ণগঞ্জের রাজপথে লক্ষ্য করা যায়নি। যাকে ঘিরে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন জেলা বিএনপি। অপরদিকে জেলা বিএনপির কমিটিতে থাকা বাকি সদস্যরা যারা আহ্বায়ক কমিটিতে ছিলেন এখনো মূল কমিটিতে স্থান পায়নি তারা পদ-পদবী বিহীন হওয়ায় আর রাজপথে আসতে চাচ্ছেন না। অপর দিকে পূর্নাঙ্গ কমিটির ভাইটাল পদে স্থান পেতে বিএনপির বহু ওয়ান ম্যান শো নেতারা লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। যার মধ্যে অন্যতম জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা। এদিকে এমন আরো বহু নেতাকর্মী রয়েছে যারা স্থান পেতে ব্যাপকভাবে লবিং করেছেন কিন্তু তারা কেউ এই কঠোর ভূমিকায় রাজপথে ছিলেন না। তা ছাড়া ও আরো বহু নেতাকর্মীরা যারা বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করেই নিজেদের খুঁটি শক্ত রেখেছেন, তারা ও জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আসতে যেন অনেকটাই উঠে পরে লেগেছে। তা ছাড়া ও বর্তমানে সংযমের মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারে আগুণ হলে ও মহানগরে এটার প্রতিবাদে আন্দোলন থাকলে ও জেলাতে আওয়ামী লীগের মতোই নিশ্চুপ ভূমিকা। তা ছাড়া ও রোজার মাসে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংগঠনের রয়েছে ইফতার পার্টি কেন্দ্রিক আলোচনা। কিন্তু জেলা বিএনপিতে এই আলোচনা যেমন ঘুমিয়ে আছে সেই আত্মগোপনতার মতোই।