দুর্বল হয়ে পড়ছে সোনারগাঁ আ’লীগ!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। কারণ সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্বদ্বয় একজন সংসদ একজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন আরেকজন স্থানীয় সাংসদ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্ত থেকে জনগণের প্রতিনিধি হওয়ার প্রাক্কালে তারা যেন ভুলেই গিয়েছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। এখন আবার উপজেলা নির্বাচন সন্নিকটে থাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ঝাঁপে রয়েছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক সংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর থেকে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা নিয়ে মহাব্যস্ত রয়েছেন সংগঠনের কথা ভুলে গিয়েছেন। এক বছরের অধিক সময় পূর্বে ১০টি ইউনিয়নে সম্মেলন করলেও এখনো ওয়ার্ড কমিটি ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে পারেনি। এদিকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জেলা কমিটির কাছে প্রস্তাব করলেও সে অনুযায়ী জেলার নেতারা কমিটি অনুমোদন না করায় জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অনুমোদিত কমিটিকে পাশ কাটিয়ে কেন্দ্রিয় নেতাদের কাছে নালিশ দেন সোনারগাঁ উপজেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির জটিলতা নিরসণ না করলেও উপজেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের দেয়া প্রস্তাবিত কমিটির পদই ব্যবহার করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে উপজেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সময়ে ভুলে গিয়েছেন সংগঠনের কথা, জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়ে রয়েছেন মহাব্যস্ত। সূত্র বলছে, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোনারগাঁ আসনের সাংসদ। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কায়সার সাংসদ হলেও নির্বাচনের পর জনপ্রতিনিধি হিসেবেই শুধু কাজ করে যাচ্ছেন। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ নামক একটি পদে রয়েছেন সেটি তিনি যেন ভুলে গিয়েছেন। এদিকে তার সাথে তাল মিলিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া জনপ্রতিনিধিত্ব ও পুনরায় চেয়ারম্যান হওয়া নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন সেটা তিনি ভুলে গিয়েছেন। তবে তারা পদের যথার্থ ব্যবহার করলেও তাদের পদের যে দায়িত্ব রয়েছে সেটা তারা ভুলে যাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় অতিক্রম করেও সংগঠনের দায়িত্বে থেকে সংগঠনের জটিলতা নিরসরণ বা সংগঠনকে বর্ধিতকরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। যেমন ২০২৩ সালের প্রথম দিকে সোনারগাঁ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের সম্মেলন করে ওয়ার্ড কমিটি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন পরবর্তীতে ইউনিয়ন কমিটি করার। এভাবে দীর্ঘসময় অতিক্রম করার পর ওয়ার্ড ইউনিয়ন কমিটি গঠন করতে না পেরে দীর্ঘ ৯ মাস পর গত ৫ মে ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের জন্য জেলা কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়। ২০২৩ সালের ৪ জুলাই রাতে দীর্ঘ ২৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের যৌথ স্বাক্ষরে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর এই কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠান সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের একটি পক্ষের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির ১৮ জনকে বাদ দিয়ে কমিটি চূড়ান্ত করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। এর জেরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক চূড়ান্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এরপর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন চলে আসায় কমিটি নিয়ে কোন রকম আলোচনা না হলেও নির্বাচনের পরবর্তীকালে এখনো সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনের জটিলতা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিমত, পদ দখল করে শুধু পদের ব্যবহারই করছেন। কিন্তু সংগঠনের জন্য কোন রকম সুফল বয়ে আনতে পারছেন না। শুধুমাত্র নিজেদের রোটিং ওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেটাই দেখাচ্ছেন সংগঠনের নেতাদের সংগঠনের সৃষ্ট জটিলতার বিষয়ে কোন প্রকার মুখ খুলছেন না তারা।