মই উদ্যোক্তা হাজতে থাকলেও বন্ধ হয়নি ডিভাইডার টপকানো!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সম্প্রতি সময়ের বেশ আলোচিত ঘটনা ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশে টাকার বিনিময়ে মই দিয়ে ডিভাইডার পার করা। চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা রবিউল নামের এক যুবক মহাসড়কে বিপদগ্রস্ত যাত্রীদের দ্রুত গতির লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে পার করা বাবদ ৫ টাকা করে নিয়ে মই দিয়ে পারাপার করে আসছিল। দুই-তিনদিন ঠিকঠাক মতো করতে পারলেও ১৭ মার্চ ঘটনাটি চোখে পড়েন নেটিজেনদের। ভিডিও করে কয়েকটি ফেসবুক অ্যাকউন্টে ছাড়ার পরই দেশব্যাপী ভাইরাল হয় তার মই ব্যবসার বিষয়টি। তখন অনলাইন প্লাটফর্মে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। দেশের বেসরকারি টেলিভিশন ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে একাধারে নিউজ ছাপানো হলে চাপে পড়ে তাৎক্ষণিক মই ব্যবসায়ী খ্যাত রবিউলকে আটক করে মামলা দেন হাইওয়ে পুলিশ। ১৮ মার্চ থেকে গেলো দুদিন যাবত নারায়ণগঞ্জ জেল হাজত খানায় আছেন আলোচিত সেই ২৬ বছর বয়সী রবিউল। কিন্তু তার ব্যসায় বন্ধ হলেও এখনো বন্ধ হয়নি ডিভাইডার টপকে মানুষ পারাপার। টাকার বিনিময়ে মইহীন হলেও কষ্ট করেই পারাপার হচ্ছেন অসংখ্য পথচারী। পুলিশের করা নজরদারিও মানছে না অসচেতন মানুষেরা। জনস্বার্থে সরকার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে রুপান্তর করেছেন। এর সুফলও ভোগ করছে জনতা। দূরপাল্লার পরিবহনের যাতায়াত নির্বিঘœ করতে সড়কের চার লেনের মধ্যকার মাঝখানের দুটি লেন আলাদা করা হয়েছে। সুবিধর্থে দেওয়া হয় উঁচু ডিভাইডার। আঞ্চলিক যানবাহনগুলোর বিভিন্ন স্টপেজ থাকায় দুই পাশে রাখা হয়েছে দুটি লেন। এদিকে চিটাগাংরোডস্থ অংশে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা ডিভাইডার বসানোর আগ মূহুর্তে দূরপাল্লার লেন থেকে আঞ্চলিক লেনে যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য সওজ কার্যালয়ের সামনে একটি গেট খোলা রাখা ছিলেন। পরিবহন চালকদের অসচেতনা আর যানযট সৃষ্টি করার ফলে দুই মাস ধরে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে, দূরপাল্লার বাসগুলো শিমরাইল মোড়স্থ সেই আগের স্থানেই যাত্রী নামিয়ে দেন। গেট বন্ধ থাকায় ৪ ফুট উঁচু ডিভাইডার পার হয়ে লেনে পরিবর্তন করতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। শিশু-বৃদ্ধ-নারী-পুরুষ উভয়েই উঁচু ডিভাইডার ডিঙিয়ে আঞ্চলিক লেনে যান। এদিকে সেদিন থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত শিমরাইল অংশে হাইওয়ে পুলিশের করা নজরদারি রয়েছে। কিন্তু পুলিশের অনুপস্থিতি দেখলেই যেইসেই। যা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও। সরেজমিনে গিয়ে এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে। সোমবার থেকে আজ দুপুরে পর্যন্ত মহাসড়কের মাঝে যাত্রী নামানোর অভিযোগে ১’শর অধিক পরিবহনকে মামলা দেন হাইওয়ে পুলিশ। তাতেও কমছে না ডিভাইডারের পারাপার। ঝুঁকি নিয়ে ডিভাইডার টপকে পারাপারকালে কথা হয় কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিভাইডার টপকানের কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তারা জানিয়েছেন, বাস চালকরা সড়কের মাঝখানে নামানোর কারণে তারা নিরুপায় হয়ে এভাবে পার হচ্ছেন। অন্যথায় কেউ নিজের ইচ্ছায় কষ্টসহ করে পার হতে যাবে না বলেও জানান। এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে শিমরাইল ক্যাম্পের ইনচার্জ একেএম শরিফউদ্দিন বলেছেন, মহাসড়কের মাঝে যাত্রী নামানোর অভিযোগ এখন পর্যন্ত ১০৪ টা পরিবহনকে মামলা দিয়েছি। সারাক্ষণ পাহারা দিয়ে যাচ্ছি তবুও মানুষজন অসচেতনভাবে আমরা একটু একদিক থেকে অন্য দিক গেলেই টপকে পদর হয়। সর্বদা চেষ্টা করে যাচ্ছি এটা বন্ধ করার। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। আমরা ও পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার পরিবহনগুলোকে সার্ভিস লেন দিয়ে চলাচলে বাধ্য করা হলেও তারা তা শুনছে না। আর ডিভাইডারের একটি অংশ ফাঁকা রাখা হলে ওই স্থানে দূরপাল্লার যানবাহনগুলো স্ট্যান্ড বানিয়ে যানজটের সৃষ্টি করবে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি শিগগিরই ডিভাইডারের কাঁচপুর থেকে কুয়েত প্লাজা অংশ পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হবে। যেনো মহাসড়কে মধ্যে বাসচালকরা আর যাত্রী নামাতে না পারেন।