আন্দোলনের বিকল্প নেই বিএনপির
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নির্বাচনের আগে বছরজুড়ে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সরব ছিল বিএনপি। তবে ২৮ অক্টোবরের পর থেকে অনেকটাই খেই হারায় সেই আন্দোলন। এর পরের তিন মাস আর বড় কোনো কর্মসূচিতে যায়নি বিএনপি। এর মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে নতুন সরকার গঠনের পর আবার মাঠে ফিরছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার কালো পতাকা মিছিল করেছে মহানগর বিএনপি। তবে দলটির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করার আগেই পুলিশি বাধার মুখে তাদের কর্মসূচী পন্ড হয়ে যায়। এর আগে দফায় দফায় সরকার পতনের ঘোষণা দিয়ে সফলতা না পাওয়া, কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা আছে। তবে নির্বাচনের বিরতির পর নারায়ণগঞ্জে কালো পতাকা মিছিলে বেশ ভালো নেতাকর্মীর সমাগম হয়েছে। নেতাকর্মীরা বলছে হতাশা থাকলেও আন্দোলনের বিকল্প নেই তাদের। তেমনই একজন মশিউর রহমান রনি। মঙ্গলবার বিকালে শহরের প্রানকেন্দ্র চাষাড়া শহীদ মিনারের সামনে কথা হয় যুবদলের এই নেতার সঙ্গে। মশিউর রহমান রনি বলেন, ‘সবার মধ্যে হতাশা আছে। কিন্তু আবার সবাই নিরুপায়ও। যেভাবে মামলা হামলা করা হছে, তাতে করে দলের নেতাকর্মীদের কাছে আন্দোলন করে জয়ী হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। মিথ্যা মামলার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের না পেলে বৃদ্ধ বাবা, চাকরিজীবী কিংবা প্রবাসী বড় ভাইদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কাজেই সবাই বুঝে গেছে এই নির্যাতন থেকে বাচার একটাই রাস্তা, সরকারের বিদায়। যার কারণে দল কর্মসূচি দিলেই সবাই সাড়া দিচ্ছে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাঁওয়াত হোসেন খাঁন বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় দুই হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দলীয় কর্মসূচী পালন করে আসছিল দলটি। সরকার পতনের দাবিসহ এক দফা দাবিতে আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচী পালন করে আসছিলেন। এমন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর নেতৃত্বে সরকার বিরোধী আন্দোলন পালন করেছে জেলার নেতৃবৃন্দ। আত্মগোপনে থেকে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালন করে আসছিল দলটির নেতৃবৃন্দ। নির্বাচনের পর আবার দৃশ্যপটে আসতে শুরু করেন তারা। এসব নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে হতাশা-সমালোচনা আছে। নির্বাচন সামনে রেখে সরকার একটা ক্র্যাকডাউন চালিয়েছে মন্তব্য করে জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘মিথ্যা মামলা দিয়ে গণগ্রেপ্তার চালানোর পরেও আমাদের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করেছে। পরে ধীরে ধীরে মিছিলগুলো বড় হয়েছে। সরকার যে আচরণ করেছে এর জবাব দিতে গেলে সিভিল ওয়ার করতে হতো। আমরা তো সিভিল ওয়ার চাইনি। তবে নির্বাচনী পরবর্তী নীরবতায় বিএনপি লাভবান হয়েছে বলে মনে করেন এই নেতা। বিএনপিতে হতাশা আছে বলে মনে করেন না জানিয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এত কিছুর পর শহরে থেকে হাজারো মানুষের মিছিল নিয়ে যোগ দিয়েছি। এমনি করে সব এলাকা থেকে এসেছে। হতাশা থাকলে তো এমনটা হতো না। আমরা হতাশ নই, কর্মীরাও হতাশ নয়। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের নেতৃত্ব দেয়াকালীন সময়ে মহানগর বিএনপির আহ্বাক এড.সাখাওয়াত হোসেন খাঁন বলেন, আমরা এই অবৈধ সংসদ ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবি জানাচ্ছি। আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির চাই। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সকল নেতাকর্মীদের মুক্তি চাই। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আমরা এই ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি। অবিলম্বে খালেদা জিয়াসহ আমাদের সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানান তিনি।