আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:০৭

অটোরিকশার ফাঁদে নগরবাসী

ডান্ডিবার্তা | ২৩ মার্চ, ২০২৪ | ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জবাসীর জীবন যাত্রার মান উন্নয়নসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে গোল টেবিল বৈঠকে বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে ফুটপাত এবং ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রনে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছিল। এরমধ্যে আপাতত হকার সমস্যা কিছুটা সমাধান হলেও শহরের সড়কগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা প্রতিরোধ করা হবে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এমন ঘোষনা দেয়া হলেও মূলত অবৈধ অটোরিকশা শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে প্রবেশ বন্ধে কার্য্যকর তেমন ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পরে শহরের ফুটপাতে হকাররা তেমন ভাবে বসতে না পারলেও অটো মিশুক প্রবেশ করছে। তবে রমজানের শুরুতে অটোর ব্যাপারে কঠোর থাকলেও এখন কিছুটা শিথিলতায় রয়েছে। অথচ অভিযোগ রয়েছে অটো গ্যারেজ গুলোতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে থাকে। কেননা এই অটো মিশুক ইজিবাইক গুলো গ্যারেজে রেখে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে থাকে বেশির ভাগ গ্যারেজ মালিকরা। এদিকে ফেব্রুয়ারি গোলটেবিল বৈঠকে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক অটো গ্যারেজ গুলোর প্রতি কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, শহরে কোন ভাবে ব্যাটারি চালিত অটো, মিশুক, ইজিবাইক প্রবেশ করতে পারবে না। তারা যদি এই নির্দেশনা না মানে তাহলে অটো গ্যারেজ গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডিসির কঠোর হুশিয়ারির পরেও এখনো অবাধে শহরে অটো প্রবেশ করছে। এছাড়া ডিসি অভিযানের কথা তা ঘোষনায় সিমাবদ্ধ রয়েছে। কেননা দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত অটো গ্যারেজ গুলোতে কোন অভিযান হয় নাই। কবে নাগাত হবে তাও জানেন না নগরবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের কাশিপুর ইউনিয়নে অটোক, মিশুক গ্যারেজ রয়েছে ২৫০টি, এছাড়া ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, গোগনগর সহ প্রায় ৭শ’ অটো গ্যারেজ রয়েছে। যে গুলোতে ডিপিডিসির মিটার রিডার মাধ্যমে বিদ্যুৎ চুরি করা হয়ে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাতদিন অবৈধ লাইন দিয়ে অটোগাড়ির ব্যাটারি চার্জ করা হয়। বিভিন্ন শিফটের চালকরা চার্জ করা অটোগাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হন। এক বেলা শেষে ফের গাড়ি জমা করতে হয় গ্যারেজে।’ এটাই এখন নারায়ণগঞ্জের বাস্তব চিত্র। আগে রিকশা রাখা হতো। এখন পরিবর্তন ঘটেছে সবকিছুর। মহল্লায় মহল্লায় চার্জের অটোগাড়ির গ্যারেজ তৈরি হয়েছে। রিকশা ছেড়ে মালিকরা এখন অটোগাড়ির ব্যবসা ধরেছে। এ গাড়িতে উপার্জন হয় বেশি। চার্জ দিতে অটো গ্যারেজে বিদ্যুৎ বিল লাগে না। দুয়েকটা গাড়ির বিল দিয়ে বাকিগুলোর বিল চুরি করা হয়। অটো গ্যারেজ মালিকের সঙ্গে মিটার রিডার ও বিল বিলিকারকদের দহরম মহরম সম্পর্ক। মিটার রিডাররা নিয়মিত মাসোহারা নেওয়ায় তারাও একবারেই নিশ্চুপ। প্রশাসনের কারো এ ব্যাপারে বাড়তি কোনো নজর নেই। গ্যারেজ মালিকরা ছয়-নয় করে বিদ্যুৎ বিল মেরে দেয়। সেই টাকা দিয়ে নতুন বা চোরাই অটো কিনে আয় বাড়ায়। সরকার দিনের পর দিন বিদ্যুতের বিল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর বিপরীতে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব চলছেই। কাশিপুর এলাকার কয়েকজন বাড়ির মালিক জানান, ‘এলাকায় অনেকগুলো রিকশার গ্যারেজ রয়েছে। অনেকে বংশ পরম্পরায় রিকশার ব্যবসা করে আসছেন। এরা অধিকাংশ প্যাডেল রিকশায় মোটর সংযুক্ত করে দৈনিক জমা বৃদ্ধি করেছেন। এতে তাদের আয় বেড়েছে। তবে বিপদ হয়েছে আমাদের। আমাদের বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। মহল্লায় রিকশার গ্যারেজগুলো অটোর গ্যারেজে রূপান্তরের পর থেকেই আমাদের বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। মিটার রিডারকে প্রশ্ন করলে তারা আজগুবি কথাবার্তা বলেন। কখনো বলেন, পুরনো বিল এডজাস্ট হচ্ছে। কখনো বলেন, ভূতুড়ে বিল। এর সঙ্গে কম্পিউটারের ভুলের কথা তো আছেই। আসলে মহল্লার অটো গ্যারেজগুলোতে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে। অটো গ্যারেজের সেই চুরির খেসারত দিতে হয় মহল্লার অন্যান্য সাধারণ গ্রাহকদের। চুরি যাওয়া বিদ্যুৎ বিলের কিছু অংশ মহল্লার সবার মধ্যে বাটোয়ারা করে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাবুরাইলের একটি অটোগ্যারেজের ম্যানেজার জানান, মাসদাইর গুদারাঘাট, ঘোষেরবাগ, দেওভোগ পানির ট্যাংক, নাগবাড়ী, মাদ্রাসার শেষমাথা, বাঁশমুলি, গাইবান্দা বাজার, বারৈভোগ, ভোলাইল বাজার, গেদ্দারবাজার, কাশীপুর দেওয়ানবাড়ী, খিলমার্কেট, হোসাইনীনগর, ভূঁইয়াপাড়া, বউবাজার, ১নং বাবুরাইল শেষমাথা, আমবাগান, হাকিম কন্ট্রাক্টারের মাঠ, বাংলাবাজার ও আশপাশ এলাকায় শতাধিক অটোগ্যারেজ রয়েছে। এসব গ্যারেজে কমপক্ষে ২ হাজার অটোগাড়ি দিনরাত চার্জ দেওয়া হয়। রাস্তায় তিন শিফটে এসব গাড়ি চলে। গ্যারেজ গুলোতে বৈধ মিটার থাকলেও অবৈধ লাইন টেনে অটোগাড়ি চার্জ করা হয়। ফলে গ্যারেজের বৈধ মিটারে বিল আসে একেবারেই একটা টোকেন মানি। অটো গ্যারেজের বিদ্যুৎ চুরির খেসারত দিতে হয় আশপাশের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। গ্যারেজে যতটুকু বিদ্যুৎ চুরি হয় তার অর্ধেকই ঐ মহল্লার সাধারণ গ্রাহকদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়। মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে এলেই গ্যারেজের মহাজন বিল বিতরণকারীর হাতে গুঁজে দেন মোটা অংকের টাকা। অটো গ্যারেজ মহাজন ও বিদ্যুৎ বিল বিতরণকারীর মধ্যে অলিখিত চুক্তি রয়েছে। ওদের চুক্তিতে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে। তাই নগরবাসী দাবী তুলেছেন জেলা প্রশাসকের ঘোষনা অনুযায়ী অটো গ্যারেজ গুলোতে অভিযান চালানো হয়।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা