নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছেনা হকাররা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বঙ্গবন্ধু সড়কে দুপাশের ফুটপাতগুলো আবারো হকারের দখলে। সেই চিরচেনা রূপে ফিরে এসেছে নগরী। এতে হতাশ এবং ক্ষুব্দ সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। তিনি বলেন, এতো কিছুর পরও এই বঙ্গবন্ধু সড়কে যদি হকাররা বসেই। তাহলে আর করার কি আছে? হকারদের জন্য অনেক বড়-বড় পরিকল্পনা করা হয়েছিলো, সেগুলোর অবস্থা কি হবে? দীর্ঘ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জের বিষফোঁড়া হলো ফুটপাতে হকার ও নগরীর তীব্র যানজট। তিনটি থানা, দুটি সংসদীয় আসন ও সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে গঠিত মূল শহর। নাগরিক ও সামাজিক সমস্যা সমাধান করতে এক টেবিলে বসেছিলেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, সদর-বন্দর আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাদের একত্রিত হওয়ায় নগরী যেনো আশীর্বাদপূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকেই প্রথমবার দেখেছে যুগ পর যুগ দখল করা ফুটপাতের নতুন চেহারা। একই রকম ভাবে পবিত্র রমজান মাসে নগরীর মানুষের অসুবিধা এড়াতে, দানবীর খ্যাত এমপি সেলিম ওসমান তত্ত্বাবধায়নে যানজটমুক্ত রাখতে, পুলিশ সুপারের কাছে ৪৫লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। মেয়র, দুই এমপি ও প্রশাসন যানজট মুক্ত ও ফুটপাত মুক্ত নগরীতে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও, বিপাকে পরে হকাররা। নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, প্রেসক্লাবের সামনে ও নগর ভবনসহ এসএসপি পরীক্ষা চলাকালেও বঙ্গবন্ধু সড়ক অবোরোধ করে আন্দোলন করে তারা। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে মেয়র,এমপি ও প্রশাসন একসাথে আলোচনা করে মানবিক বিবেচনায় হকারদের জন্য ‘হলিডে মার্কেট’র সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। হকারদের পরিবারের কথা বিবেচনা করে ও সাধারণ মানুষের বেচা-কেনার সুবিধার্থে সপ্তাহের দুইদিন শুক্র ও শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত, চাষাঢ়া খাজা মার্কেটের সামনে থেকে শুরু করে মিশনপাড়া, ডনচেম্বার ও মেট্রো হল সড়কের একপাশে ‘হলিডে মার্কেটে’র কার্যক্রম চলমান থাকবে। যাতে করে কোন ভাবে বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত দখল না থাকে। দীর্ঘ দিনের অভিশপ্ত পথের কাঁটা হকার মুক্ত হলেও কিছু কিছু জায়গায় হকার প্রশাসনের মধ্যে ‘চোর পুলিশ’র খেলা চলছে। তবে বেশ কয়েকদিন যাবত নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে ডিআইটি, ২ নাম্বার গেটসহ প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতে ফের বসতে শুরু করেছে হকার। দিনের বেলা টুকটুক দেখা মিললেও সন্ধ্যা থেকে রাত অব্দি প্রায় অধিকাংশ সড়ক থাকে হকারদের দখলে। শুক্র-শনি হলিডে মার্কেট থাকলেও বঙ্গবন্ধু সড়কেও থাকে হকারের জমজমাট ব্যবসা। এদিকে হকারদের সাথে আলোচনা করে তাদের জন্য ‘হলিডে মাকের্ট’র ব্যবস্থা করলেও বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করায়, মনক্ষুন্ন হয়েছে সদর-বন্দর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সেলিম ওসমান। হকারদের নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করলেও তাদের এমন আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। এতোকিছুর পরও হকাররা মর্মাহত করেছেন এমপি সেলিম ওসমানকে। কিডনী সংক্রন্ত জটিলতার কারণে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে। চিকিৎসা শেষে সরাসরি ওমরাহ হজ্জ পালনের রওনা হয়েছেন সদর-বন্দর আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। হকাদের এমন আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুঠোফোনে সেলিম ওসমান জানান, যে হলিডে মার্কেট করা হলো, সবার সাথে আলাপ-আলোচনা করা হলো এবং আলোচনা করার পর একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা হলো। বারবার মিটিং করলাম। এরপরেও যদি এই বঙ্গবন্ধু সড়ক এবং ডিআইটিতে ২ নাম্বার গেট থেকে হকাররা যদি বসেই। তাহলে এসব করার কি আছে? হকারদের জন্য অনেক বড়-বড় পরিকল্পনা করেছিলাম এবং সেগুলির অবস্থা কি হবে? আমার এখন কি করার আছে? গতকাল শনিবার হকারদের এরূপ আচারণে এক প্রতিক্রিয়ায় সদর-বন্দর আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেন, বারবার মিটিং করা হলো, হকারদের জন্য হলিডে মার্কেট করা হলো। আমরা সবাইকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছি, এরপর একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা হলো। এরপরেও যদি এই বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসে তাহলে আর কি করার আছে। এই সমস্যা সমাধানের এতো বাবে চেষ্টা করার পরও আর কি বাকি থাকে। হকারদের জন্য অনেক বড়-বড় পরিকল্পনা করা হয়েছিলো, এখন সেগুলোর অবস্থা কি হবে? শুধু মাত্র ঈদকে সামনে রেখে রুজি-রুটির কথা চিন্তা করে হকারদের নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলো হলিডে মার্কেট। সেলিম ওসমানের শর্ত মেনে হকাররা বসতে রাজি হয়েছিলো নগরীর নবাব সলিমুল্লাহ সড়কে। তবে কিছু দিন গড়াতেই শর্ত মানছে না হকাররা। বঙ্গবন্ধু সড়কের ডিআইটি, ২নং গেটসহ আশেপাশের এলাকায় ফুটপাত দখল করে আবারও চলছে বেচা কেনা। ঈদ যতো সামনে আসছে বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার ততোই বাড়ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নগরবাসী। হকারদের প্রতি নমনীয়তা নয় শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে হবে বলে পরামর্শ সচেতন মহলের।