আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:৩৫

আ’লীগের কোন্দলে ঘী ঢালছে কারা?

ডান্ডিবার্তা | ২৫ মার্চ, ২০২৪ | ১২:২৮ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমশ প্রকাশ্য রূপ ধারণ করেছে। স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এমনকি প্রেসিডিয়ামের সদস্যরা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। আর এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার কারণে প্রকাশ্যে একে অন্যের সমালোচনা করেছেন। আওয়ামী লীগের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কেন্দ্রের ইন্ধন রয়েছে বলেও অনেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন যে, কোন্দল জিইয়ে রাখা এবং দুটি গ্রুপকে সমান্তরাল ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করার নীতি নিয়ে কেন্দ্র এগোচ্ছে। যার ফলে জেলায় জেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং দ্বন্দ্ব জবাবদিহিতার বাইরে চলে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জসহ এ কোন্দল সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। রাজশাহীর কথাই ধরা যাক। রাজশাহীতে সিটি করপোরেশনের মেয়র আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন। আর অন্যদিকে খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধ পক্ষ হিসেবে যারা পরিচিত, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আব্দুল ওয়াদুদ। আব্দুল ওয়াদুদকে সাম্প্রতিক রাজশাহীতে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার কারণে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে এবং এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পরিচালনা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছিলেন, যিনি খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধ পক্ষ হিসাবে পরিচিত। আর অন্যদিকে এই সংবর্ধনা পর পরই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রকাশ্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রীর সমালোচনা করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, যে জায়গায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে মিলাদ দিয়ে সেই জায়গাকে পবিত্র করা হবে। ঈদের পরে মাওলানাদের ডেকে এনে দোয়া-কলম পড়িয়ে সেই স্থান পবিত্র করার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহীর মেয়র। আব্দুল ওয়াদুদ এবং খায়রুজ্জামান লিটন দুজনই রাজশাহীর সন্তান। দুজনই আওয়ামী লীগ করেন এবং দুজনই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। অথচ এই দুজনের এই বিরোধ রাজনীতিতে এখন আলোচনার বিষয়। অনেকে মনে করেন যে, এই বিরোধ উস্কে দেওয়ার জন্য আব্দুল ওয়াদুদকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটি করা হয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামানকে ‘টাইট’ দেওয়ার জন্য। এই ‘টাইট’ দেওয়ার প্রবণতার কারণেই সারা দেশে আওয়ামী লীগের কোন্দল বেড়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে, খুলনায় এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পরিবর্তন করা হয়েছিল। মন্নুজান সুফিয়ানকে বাদ দিয়ে এস এম কামাল হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এখানেই ঘটনার শেষ হতে পারতো। কিন্তু মন্নুজান সুফিয়ানকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়। এখন খুলনায় আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। এক নেতা অন্য নেতার প্রকাশ্য সমালোচনা করছেন। এরকম পরিস্থিতি দেশের অনেক জায়গাতেই। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের নেতারা দুই পক্ষকেই দুইভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন। আমরা যদি বরিশালের দিকে তাকায় সেখানে দেখব যে, প্রথমে শাম্মী আহমেদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শাম্মী আহমেদ এর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক। অন্যদিকে নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে দাঁড়ান পঙ্কজ দেবনাথ। পঙ্কজ দেবনাথ নির্বাচিত হওয়ার পর শাম্মী আহমেদকে আবার নারী সংসদ সদস্য হিসেবে সংসদে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতায় টইটুম্বুর বিরোধ জিইয়ে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সারা দেশে বিদ্যমান দুই পক্ষের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে বিরোধ মীমাংসার নীতির বদলে দুই পক্ষকেই পৃষ্ঠপোষকতার নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে। এর রাজনৈতিক তাৎপর্য কি তা নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেককে মনে করেন, এটি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটি কৌশলগত অবস্থান। কারণ একাধিক গ্রুপ থাকলেও দলের কর্মী বাড়বে, দলের ভেতর কর্মকা- থাকবে, একে অন্যের খোঁচা খুচি করে শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মকা-ের মধ্যে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখবে। এটি একটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কৌশল। অনেকে মনে করছেন যে, এর মধ্য দিয়ে কাউকে একচ্ছত্র নেতৃত্বের লিজ দেওয়ার নীতি থেকে আওয়ামী লীগ সরে এসেছে। দলের ভেতর একটা চেক এন্ড ব্যালেন্স তৈরি করা হয়েছে। আর যার ফলে প্রতিটি এলাকায় একজন করে বিকল্প নেতা তৈরি করা হয়েছে। নেতা এবং বিকল্প নেতার মারামারি এখন আওয়ামী লীগে স্বাভাবিক চিত্র। এটাই যেন আওয়ামী লীগের নিয়তি। পিরোজপুরে যেমন শ ম রেজাউল করিম আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছেন। কিন্তু সেখানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব মাওলানা আউয়াল এর হাতে। সারা দেশে এভাবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই জিইয়ে রেখেছে। এখন দেখার বিষয় আওয়ামী লীগের এই কৌশল কতটা সুফল দেয়, কতটা আত্মঘাতী।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা