আ’লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি করতে তৎপর
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার লক্ষ্যে খোদ জেলার সভাপতি আব্দুল হাই এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল তৎপর হয়ে উঠেছেন। তবে সম্মেলিত ভাবে নয় এই দুই নেতার পছন্দের লবি উত্তর-দক্ষিণ বলয়ের নেতাদের নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন। আর কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক বিভিন্ন সভায় আলোচনা করছেন জেলার সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল এবং জেলার নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের দারস্থ হয়ে কমিটি দ্রুত অনুমোদনের জন্য তাগিদ দেয়ার জন্য আহ্বান জানান। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে দেখা করেন। সে সময় জেলা সভাপতির হাতে একটি কাগজ দেখা যায় জেলার নেতাদের ধারণা জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়েই তিনি আলোচনা করছেন। যার কারণে জেলার নেতাদের দাবি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার লক্ষ্যে উঠে পড়ে লেগেছেন হাই-বাদল। দলীয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সম্মেলনের দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ২০২৩ সালের ১৮মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রে জমা দেন। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল দীর্ঘ ছয় মাস পর ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রস্তাবিত কমিটি পৃথক কমিটি জমা দেন। তাদের পৃথক পৃথক কমিটির জমা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রের নির্দেশনা রয়েছে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে সমন্বয় করে কমিটি দেয়ার জন্য। তবে সমন্বয় করে কমিটি জমা হয়েছে কিনা সেটা খোলাশা না হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের ভাষ্য কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়া আছে কেন্দ্রে যেকোন সময় কমিটির অনুমোদন দিতে পারে। জেলা আওয়ামী লীগের পৃথক পৃথক ৭৫ সদস্য বিশিষ্ট প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়ে দায় এড়ালেও এখনো সে কমিটি অনুমোদিত না হওয়ায় পড়েছেন বিপাকে। যার কারণে সাম্প্রতিককালে কমিটি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল নানা রকম মন্তব্য করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল বলেছেন, মদনপুরের কমিটি নেই গোগনগরে কমিটি নেই আমার থাইকা লাভটা কী? হাই সাহেবের কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেন আমি দিয়ে দিব। জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই চলেন সবাই মিলে আমরা কেন্দ্রে যাই। কবে কতদিনের মধ্যে কমিটি হবে সেটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সদর-বন্দর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয় নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই আসনে বড় ক্ষোভ ছিল। কেননা ভুল আমাদের ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী কাছে ব্যর্থ হয়েছি। আওয়ামী লীগের জন্মভূমি নারায়ণগঞ্জ এই আসনে নৌকা মার্কার প্রার্থী থাকবে না এটা কোন কথা। ঠিক এভাবেই জেলার সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান রাজনীতি নিয়ে আক্ষেপ করেন। অপরদিকে গত ২০ মার্চ দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণভবনে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। তবে এক সাথে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দুইজনের সাক্ষাতের ছবি প্রকাশ পেলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেছেন এই সাক্ষাৎকার ব্যক্তিগত। গুঞ্জন রয়েছে যে কোন সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা করা হবে। এই গুঞ্জনের মধ্যে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও আব্দুল হাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কমিটি নিয়ে তৎপরতার কারণে নেতাকর্মীরা দাবি করছে, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার স্বার্থে এবার টনক নড়েছে জেলা আওয়ামী লীগের।