ব্যর্থতা নিয়ে ছাত্রলীগের বিদায়
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট দীর্ঘ ৭ বছর যাবৎ পাহাড় সমান ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে অবশেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি থেকে ঝড়ে পরলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল। গত ২২ মার্চ ছাত্রলীগের দলীয় প্যাডে কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিম ইনানের স্বাক্ষতির বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সাবেক কমিটির মাধ্যমে জেলা ছাত্রলীগের ইউনিট কমিটি থেকে শুরু করে দলীয় কোন সাংগঠনিক কার্যক্রমে বার বারই অনীহা প্রকাশ করেছেন এই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। জানা গেছে, কমিটি গঠনের পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর গড়া পবিত্র ছাত্র রাজনীতিকে অপবিত্রতার দায় বহন করতে হয়েছে এই আজিজ ও রাফেলের নানা অপকর্মের কারণে। এমনকি তারা পদে এসে সংগঠন নয় তাদের নিজের স্বার্থ নিয়েই কাজ করেছেন। যার প্রতিশ্রুতিতে জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট এখনো সেই পুরনো তরুণরা বুড়ো হয়ে গেলে ও তাদের দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে যার প্রমান ফতুল্লা থানা ছাত্রলীগ। তা ছাড়া আড়াইহাজার ছাত্রলীগের কমিটি পুরোটাই নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুর হাতে। তাছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গত বছরের ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিম ইনানের হাতেই গঠিত হয়। তারা শুধু ২০১৯ সালে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করলে ও দীর্ঘদিন যাবৎ এই কমিটির দায়িত্ব আর তাদের হাতে নেই। তা ছাড়া ও বাকি বিভিন্ন ইউনিটে ও ছিলো না তাদের কোন ছায়া। সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ নারায়ণগঞ্জে মাসে একদিন ও আসতেন না তিনি তার ব্যবসায়ীক কাজে ঢাকায় বেশি সময় কাটাতেন। আর সাধারণ সম্পাদক রাফেলকে শুধু অয়ন ওসমান নগরীতে আসলেই চোখে পরতো তা ছাড়া আর দেখা যেতো না তাকে। সব মিলেয়েই সংবর্ধনা নয় ব্যর্থতার দায় নিয়েই কমিটি ছাড়তে হলো এই দুই নেতার। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের (১০ মে) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সভাপতির পদে পদায়ন হয় আজিজুর রহমান আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আশরাফুল ইসমাইল রাফেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরের বছর ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই জেলা ছাত্রলীগের ১৮৮ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন পর্যন্তই টুকটাক রাজপথে দেখা গেলে ও তার পর থেকে সভাপতি আজিজকে ঠিক মতো চিনতেনই না ইউনিট পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মিত সভাপতি হিসেবেই নাম করণ করা হয়েছিলো সেই আজিজের তাকে সর্বদাই লক্ষ্য করা যেত দলীয় কর্মসূচীগুলো তার অনুপস্থিতি। এতে সভাপতির নেতৃত্বের সংকট মেটাতে হয় কমিটির অন্যান্য নেতাদের। এতে জেলা ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীরাই তেক্ত বিরক্ত ছিলো সভাপতি উপর। অপর দিকে তারই কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেলকে টুকটাক চিনতেন তরুণ প্রজন্মের বর্তমান ছাত্রলীগের সাথে অংশ নেওয়া নেতারা। তা ছাড়া ছাত্রলীগের কোন সাংগঠনিক কার্যক্রমে ছিলো না তার নাম পরিচিতি। শুধু মাসদাইরে তার ভাই ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সাথে থেকেই তাদের আত্মীয়দের দিয়েই নানা অপকর্ম পরিচালনা করতেন মাদক ব্যবসা থেকে নানা অপকর্মর মাধ্যমে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন এই রাফেল। তাছাড়া শুধু ঝুট ব্যবসাসহ নানা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে উঠে আসে এই রাফেলের নাম। তিনি কাশীপুর, এনায়েতনগরসহ আরো বিভিন্ন স্থানে গিয়ে গিয়ে এলাকাভিত্তিক ওয়াইফাই ব্যবসায়ীদের উপরে তান্ডব চালানোর অভিযোগ ও উঠেছিলো বিভিন্ন স্থানীয়দের দ্বারা। সর্বশেষ নির্বাচনের পূর্বমুহুর্তে দফায় দফায়কৃত আওয়ামী লীগের ঘোষিত শান্তি সমাবেশসহ অবস্থান কর্মসূচিগুলোতে জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে কোন প্রকারের অবরোধ বিরোধী কর্মসূচি দেখা যায়নি। আওয়ামী-লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অযোগ্যতার প্রমান দিয়েছে এই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সব শেষে পাহাড় সমান ব্যর্থতার দায়েই কমিটি বিলুপ্তের মাধ্যমে কপাল পুড়লো আজিজ ও রাফেলের। আগামীতে তারা আওয়ামী লীগের কোন সহযোগী সংগঠনের কমিটিতে স্থান পাবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।