আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৩:৩৩

অনন্যাকে হত্যার নেপথ্যে

ডান্ডিবার্তা | ০২ এপ্রিল, ২০২৪ | ১২:১২ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট সদরের অন্যনাকে হত্যার নেপথ্যে রয়েছে মোবাইলে আসা ৫০ হাজার টাকা। সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় বস্তাবন্দি অবস্থায় হাত-পা বাঁধা এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের পর তার পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই নারীর নাম অনন্যা কর্মকার (৩৫)। হত্যার শিকার অনন্যা কর্মকারের টাকা হাতিয়ে নিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গত শনিবার কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. জীবন (৩০) ও তার স্ত্রী নুসরাত জাহান মীম (৪০)। গ্রেপ্তার জীবন কুমিল্লার কোতোয়ালি থানা এলাকার মো. ইয়াকুব মিয়ার ছেলে ও নুসরাত জাহান মীম পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার সাত হাসনাপাড়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আ. মান্নানের মেয়ে। গতকাল সোমবার পিবিআই এর নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আল মামুন শিকদার এসব তথ্য জানান। এর আগে গত শনিবার কুমিল্লা জেলা সদর দক্ষিণ থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্তে জানা যায়, মামলার মূল ভিকটিম অনন্যা কর্মকার নারায়ণগঞ্জ সদর থানার চর সৈয়দপুরে স্বামী হরে কৃষ্ণর সঙ্গে বসবাস করতেন। তার স্বামী একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে চাকরি করতেন। ভিকটিমের স্বামী অনুমানিক এক বছর আগে মারা যায়। তার কোনো সন্তান ছিল না। মামলার আসামি নুসরাত জাহান মীম তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় সে তার ননদের সঙ্গে চর সৈয়দপুরের বাসায় থাকতেন। ভিকটিম অনন্যাও চর সৈয়দপুরের তাদের পাশের বাসায় থাকত। সে সুবাদে ভিকটিমের সঙ্গে আসামি নুসরাত জাহান মীমের পরিচয় ঘটে এবং সুসম্পর্ক তৈরি হয়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আসামি নুসরাত জাহান মীম ভিকটিম অনন্যা এবং মামলার প্রধান আসামি মো. জীবন ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকায় বাসা ভাড়া নেয়। আসামি মো: জীবন গান বাজনা করত, বিভিন্ন মাজারে মাজারে সুরে বেড়াত। সে নেশায় আসক্ত ছিল। ঘটনার দুই দিন আগে অর্থাৎ গত ২ মার্চ তারিখে দুপুর বেলা ভিকটিম অনন্যা বাথরুমে গোসল করতে গেলে আসামি জীবন ভিকটিমের মোবাইল ফোন চেক করে ভিকটিমের কিছু কল রেকর্ড, মেসেজ দেখে বুঝতে পারে ভিকটিমের ভাই ভিকটিমকে আমেরিকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পাঠিয়েছে। এরপর আসামি জীবন ভিকটিমের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দি আটতে থাকে। গত ৪ মার্চ সকালে আড়াইহাজার থানা এলাকা থেকে পালা গান শেষে বাসায় ফিরে সে। ওইদিন গ্যাসের চাপ কম থাকায় আসামি জীবনের স্ত্রী আসামি মীম রান্না করতে পারেনি। এ সুযোগে জীবন বাইরে থেকে নিজেদের এবং ভিকটিম অনন্যার জন্য খাবার কিনে নিয়ে আসে এবং সুযোগ বুঝে ভিকটিমের খাবারের সঙ্গে উচ্চ মাত্রার ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। ভিকটিম সেই ওষুধ মিশ্রিত খাবার থেয়ে কিছুক্ষণের মধ্য অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় আসামি জীবন ও তার স্ত্রী মীম রান্না ঘরে খাবার প্লেট পরিষ্কার করতে যায়। এ সময় জীবন ভিকটিমের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য দুপুরে ভিকটিম অনন্যার রুমে প্রবেশ করলে ভিকটিম জীবনকে দেখে ফেলায় চিৎকার দিয়ে উঠে। আসামি জীবন সঙ্গে সঙ্গে ভিকটিমের বিছানায় থাকা বালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার স্ত্রী মীমকে গ্যাস লাইট নিয়ে আসতে বলে। মীম তার স্বামী জীবনের কথামত ডিকটিমের পায়ের আঙ্গুলে আগুন দিলে ভিকটিম নড়াচড়া না করায় তারা ভিকটিম এর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এরপর প্লাস্টিকের বড় বস্তা কিনে নিয়ে ভিকটিমের হাত পা বেঁধে বস্তাবন্দি করে সৈয়দপুর এলাকায় ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জগামী রাস্তার বাম পাশে ফেলে রেখে উভয়ে পালিয়ে যায়। মামলাটির প্রাথমিক তদন্তকালে আসামিদের সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। গত ৩১ মার্চ আসামিদের আদালতে উপস্থাপন করা হলে জীবন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে এবং মীম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মায়দার আলীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা