ডান্ডিবার্তা | এপ্রিল ০৪, ২০২৪, ১২:৩৮ | Comments Off on বন্দরে রশীদ ঠেকাও মিশন সক্রিয়
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আতাউর রহমান মুকুল। তিনি ছিলেন বন্দর উপজেলা পরিষদের দুই
দুবারের চেয়ারম্যান। বিএনপির রাজনীতি করলেও গেল জাতীয় সংসদ
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম ওসমানের পক্ষে
নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় থাকার অভিযোগে বহিষ্কার হয়েছেন।
বর্তমানে তিনি পুরোদমে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে
প্রার্থী হতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ৮ মে এই উপজেলায়
ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। এর আগের উপজেলা
নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলেও সাংসদ সেলিম ওসমানের
অনুরোধে মাঠ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। সে নির্বাচনে এম এ
রশীদ বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হোন। বর্তমানে তিনি
সাংসদ সেলিম ওসমান ও স্থানীয় চার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান
এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। তবে, স¤প্রতি সাংসদ
সেলিম ওসমান এক সভা থেকে মুকুলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েনির্বাচন না করার আহŸান জানিয়েছেন। এদিকে সাংসদ
সেলিম ওসমানের সেই আহŸানে এখনও পর্যন্ত সাড়া দেননি
আতাউর রহমান মুকুল। তিনি নির্বাচনী মাঠে পূর্বের মতোই
সরব রয়েছেন। এবং শোনা যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনী
মাঠে থাকবেন। মাঠ ছেড়ে দিবেন না। পক্ষান্তরে আতাউর রহমান
মুকুলের কাছেও সাংসদ সেলিম ওসমানের অনুরোধ পাত্তা পায়নি।
বলা চলে তিনিও এই সাংসদকে বৃদ্ধাঙুলি প্রদর্শন করে
নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। অপরদিকে জাতীয়পার্টির
সহসভাপতি মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন মাঠ
দখল করে আছেন। মাসুদ বলয়ে একটিই কথা যে কোন মূল্যে রশীদ
ঠেকাও। যদিও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সাংসদ সেলিম
ওসমানের সঙ্গে আতাউর রহমানের মুকুলের গভীর সখ্যতা রয়েছে।
সেই সখ্যতার কারণে গতবারের নির্বাচন থেকে তিনি সরে
গিয়েছিলেন। সে নির্বাচনে সাংসদ সেলিম ওসমান সরাসরিই
মধ্যস্থতা করেছিলেন এবং মুকুলকে অনুরোধ করেছিলেন। তখন
তিনি সেই অনুরোধ ফেলতে পারেননি। এবার তেমনভাবে কোনো
অনুরোধ মুকুলকে করা হয়নি। কেননা, সাংসদ সেলিম ওসমান যদি
মুকুলকে মুঠোফোনে কিংবা সরাসরি বসে নির্বাচন থেকে
সরে যাওয়ার অনুরোধ করতেন তাহলে মুকুল সাংসদের অনুরোধ
ফেলতে পারতেন না। সাংসদকে উপেক্ষা করারও কোনো উপায় নেই
মুকুলের কাছে। তবে সেভাবে অনুরোধ না করে সভা মঞ্চ থেকে
অনুরোধ জানানোর বিষয়টি অনেকের কাছেই রহস্যজনক বলে মনে
হয়েছে। কারো কারো মতে, বিষয়টি ভিন্নধারার কোনো খেলার
অংশ হয়তো। তবে সেটি কী খেলা, তা এখনই বলা মুশকিল। তা
আগামী ২২ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেই বুঝা
যাবে। এদিকে আতাউর রহমান মুকুল শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে
থাকবেন কিনা তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন নির্বাচনে
আছেন এবং থাকবেন। তবে সাংসদ সেলিম ওসমান তাকে যে
অনুরোধ জানিয়েছেন সে ব্যাপারে এই প্রতিবেদককে মুকুল
বলেছিলেন, তিনি (সেলিম ওসমান) আমাকে কোনো ফোন
করেননি। যদি ফোনে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন তখন যে উত্তর
দেওয়া যায় তিনি তাই দিবেন বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে
অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে, আতাউর রহমান মুকুল তার
অনুগামি সমর্থকদেরকে জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তিনি
নির্বাচন করবেন। সেলিম ওসমান অনুরোধ করলেও নির্বাচন থেকেসরে যাবেন না। এতে যদি তাকে জেলও খাটতে হয়, তিনি সেটিও
খাটতে রাজি আছেন। সূত্র বলছে, বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে
সম্পৃক্ত প্রায় সব নেতাকর্মীই গত পনের বছরে অসংখ্য মামলার
আসামি হয়েছেন। একাধিকবার অনেকে জেলও খেটেছিলেন।
অসংখ্য নেতাকর্মী বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েও ছিলেন। ব্যাতিক্রম
ছিলেন আতাউর রহমান মুকুল। তাকে কোনো মামলার আসামি
হতে হয়নি। সাংসদ সেলিম ওসমানের ছত্রচ্ছায়াতে ছিলেন দিব্যি
আনন্দে। বিনিময়ে যত্রতত্র তিনি প্রমাণ করেছিলেন তিনি সেলিম
ওসমানের একনিষ্ঠ আস্থাভাজন। সর্বশেষ দল থেকে একই ইস্যুতে
বিহস্কারও হয়েছেন। এবার সেই মুকুলও সেলিম ওসমানের
অনুরোধকে পাত্তা না দিয়ে নির্বাচনী মাঠে সরব থেকে প্রচার-
প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও সচেতন মহল বলছেন, একজন
আইন প্রণেতা কখনই কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচন থেকে সরে
যাওয়ার অনুরোধ বা ফোর্স করতে পারেন না। নির্বাচনে
প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার অধিকার সবার আছে। উৎসব মুখর
নির্বাচনে এমন হস্তক্ষেপ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এতে করে
ভোটের মাঠে আতঙ্ক বিরাজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে ভোটে
নিরুৎসাহিত করা হয়। প্রসঙ্গত, গত শনিবার সাংসদ সেলিম
ওসমান বন্দর ধামগড় ইউনিয়নে এক সভা থেকে মুছাপুর
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও উপজেলার সাবেক
চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে বন্দর উপজেলা নির্বাচন থেকে
সরে আসার পাশাপাশি এম এ রশীদকে সমর্থন জানানোর আহŸান
জানিয়েছিলেন। তবে তার সেই আহŸান এই দুজনের একজনও
আমলে নেননি। তারা দুজন এখনও নির্বাচনী মাঠে সক্রিয়
রয়েছেন।