ডান্ডিবার্তা | এপ্রিল ০৪, ২০২৪, ১২:৫৫ | Comments Off on দলীয় সমর্থন পেতে চলছে লবিং!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দীর্ঘ সময় পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হতে
যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে
নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী
৮মে। এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাবাসী
নতুন অভিভাবক নির্বাচিত করবেন। এবারের নির্বাচনে বিএনপি
অংশ নিবে না তা প্রায় নিশ্চিত বলা চলে। তবে ক্ষমতাসীন দল
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে
প্রার্থী দেয়ার কথা রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ থেকে সদর উপজেলা
পরিষদের নির্বাচনে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ
সম্পাদক শাহ নিজাম, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত
হোসেন ভূইয়া সাজনু, পরিবহণ নেতা ইব্রাহীম চেঙ্গিস এবং
সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন
চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন বলে সর্বোত্র গুঞ্জন চলছে। এরমধ্যে
শাহ নিজাম, নাজিম উদ্দিন এবং ইব্রাহীম চেঙ্গিস প্রার্থী
হবেন বলে নিজেদের ব্যাপারে নানা ভাবে জানান দিয়েছেন। তাঁদের
কর্মী সমর্থকেরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন
মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে মহানগর আওয়ামী লীগেরযুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম এবং মহানগর যুবলীগের
সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনুর প্রার্থীতা নিয়ে সর্বোত্র
আলোচনা শুরু হয়েছে। তাঁদের পক্ষে বিপক্ষে চলছে তুমুল
আলোচনা। তবে দীর্ঘদিন পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের
নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহের কমতি নেই। ১৫ বছর
ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আবুল কালাম
আজাদ বিশ্বাসের কাছ থেকে সেবা বঞ্চিত ভোটাররা জনবান্ধব
এবং গ্রহনযোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে চাচ্ছেন। জনপ্রিয়
এবং যোগ্য প্রার্থী হিসেবে শাহ নিজাম এবং শাহাদাত
হোসেন সাজনু অন্যতম। অপরদিকে, পরিবহন নেতা ইব্রাহীম
চেঙ্গিস এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে
আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি তার আগ্রহের কথা
গণমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। বসে নেই সদর উপজেলা পরিষদের
বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন। তিনি একাধিক
অনুষ্ঠানে নিজেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রকাশ করে ভোটারদের
কাছে দোয়া চেয়েছেন। দীর্ঘ ১৫ বছর নাজিম উদ্দিন সদর উপজেলা
পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে কুতুবপুরের বাইরের
মানুষ তাঁকে কাছে পায়নি এমন অভিযোগ সদর উপজেলাবাসীর।
মূলত তিনি কুতুবপুরে কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া সদর
উপজেলাবাসীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছেন। ভোটারদের মতে,
নাজিম উদ্দিন ভাইস চেয়ারম্যান থাকা কালীন সময়ে পুরো সদর
উপজেলাবাসীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন, এখন কী করে
চেয়ারম্যান হতে চাচ্ছেন? অপরদিকে, ইব্রাহিম চেঙ্গিস প্রার্থী
হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ভোটারদের মতে, তিনিও
জনবিচ্ছিন্ন নেতা হিসেবে পরিচিত। সদর উপজেলা নির্বাচনে
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এবারের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক
সম্পাদক মীর সোহেল আলী এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের ১নং
সদস্য আবু মোঃ শরীফুল হকের নাম আলোচনায় উঠে এসেছে।
ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আওয়ামী লীগের এ দুই নেতা সদর
উপজেলাবাসীর কাছে বেশ পরিচিত। তবে চেয়ারম্যান এবং ভাইস
চেয়ারম্যান হিসেবে দল যাকে মনোনীত করবেন আওয়ামীলীগের
কর্মী সমর্থক এব সদর উপজেলার ভোটাররা তাঁদের ভোট
প্রয়োগের মধ্যদিয়ে নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনে প্রার্থী
হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগেরযুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম বলেন, সবাই কিছু হতে
চায়, সে লক্ষ্য নিয়েই আমি রাজনীতিতে এসেছি। রাজনীতির
মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা চেয়েছিলাম, আমি সে জিনিসটা
পেয়েছি। আমি যেন সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি
সে উদ্দেশ্য নিয়ে-ই নির্বাচনে অংশ নিবো। বাকীটা নির্ভর
করছে দলের উপর। দল বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছে নাই। ফতুল্লা
থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী বলেন, সদর
উপজেলা পরিষদের নির্বাচন প্রতিদ্ব›দ্বীতা মূলক হবে। কারণ
প্রকাশ্যে প্রার্থী আছে, অন্ধকারেও প্রার্থী আছে। এ জন্য
বিভেদ সৃষ্টি না করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাচনে
আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীকে জয়ী করবো। এছাড়াও গত
২৩মার্চ এক ইফতার মাহফিলে ফতুল্লা থানা, কুতুবপুর ইউনিয়ন
আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা শাহ নিজামকে উপজেলা পরিষদের
চেয়ারম্যান হিসেবে সমর্থন দিয়েছেন। স¤প্রতি নির্বাচন
কমিশন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদসহ সারা দেশের মোট ১৫২
উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। প্রথম
ধাপের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে
আগামী ৮ মে। প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে
সময় বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস চেয়ারম্যান
নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন
গঠিত হলে সদর উপজেলার কিছু অংশ সিটি কর্পোরেশনে চলে
যায়। উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ (২০০৯ সনের ৩০ জুন সংশোধিত)
এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার সদর উপজেলা পুর্নগঠন করে। ২০১৪ সালের
৪ মার্চ এ সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়।