আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:৫৭

মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পরও ৫৪ শহীদের নামফলক তৈরি হয়নি

ডান্ডিবার্তা | ০৫ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বন্দর গণহত্যা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বন্দর সিরাজদৌল্লা ক্লাব সংলগ্ন বধ্যভুমির শহীদবেদীতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, নাসিক ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড বন্দর থানা কমিটির ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কাজী নাসির, শহীদ পরিবারের সদস্য মো. ইউসুফ ভুঁইয়া ননী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবনাথ চক্রবর্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সমমনার সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ চন্দ্র সাহা প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল এবং সঞ্চালনা সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল। রফিউর রাব্বি বলেন, আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ বলেছি সত্য; কিন্তু দেশের সকল গণহত্যার প্রকৃত তথ্য তুলে আনলে এ সংখ্য যে তার চেয়েও অনেক বেশি হবে সে বিষয়ে এখন অনেক গবেষকই একমত। নারায়ণগঞ্জে রয়েছে ৩৩টি বধ্যভূমি ও গণকবর, রয়েছে ৪৬টি নির্যাতনকেন্দ্র। যেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও নিরপরাধ নিরীহ মানুষদের নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ষাটের দশকে আইয়ূব বিরোধী আন্দোলনে বন্দরের ছিল সাহসী ভূমিকা। ২৫ মার্চ টিক্কাখানরা যখন ঢাকায় অপারেশন সার্চ লাইটের নামে হাজার-হাজার নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে চলেছে; বন্দরে তখন সিরাজদ্দৌলা ক্লাবের মাঠে মঞ্চস্থ হচ্ছে সাত্তার ভূইয়া রচিত ও এস এম ফারুক পরিচালিত ‘অমর বাঙালি’ নাটক। যে নাটক পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে তখন বাঙালির রক্তে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। রফিউর রাব্বি বলেন, একাত্তরের ৪ এপ্রিল ভোররাতে বিহারিদের সহায়তায় নবীগঞ্জঘাট ও দক্ষিণের কেরোসিনঘাট দিয়ে একসঙ্গে বন্দরে প্রবেশ করে পাক-হানাদারবাহিনী। নবীগঞ্জ দিয়ে পাড় হওয়া গ্রুপটি ইস্পাহানী ও জেলেপাড়ার বহু বাড়ি-ঘর গানপাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় এবং এ এলাকা থেকে বহু লোককে ধরে বন্দর সিরাজদ্দৌলা ক্লাব মাঠে নিয়ে হাজির করে। কেরাসিনঘাট দিয়ে পাড় হওয়া গ্রুপটি ডকইয়ার্ডে উঠে সামনে অগ্রসর হয়ে হিন্দু-অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতে থাকে। লালজির আখড়া ও বৃন্দাবন আখড়া গানপাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়ে সেখান থেকে বহু লোককে ধরে সিরাজদ্দৌলা ক্লাব মাঠে নিয়ে আসে। পাক সেনাদের উভয় গ্রুপই সকাল নটার মধ্যে ক্লাব মাঠে এসে পৌঁছে। সে সময় মাঠের ক্লাব ঘরে আশ্রয় নেয়া সাধারণ মানুষ ও ধরে আনা বন্দিদের মোট ৫৮ জনকে পাক সেনারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে প্রথমে গুলি করে হত্যা করে। পরে আশপাশের বাড়িঘর থেকে কাপড়-চোপড় ও মূলিবাঁশের বেড়া এনে লাশের উপরে ফেলে গানপাউডার দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। লাশের স্তুপ থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসেন মুজিবুর রহমান কচি নামের এক কিশোর। পোড়া বাড়ি-ঘর, মৃত মানুষের গন্ধ আর স্বজনহারা মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে শীতলক্ষ্যার পূর্বপারের বাতাস। রাতেই বন্দরের বিভিন্ন এলাকা বিরান-ভূমিতে পরিণত হয়। রাত গভীর হলে সে ক্লাব মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে এলাকাবাসী ৫৪ জন হিন্দু-মুসলমান শহীদদের একসাথে গণ-কবরে সমাহিত করেন। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পরও এখানে শহীদ ৫৪ জনের নামের তালিকাসম্বলিত ফলক তৈরি হয়নি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা