জিয়ার ম্যুরাল নিয়ে বিএনপির রাজনীতি
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ার শহীদ জিয়া হলে সমাদৃত জিয়াউর রহমান ম্যুরাল গভীর রাতে কে বা কারা ভেঙ্গে ফেলেছে। আর এ ইস্যুতে বিএনপির রাজনীতি শুরু হয়েছে। উত্তাল হয়ে উঠছে বিএনপির রাজনীতি। জিয়ার ম্যুরাল ভাঙ্গার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। একই সঙ্গে ম্যুরালটি যথাযোগ্য সম্মানে প্রতিস্থাপন করারও দাবি জানানো হয়। এক প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, আওয়ামী দূর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে নারায়ণগঞ্জ নগরীর প্রাণকেন্দ্রে চাষড়াস্থ শহীদ জিয়া হলে থাকা শহীদ রাষ্ট্রপতি ও স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান ঘোষক, সেক্টর কমান্ডার, জেডফোর্সের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের ম্যুরাল ভেঙ্গে ফেলেছে। আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি তাদের এমন বর্বরোচিত আচরণে লজ্জিত। এহেন পৈশাচিক ও কাপুরুষোচিত নগ্ন আচরণ শুধু তাদের পক্ষে সম্ভব যারা দেশের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতে শেখেনি বরং নিজেদের স্বার্থ হাসিলে পকেটে রেখে রাজাকারদের ব্যবহার করে চলছে। ‘এদেশটা স্বাধীন করতে যাকে সর্বোচ্চ ত্যাগ করতে হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে যার অনবদ্য অবদানেই আজকের স্বাধীনতা তাকে সম্মান জানানোর নূন্যতম সৌজন্যবোধ যাঁদের নেই তাদের কাছে এর চেয়ে ভালো আচরণ আশা করাও বোকামি।সরকারীদল মুক্তিযুদ্ধ ও এর ইতিহাসকে নিজেদের মতো করে বানিয়ে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতেই এমন করছে।’ তারা আরো বলেন, নিঃসন্দেহে মুক্তিযোদ্ধারা বাঙ্গালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু বর্তমান স্বৈরশাসক, ফ্যাসিস্ট ও হীরক রাজার শাসনামলে কেউ নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগ একটা মেশিনের মতো, যেথানে ঢুকালে যে কাউকে যখন তখন মুক্তিযোদ্ধা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের বানানো যায় আবার মুহূর্তেই রাজাকার-আলবদর-আলশামস কিংবা শান্তি কমিটিতেও ঢুকিয়ে দেওয়া যায় ‘‘আমাদের প্রতিপক্ষের এমন আচরণই প্রমাণ করে তারা তাদের গুম-খুন-মামলা-হামলা-লুটপাট-নৈরাজ্য-দূর্বৃত্তায়ন -চুরি- ডাকাতির কারণে ভীত এবং এসব ঢাকতে নতুন নতুন নাটক মঞ্চস্থ করতে মরিয়া। তারা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এমন পৈশাচিক ও অগণতান্ত্রিক আচরণ করছে। তারা এটাও বেশভালো করেই জানে যে, ক্ষমতায় না থাকলে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং তাদের কৃত অপরাধের জন্য আইনের কঠোর ধারায় সাজা ভোগ করতে হবে। তারা ভয়ে তটস্থ হয়ে নানান অশোভন বক্তব্য দিচ্ছে ও আচরণ করে তাদের বিরোধী সবাইকে উস্কানি দিচ্ছে।’ ‘এছাড়াও তাদেরমতো অথর্বদের ক্ষমতায় রেখে প্রতিবেশীরা তাদের নিজেদের সুবিধা আদায় করতে ব্যস্ত। তাদের সরকারের কাঠামো গঠন থেকে শুরু করে পরিচালনার সবই প্রতিবেশীদের প্রেসক্রিপশনে চলছে বলে তাদের লোকজনই মিডিয়াতে বীরদর্পে বলে বেড়াচ্ছে অকপটে। আমরা হুশিয়ার করে বলতে চাই, জনতা এ ধরনের কর্মকান্ডের প্রতিরোধ গড়ে তুললে যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্পর্ণ দায়ভার সরকারীদলকে নিতে হবে। এমনকি এমন কর্মকান্ড ঘটিয়ে উস্কানির জন্য এতে জড়িত সংশ্লিষ্ট কেউ পার পাবেনা।’ এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আল আমিন খাঁন। বিবৃতিতে আল আমিন খাঁন বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ম্যূরাল ভাঙ্গার ঘটনাটি দেশে রামরাজত্ব কায়েমের এক নোংরা দৃষ্টান্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডারকে অসম্মান করা এটা কোন ধরনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাতি জানতে চায়? ম্যূরাল ভেঙে শহীদ জিয়ার নাম মানুষের হৃদয় থেকে মুছা যাবে না। নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষক দলের পক্ষ থেকে আমি এই নোংরামির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহবান করছি। গত বুধবার দিবাগত রাতে কে বা কারা জিয়াউর রহমানের ম্যুরালটি ভেঙ্গে ফেলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান। এক প্রতিবাদ বিবৃতিতে আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, ছবি ভাঙ্গলেই কি জিয়া হল মুছে যাবে? নারায়ণগঞ্জের একটি ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে জিয়া হল সুপরিচিত নাম, যা নারায়ণগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়ায় অবস্থিত এই জিয়া হল। একজন সেক্টর কমান্ডার রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সম্মানার্থে নারায়ণগঞ্জবাসীকে উপহার দেয়া হয়েছিল। সেখানে আজ নারায়ণগঞ্জবাসীর উপর এই ঘৃণিত কর্মকা- কলঙ্কের দাগ লাগলো। যা ইতিহাস কোন সময় ভুলবে না, নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে জিয়া হল জনসাধারণের মনের মাঝে ঐতিহাসিক জিয়া হল নামেই সারা জীবন গাঁথা থাকবে। তিনি আরো বলেন, আজকের এই ঘৃণিত কাজ একমাত্র বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনীর দ্বারাই সম্ভব কিন্তু ইতিহাস তাদের কোনদিন ক্ষমা করবে না। এই জিয়া হল সর্বাধুনিকতায় সজ্জিত হয়েই আবার নারায়ণগঞ্জবাসীর মাঝে অবস্থান করবে ইনশাআল্লাহ। শুধুমাত্র কিছু সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমি এই ঘৃণিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ধিক্কার জানাই। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন বলেছেন, শহীদ জিয়ার ম্যুরাল ও শহীদ জিয়া হলের নাম এখানেই থাকবে এভাবেই থাকবে। শুধু সময়ের ব্যবধান মাত্র। কিন্তু অনেকের নাম নারায়ণগঞ্জের মাটিতে থাকবে না। জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ম্যুরাল ভেঙে ফেলায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি এসব কথা গুলো বলেন। রেজা রিপন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক হলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৭১সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর অবদান কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু এই অবৈধ সরকার নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদান মুছে ফেলতে চাইছে। শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া জিয়া হলে জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ম্যুরাল রাতের আঁধারে ভেঙে ফেলেছে আওয়ামী দুষ্কৃতকারীরা। শহীদ জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল বাংলার পেছনে কারা কলকাটি মেরেছেন তাদের জবাব একদিন দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে পূর্ব কিন্তু বঙ্গবন্ধু সড়ক ছিল। খান সাহেব ওসমানী স্টেডিয়াম নাম ছিল। বিএনপি নেতৃবৃন্দরা কিন্তু কখনো এগুলোর নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করে নাই। আজকে জিয়াউর রহমানের মোড়ল ভাঙ্গার মধ্য দিয়ে তারা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ভবিষ্যতে এটার জন্য অনেক খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে। ভুলে যাবেন না এই শহরে শেখ রাসেলের নামে শিশু পার্ক আছে শেখ কামালের নামে আইটি পার্ক আছে। শামসুজ্জোহা ও নাগিনা জোহার নামে কিন্তু সড়ক আছে। আজকের এই খারাপ দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতে এইগুলোর উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে।