আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৯:৫৭

পাঁচ কারণে বেঁচে গেছে আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ০৮ এপ্রিল, ২০২৪ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল বহুল আলোচিত জাতীয়
সংসদ নির্বাচন। এ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর বাংলাদেশের
ভবিষ্যত, গণতন্ত্রের ভবিষ্যত অনেক কিছু নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু শেষ
পর্যন্ত এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচনের পর আজ ৩ মাস
পেরিয়ে গেল। এখন এ নির্বাচন মোটামুটিভাবে জাতীয় এবং
আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। নির্বাচনকে নিয়ে কারও
কোন প্রশ্ন নেই। পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচন নিয়ে যে মৃদু আপত্তি
জানিয়েছিল সে আপত্তি এখন লকারে বন্দী হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ
এখন টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে এবং দেশ নিয়ে
এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপিও এ নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন
নিয়ে খুব একটা আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে না। এখন ৭ জানুয়ারির
নির্বাচনের পর গঠিত সরকার বৈধতা পেয়েছে এবং আগামী ৫ বছর
যে তারা দেশ পরিচালনা করবে তার একটা সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
এই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পথটি এত সহজ সরল এবং স্বাচ্ছন্দ্যের
ছিলো না। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ছিল নানা রকম
অনিশ্চয়তা, সংকট এবং সমস্যা। এই নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে
কিনা, নির্বাচনের পর কি হবে ইত্যাদি নানা রকম সংকট এবং সংশয়
ছিলো নির্বাচনকে ঘিরে। কিন্তু নির্বাচনের ৩ মাস পর দেখা
গেলো যে, এ নির্বাচনের পর সবকিছু ঠিকঠাক আছে। আওয়ামী
লীগ এ যাত্রায় বেঁচে গেছে। পাঁচটি কারণে এ নির্বাচন
গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এবং আওয়ামী লীগ রক্ষা পেয়েছে বলে
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। এই ৫ টি কারণের মধ্যে রয়েছেতা হলো, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণ: এ নির্বাচন যেটুকু
প্রতিদ্ব›দ্বীতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে তার প্রধান কারণ
হলো স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণ। আওয়ামী লীগ এবার এ
নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক করার জন্য একটি
কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ বড় ধরনের ঝুঁকিও নেয়।
দলের যারা মনোনয়ন পেয়েছে তাদের বাইরে স্বতন্ত্রভাবে যেসমস্ত
প্রার্থীরা নির্বাচন করতে ইচ্ছুক তাদের জন্য আওয়ামী লীগ দরজা
খুলে দেয়। অর্থাৎ দলীয় পদ পদবি ব্যবহার করে যেকোন আওয়ামী লীগের
নেতা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার সুযোগ পায়। এটি ছিল আওয়ামী
লীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী সিদ্ধান্ত। কিন্তু দলের স্বার্থে, নির্বাচনের
স্বার্থে আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে দেড়শ এর বেশি
আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন জমিয়ে তোলে। একারণে
নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে বড়
রকমের সমস্যা হয়নি। বিএনপির আন্দোলনের সক্ষমতার অভাব: বিএনপি
নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছিলো
এবং এ নির্বাচন বর্জন করেছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর থেকে
নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বা নির্বাচন প্রতিরোধে বিএনপি বড়
ধরনের কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। বিএনপির আন্দোলনের
ব্যর্থতার কারণে আওয়ামী লীগ নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারে বিনা
বাধায়। অনেকেই মনে করেন যে, বিএনপি শেষ পর্যন্ত সরকারকে
ওয়াকওভার দিয়েছে। তবে এর সত্যতা খুঁজে পেতে আরও দীর্ঘ গবেষণা
প্রয়োজন হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভারতের
ভূমিকা: এবার নির্বাচনে ভারত স্পষ্ট এবং প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের
পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছিলো। এবং ভারতের বক্তব্য ছিল খুব পরিষ্কার।
তা হলো যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা এবং স্থিতিশীলতা
রাখতে হবে। আর ভারতের এই ভূমিকার কারণেই শেষ পর্যন্ত ৭ জানুয়ারির
নির্বাচন সম্পূর্ণ হতে তেমন কোন বেগ পেতে হয়নি আওয়ামী
লীগকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটার্ন: ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের
ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটার্ন ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৭
জানুয়ারির নির্বাচন যে শেষ পর্যন্ত হয়েছে এবং
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে তার একটি বড় কারণ হলো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত অবস্থান। নির্বাচনের আগে পর্যন্ত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার জন্য সরকারের
ওপর নানা রকম চাপ সৃষ্টি করছিলো। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না
হলে কি হবে সে নিয়েও নানা রকম কথাবার্তা বলা হচ্ছিল। কিন্তু
নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ ঘুরে যায় এবং নতুন
সরকারের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অনেকে মনে করে,ভারতের প্রভাবের কারণে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শুধুমাত্র
ভারতের প্রভাব নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব হিসাব-নিকাশের
মাধ্যমে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে
করেন। আর এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ফলে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন শেষ
পর্যন্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব:
পুরো ৭ জানুয়ারির নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সংকট
মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হসিনা
এক অসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছিলেন। মূলত তার
নেতৃত্বের কারণেই প্রধান বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই এ
নির্বাচন শেষ পর্যন্ত স্বীকৃতি পেয়েছে। গত ৭ জানুয়ারির
নির্বাচনের ৩ মাস পূর্ণ হলো। এখন ৯০ দিন পূর্ণ হওয়ার ফলে এই
সংসদ আর কোন গ্রহণযোগ্যতার সংকটে নেই।



Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা